অস্ত্রের চেয়েও ভয়ঙ্কর মার্কিন ডলার!
পৃথিবীতে বেশি ছাপানো মুদ্রার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার অন্যতম। সমগ্র পৃথিবীতে লেনদেনের জন্য ডলার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে। যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে তাই এর (ডলারের) চাহিদাও অনেক বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মাধ্যমে লেনদেন হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের আধিপত্য অনেক বেশি।
ইউক্রেন, রাশিয়া যুদ্ধে যেখানে টালমাটাল বৈশ্বিক অর্থনীতি। সেখানে আধিপত্য বিস্তার করছে মার্কিন ডলার। ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেখানে তাদের অর্থনীতি নিয়ে নাকানি-চুবানি খাচ্ছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ডলারের মান ধরে রেখেছে। এমন কি গত ২০ বছরের মধ্যে মার্কিন ডলারের মূল্য এখন সবচেয়ে বেশি।
এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক ডলারের দাম কেন বাড়ছে।
ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণ নিচে তুলে ধরা হলো
আন্তর্জাতিক বাজারে কোন দেশের আমদানি আয় বৃদ্ধি ও একই সাথে রপ্তানি ব্যয় এবং প্রবাসী ব্যয় কমে গেলে সে দেশে ডলারের দাম বৃদ্ধি পায়।
তাছাড়া কোন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ এর পরিমান কমে গেলেও ডলারের দাম বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া বিদেশে পড়াশোনা জন্য ও পর্যটক হিসাবে নগদ ডলার কোন দেশ থেকে নিয়ে গেলেও ডলারের দাম বৃদ্ধি পায়।
যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র হিসাবে ডলারের ব্যবহার
- ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউট এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য শিল্পোন্নত ১০(দশ)টি দেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থ মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনরগণ মিলত হন।
- এ বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল মুদ্রা বিনিময় সহজ করা। তখন কার সময়টা ছিল অর্থনৈতীক সংকটের কাল।শিল্পোন্নত দেশগুলো(পশ্চিমারা) ব্রেটন উডস নামে এক অর্থনৈতীক ব্যবস্থার আওতায় ছিল।যার কারনে একতরফা ভাবে মুদ্রার অবমূল্যায়ন করা সম্ভব হতো না। কিন্তুু এ নীতি থেকে বের হতে চেয়ে ছিলেন তখন কার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন।
- সে কারনে ১৯৭১ সালের ১৫ই আগস্ট তখন কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন একতরফা ভাবে ব্রেটন উডস অর্থনৈতীক ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।তার এ সিদ্ধান্ত গ্রহনের কারনে তোলপর শুরু হয় পশ্চিমা দুনিয়ায়।
- তখন পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থ মন্ত্রীরা নিক্সন প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেন এবং নিক্সন প্রশাসনকে বৈঠকে বসার আহব্বান যানান।নিক্সন প্রশাসন বৈঠকের আহব্বান এ সারা দিলেও সে বৈঠক কোন ফলাফল বহন করেনি।
- নিক্সন প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় সকল আলোচনায় ব্যর্থ হয়। তবে ঐ বৈঠকের একটি উক্তি এখন ও স্মরণীয় হয়ে আছে, যেখানে পশ্চিমা বিশ্বের অর্থ মন্ত্রীরা ডলারের একতরফা অবমূল্যায়নের প্রতিবাদ করছিলেন তখন নিক্সন প্রশাসনের ট্রেজারী সেক্রেটারি তাদের মুখের উপর বলেছিলেন এটা আমাদের মুদ্রা সমস্যাটা তোমাদের। তখন থেকেই বাণিজ্যের প্রতিযোগীতায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের নাম ডলার।