মরিয়ম ফুল কি? মরিয়ম ফুলের উপকারিতা এবং বাচ্চা জন্মের বা প্রসবকালীন সময় মরিয়ম ফুলের ব্যবহার
মরিয়ম ফুলের উপকারিতা এবং ব্যবহার
১। মরিয়ম ফুলের পরিচিত
মরিয়ম ফুল জন্মে মরু অঞ্চলে। মধ্যপ্রাচ্য ও সাহারার বিস্তীর্ণ মরু অঞ্চলে বছরের পর বছর শুকনো গাছ মাটি আঁকড়ে থাকে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ও আছে । মরুভূমির অসহনীয় গরমের মধ্যে থাকা শুকনো এই গাছ ক্রমে নির্জীব পাথরের মতো হয়ে পড়ে। কখনো বৃষ্টির পরশ পেলে জীবন ফিরে পায় এবং এর বংশ বিস্তার ঘটে। এই গাছের ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, দস্তা এবং লোহা। বিশেষত, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম একসঙ্গে পেশি সংকোচন নিয়ন্ত্রণ করে। এর কোনো নেতিবাচক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
২। মরিয়ম কেমন ও এর পুষ্টিউপাদান
মরিয়ম ফুলটি খট-খটে, শুকনো ও মরা মনে হয়। তবে পানিতে ভেজালেই এটি তর তর করে তাজা হয়ে উঠে। এ এক আশ্চর্য ফুল। এটিকে হ্যান্ড অফ ফাতিমা এবং এর বৈশিষ্ট্য অনুসারে পুনরুত্থান উদ্ভিদ বলা হয় ।
পুষ্টিউপাদান – এই গাছের ফুলে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, দস্তা ও লোহা। তাই এটি ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করায় কোন প্রকার বাধা সমস্যা নেই।
৩। মরিয়ম ফুলের উপকার গুলো কি কি?
১. মায়ের প্রসব বেদনা শুরু হলে মরিয়ম ফুল ভিজানো পানি পান করালে অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই প্রসব হয়।
২. অনেক সময় দেখা যায় যে – মায়ের প্রসব হয়েছে কিন্তু ফুল পড়ে নাই এমতাবস্থায় মরিয়ম ফুল ভিজানো পানি পান করালে অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ফুল পড়বে।
৩. মরিয়ম ফুল ভিজানো পানি পান করলে কষ্ঠকাঠিন্ন দূর হয়।
৪. মরিয়ম ফুল ভিজানো পানি পান করলে বন্ধাত্ব রোগ দূর হয়।
৫. মরিয়ম ফুল ভিজানো পানি পান করলে হার্টের
অসুখ দূর হয়।
৪। মরিয়ম ফুলের বাচ্চা জন্মের সময় কি ব্যবহারের নিয়ম
মহানবী (সা:)র যুগে প্রচলিত বিবি মরিয়মের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে এই কুদরতি ফুলটি আল্লাহর রহমতে বেবি কন্সিভ করতে সহায়তা করে এবং লেবার পেইন কমাতে সাহায্য করে।
প্রসবকালীন সময়-
কোন বাচ্চা জন্মের সময় যখন ডেলিভারি ব্যথা উঠে তখন ফুলটিকে ডেলিভারি রুমে কোন খোলা বাসনে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভিজালে ফুলটি আস্তে আস্তে ফুটতে থাকবে এবং যার ডেলিভারি হবে তার জড়ায়ুর মুখ খুলতে থাকবে। যতই ভিজতে থাকবে ও প্রষ্ফুটিত হতে থাকবে আল্লাহ্ তাআলার দয়ায় মরিয়ম বিবির ফুলের বরকতে বাচ্চার জন্ম খুব সহজ ভাবেই হবে। বেবী হয়ে গেলে পানি থেকে ফুলটি উঠিয়ে ফেলতে হয় এবং এই ফুলের কাজ শেষে পানি থেকে উঠিয়ে রাখলে আবার আগের মত ছোট হয় কারন এটি একাধিক বার ব্যবহারযোগ্য।
