কেন বাটোয়ারা বা বন্টননামা দলিল করতে হয় এবং বাটোয়ারা বা বন্টননামা দলিল করার জন্য সরকারি খরচ কত?
বন্টননামা বা বাটোয়ার দলিলের মাধ্যমে সম্পদ বন্টন করার নিয়ম গুলো জেনে নেই
কেন বাটোয়ারা বা বন্টননামা দলিল করতে হয়?
অংশীদারগণের মধ্যে ওয়ারিশি সম্পত্তি বন্টনের একটি লিখিত প্রমান হিসাবে বাটোয়ারা দলিল কাজে লাগে। বাটোয়ারা দলিল বন্টনের একটি লিখিত প্রমান হিসাবে থাকে এতে ভবিষ্যতে যে কোন অংশিদার পুর্বের বন্টন মানতে বাধ্য থাকে। ওয়ারিশি সম্পত্তির নামজারি করতে বন্টন দলিলের প্রয়োজন হয়। ওয়ারিশি জমি বিক্রি করতে গেলে বন্টন দলিলের প্রয়োজন হয়। ভূমি জরিপকালীন সময়ে ওয়ারিশি সম্পত্তিতে রেকর্ড করাতে। ওয়ারিশি জমির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লোন করাতে গেলে। অংশীদারগণের মধ্যে ভবিষ্যতে মামলা মকদ্দমা হওয়া থেকে বাচা যায়। এছাড়া আরো নানা কারনে আপনাদের বন্টন বা বাটোয়ারা দলিলের প্রয়োজন হতে পারে ।
বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিলে সরকারি রেজিস্ট্রেশন ফিস কত?
বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনুর্ধ ৩ লক্ষ টাকা হলে ৫০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (১) অনুসারে)। বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনুর্ধ ১০ লক্ষ টাকা হলে ৭০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (২) অনুসারে)। বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনুর্ধ ৩০ লক্ষ টাকা হলে ১২০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (৩) অনুসারে)। বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনুর্ধ ৫০ লক্ষ টাকা হলে ১৮০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (৪) অনুসারে)। বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য ৫০ লক্ষ টাকার উর্ধে হলে ২০০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (৫) অনুসারে)।
কি ভাবে বন্টননামা বা বাটোয়ার দলিলের মাধ্যমে সম্পদ বন্টন করতে হয়?
১। ২০০ টাকার স্টাম্পে হলফনামা।
২। ইফি ১০০ টাকা।
৩। এন ফি বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিন শত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা। ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিন শত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
৪। নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক এনএন ফিস বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা। ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা।
৫। সম্পত্তি হস্তান্তর নোটিশের আবেদনপত্রে ১০ টাকা মূল্যের কোর্ট ফি।
বাটোয়ারা বা বন্টননামা দলিল করার নিয়ম ও প্রক্রিয়াগুলো কি কি?
১) একটি বন্টন দলিল করার সকল প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো থাকলে প্রথমে আপনারা একজন দক্ষ দলিল লিখক বা একজন দক্ষ আইনজীবীর কাছে যাবেন।
২) সেখানে গিয়ে মৃত ব্যক্তির পূর্বের দলিলগুলো তাকে প্রদান করবেন এবং একটি বন্টন দলিল লিখার জন্য বলবেন।
৩) দলিল লিখক বা আইনজীবী প্রথমে মৃত ব্যক্তির পূর্বের দলিলগুলো দেখে এবং সমন্বয় করে একটি নতুন বন্টন দলিল লিখবেন।
৪) এবার উক্ত দলিলটি নিয়ে ওয়ারিশগণ সংশ্লিষ্ট সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যাবেন সেখানে গিয়ে বাটোয়ারা দলিলের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।
৫) এবার দলিলের সকল অংশীদারগণ সাবরেজিস্ট্রারের সম্মুখে রজিস্ট্রি বলিউমে স্বাক্ষর করবেন।
৬) এর পরে সাবরেজিস্ট্রার উক্ত দলিলটি রেজিস্ট্রি করে নিবেন।
৭) আপনারা চাইলে উক্ত বাটোয়ারা দলিলের একটি অবিকল নকল দলিল তখন নিয়ে নিতে পারেন তো এইভাবেই খুব সহজেই সম্পাদিত হবে একটি আপোষমূলে বাটোয়ারা দলিল।
বাটোয়ারা বন্টন দলিল করার জন্য কি কি লাগবে?
যে ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করা হবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু সনদ লাগবে। মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণের প্রমান হিসাবে ওয়ারিশ সনদ লাগবে। মৃত ব্যক্তির যে সম্পত্তি বন্টন হবে উক্ত সম্পত্তির দলিল লাগবে। মৃত ব্যক্তির যে সকল ওয়ারিশ সম্পত্তির মালিক হবে স সকল ওয়ারিশের সম্মতি থাকতে হবে।