কি ভাবে জমি কিনবেন? জাল দলিল পরীক্ষা করার নিয়মাবলী
দলিল জাল কিনা কিভাবে পরীক্ষা করবেন তা নিম্নে আলোচনা করা হলো
কি ভাবে জমি কিনবেন?
জমি কিনতে আপনি একটি জমির মালিক হওয়ার ইচ্ছেমত প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করতে পারেন। এটি একটি ব্যবস্থাপনা করণীয় যা অনেক জন্য একটি সাধারণ ধাপ হতে পারে। আপনি জমি কিনতে চাইলে আপনাকে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে হবে
১. জমির ধরন নির্ধারণ করুন
প্রথমে নির্দিষ্ট করুন যে কোনও ধরনের জমি কিনতে আপনি আগ্রহী। কিছু মানুষ বাসা নির্মাণের জন্য জমি কিনতে চান, কিছু লোক কৃষি করার জন্য জমি কিনতে চান এবং কিছু ব্যবসায়ী প্রকল্প শুরু করার জন্য জমি কিনতে চান।
২. প্রাথমিক গবেষণা করুন
জমি ক্রয় করার আগে, আপনাকে সংশ্লিষ্ট জেলা অথবা অঞ্চলে জমি প্রশাসনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। জমির মূল্য, স্থানীয় প্রশাসনিক নিয়ম, জমির সীমানা, অঞ্চলের বসবাসিক সুযোগ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন
৩. জমির লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
প্রথমে নির্দিষ্ট করুন আপনি কি উদ্দেশ্যে জমি কিনতে চান। আপনি বাসা নির্মাণের জন্য জমি কিনতে চান, কৃষি করার জন্য জমি কিনতে চান, বা কোনও ব্যবসায়িক প্রকল্প শুরু করার জন্য জমি কিনতে চান। এই লক্ষ্য অনুযায়ী জমির ধরন ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করতে পারেন।
৪. বাজেট নির্ধারণ করুন
জমি ক্রয়ের আগে আপনাকে নির্দিষ্ট করতে হবে কত পরিমাণ অর্থ আপনি ব্যয় করতে পারবেন। বাজেট নির্ধারণ করার মাধ্যমে আপনি জমির মালিকানাধী।
জাল দলিল চেক করার নিয়ম
১. সাব রেজিস্ট্রি অফিস
সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী চারটি রেজিস্ট্রার বা ভলিউমে লেখা হয়ে থাকে। কোনো দলিল নিয়ে সন্দেহ থাকলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সাল মিলিয়ে দেখতে হবে। এ জন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করতে হবে। এতে দলিলটির যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।
২. একটি জমির একাধিক মালিক
একটি জমির একাধিক মালিকের নামে করা থাকলে ধরে নিতে হবে দলিলটি জাল হতে পারে। সেক্ষেত্রে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মূল মালিক কে, সে সম্পর্কে তথ্য জানতে হবে।
৪. কি ভাবে জমির মিউটেশন বা নামজারি সম্পর্কে জানবেন?
সহকারী কমিশনার ভূমি অফিস থেকে জমির মিউটেশন বা নামজারি সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। নামজারিতে ধারাবাহিকতা ঠিক আছে কি না, সেটা সুচারুভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি দেখা যায়, সিএস জরিপের সঙ্গে বিক্রেতার খতিয়ানের কোনো গরমিল আছে, তাহলে বুঝতে হবে, কোনো জটিলতা আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, জরিপ খতিয়ানে জমির পরিমাণ পরবর্তী সময়ে যতবার বিক্রি হয়েছে, তার সঙ্গে জমির পরিমাণ মিল আছে কি না, তা যাচাই করে দেখা। দাগ নম্বর, ঠিকানা এসব ঠিক আছে কি না, এসব যাচাই করতে হবে।
৫. মালিক কি জমির স্বত্ব কী বা মালিকানা যাচাই করতে পারেন?
জমির স্বত্ব কী বা মালিকানা যাচাই করতে হবে। বিক্রেতার কাছ থেকে সব দলিল, বিশেষ করে ভায়া দলিল চেয়ে নিতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জানতে হবে সব দলিলের ক্রমিক নম্বর, দলিল নম্বর ঠিক আছে কি না।
৬. আমমোক্তারনামা দলিল থাকলে কি ভাবে যাচায় করা যায়?
সম্প্রতি কোনো আমমোক্তারনামা দলিল থাকলে তাতে উভয় পক্ষের ছবি ব্যবহার হয়েছে কি না যাচাই করতে হবে।
৭. দান করা জমি দলিল জাল কিনা চেকের নিয়ম
কোনো দান করা জমি হলে দলিলে সম্পাদনের তারিখ দেখে কবে জমিতে গ্রহীতা দখলে গেছে তা যাচাই করতে হবে। দলিলটি রেজিস্ট্রি করা কি না এবং দলিলদাতার সঙ্গে গ্রহীতার সম্পর্ক কী, তা যাচাই করতে হবে।
৮. সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া কোনো বিক্রীত দলিলের দলিল লেখকের নাম ঠিকানা জেনে সরেজমিন কথা বলে নেওয়া দরকার।
৯. দলিল স্ট্যাম্পের চেক করার নিয়ম
দলিল সম্পাদনের সময় ব্যবহূত স্ট্যাম্পের পেছনে কোন ভেন্ডার থেকে স্ট্যাম্প কেনা হয়েছে এবং কার নামে কেনা হয়েছে খেয়াল রাখুন। প্রতিটি স্ট্যাম্পের পেছনে একটি ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকে। এ নম্বরটি ঠিক আছে কি না, প্রয়োজনে স্ট্যাম্প বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করে যাচাই করে নিন।