গর্ভবতী হওয়ার জন্য-
আর যারা বাচ্চা কন্সিভ করতে চান তারা শেকড় ভিজিয়ে রেখে তার পানিটা তাহাজ্জুদ
নামাজের আগে এবং পরে নিয়ত করে খাবেন এবং এটি অবশ্যই ফযরের নামাজ পড়ার আগেই খেয়ে নিতে হবে।
কথিত আছে কোন বাচ্চা জন্মের সময় ডেলিভারি পেইন উঠে তখন ফুলটিকে ডেলিভারি রুমে কোন খোলা বাসনে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভিজালে ফুলটি আস্তে আস্তে ফুটতে থাকবে এবং যার ডেলিভারি হবে তার জড়ায়ুর মুখ খুলতে থাকবে এবং ব্যাথা বাড়বে। যতই ভিজতে থাকবে ও প্রষ্ফুটিত হতে থাকবে আল্লাহ্ তাআলার দয়ায় মরিয়ম বিবির ফুলের বরকতে বাচ্চার জন্ম খুব সহজ ভাবেই হবে। বেবী হয়ে গেলে পানি থেকে ফুলটি উঠিয়ে ফেলতে হয়।এবং এই ফুলের কাজ শেষে পানি থেকে উঠিয়ে রাখলে আবার আগের মত ছোট হয় কারন এটি একাধিক বার ব্যবহারযোগ্য। আর যারা বাচ্চা কন্সিভ করতে চান তারা শেকড় ভিজিয়ে রেখে তার পানিটা তাহাজ্জুদ নামাজের আগে এবং পরে নিয়ত করে খাবেন এবং এটি অবশ্যই ফযরের নামাজ পড়ার আগেই খেয়ে নিতে হবে।
৫। মরিয়ম ফুল সম্পর্কে মানুষ কি বলে?
মরিয়ম ফুল সম্পর্কে সমাজে অনেক ভ্রান্ত বিশ্বাস চালু আছে। অনেকে হজ করতে গিয়ে এই ফুল কিনে নিয়ে আসেন এবং এর পানি দ্বারা উপকার গ্রহণ করে থাকেন। অনেকে মনে করেন, মরিয়ম ফুলের পাপড়ি ভিজিয়ে পানি পান করলে প্রসবকালীন ব্যথা লাঘব হয় এবং সহজে প্রসব হয়। আবার কারো কারো বিশ্বাস, এই ফুল শুঁকেই নাকি মারইয়াম (আ.) গর্ভে সন্তান লাভ করেছিলেন।আবার কোনো কোনো ব্যবসায়ী এটিকে প্রফেটিক মেডিসিন তথা নবী (সা.) নির্দেশিত ওষুধ হিসেবেও প্রচার করে থাকেন।
৬। মরিয়ম ফুল সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?
ইসলাম তার অনুসারীদেরকে এমন কোনো কিছু করতে বলে না যা তার মানবিয় প্রকৃতির বিরুদ্ধে যায়।
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না (সূরা- বাকারা, আয়াত- ২৮৬)।
তাই নিষিদ্ধ, গর্হিত ও শিরক হয় এমন সব পদ্ধতি ব্যতীত বৈধ পদ্ধতিতে চিকিৎসা গ্রহণ করায় কোনো বাধা-নিষেধ নেই। সুতরাং ডাক্তারি পরামর্শের ভিত্তিতে চিকিৎসা হিসেবে মরিয়ম ফুল ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু এর ধর্মীয় বিশেষ কোনো তাৎপর্যে বিশ্বাস করা যাবে নাফ
ইসলামি শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই। কোরআন ও হাদিস দ্বারা এর কোনো গুরুত্ব ও তাৎপর্য প্রমাণিত নয়। উপরোল্লিখিত কথাবার্তা পুরোপুরিই আজগুবি, সামাজিক কুসংস্কার মাত্র।তবে ভেষজ উদ্ভিদীয় চিকিৎসা হিসেবে এটি ব্যবহার করা যায়। এটি শারীরিক চিকিৎসার বিষয়, যা ওহির ওপর নির্ভর করে না। বরং পরীক্ষা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জানা যায়। সুতরাং ওষুধি গাছ হিসেবে চিকিৎসার জন্য এই ফুল থেকে উপকার গ্রহণ করা যাবে। কিন্তু এর ধর্মীয় বিশেষ কোনো ফজিলত বা তাৎপর্য আছে বলে বিশ্বাস করা যাবে না।