আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২২ । ব্যক্তি শ্রেণীর আয়কর ২০২২-২০২৩
টিআইএন ধারী হলে আপনাকে রিটার্ণ দাখিল করতে হবে – রিটার্ণ দাখিল না করলে আপনি বিভিন্ন সরকারি সেবা এবং ইউটিলিটি সেবা প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হবেন – আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২২
ব্যক্তি রিটার্ণ দাখিল ২০২২- জানুন ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে পুরুষ, মহিলা, ৩য় লিঙ্গ, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী করদাতার আয়করের হার, নূন্যতম আয়করে হার সম্পর্কেও অবগত করা হবে। বাংলাদেশ এনবিআর ব্যক্তি করদাতাদের কর নির্ধারণ, রিটার্ণ দাখিল সংক্রান্ত তথ্য ও দিকনির্দেশনা দিয়ে প্রতি বছর একটি আয়কর নির্দেশিকা প্রকাশ করে থাকে। আপনি প্রথমেই আয়কর নির্দেশিকাটি ভাল করে পড়ে নিবেন। এখান থেকে সংগ্রহ করে নিন– Income Tax Nirdeshika 2022-23 । নতুন আয়কর নির্দেশিকা ২০২২
অর্থ আইন, ২০২২ এ বলা হয়েছে প্রত্যেক নিবাসী ব্যক্তি করদাতা (অনিবাসী বাংলাদেশীসহ), হিন্দু অবিভক্ত পরিবার, অংশিদারী ফার্মের মোট আয়ের উপর আয়করের হার প্রতিবছর সরকার নির্ধারণ করে দিবে। একজন পুরুষ করদাতার মোট আয়ের উপর স্ল্যাবভিত্তিক আয়কর নির্ধারণ করা হবে।
আয়ের প্রথম ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত (করমুক্ত) ০% কর দিতে হবে অর্থাৎ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় থাকলে কোন কর দিতে হবে না শুধু রিটার্ণ দাখিল করবেন যদি টিআইএন থাকে। ৩ লক্ষ টাকার অধিক আয় থাকলে পরবর্তী ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ৫% এবং আরও থাকলে পরবর্তী ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ১০% এবং আরও আয় অবশিষ্ট থাকলে পরবর্তী ৪,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ১৫% এবং আরও আয় থাকলে পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ২০% এবং অবশিস্ট মোট আয়ের উপর ২৫% হারে আয়কর সরকারকে দিতে হবে।
উল্লেখ্য যে, উক্ত হার করদাতার মর্যাদা নির্বিশেষে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত পন্য প্রস্তুতকারকের ক্ষেতে প্রযোজ্য হবে না। এক্ষেত্রে ভিন্ন রেট বা হার প্রযোজ্য হইবে।
মহিলা, ৩য় লিঙ্গ, ৬৫ উর্দ্ধে ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী ও গেজেটভূক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা হচ্ছে- ৩,৫০,০০০ টাকা। একজন প্রতিবন্ধী পুরুষ বা মহিলা বা তৃতীয় লিংগের করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা- ৪,৫০,০০০ টাকা। গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা- ৪,৭৫,০০০ টাকা। ব্যক্তি আয়কর হার করবর্ষ ২০২২-২৩
অনলাইনে আয়কর প্রদান করা যায়। এক্ষেত্রে কোন হার্ড কপি জমা দিতে হবে না। এছাড়া করের টাকা জমা দিতে ব্যাংকেও যেতে হবে না।
তবে হার্ড কপি সংরক্ষণ করতে হবে কারণ ভবিষ্যতে যদি কোন অডিট আপত্তি উত্থাপিত হয় তখন হার্ড কপি দেখাতে হবে।
একজন শিক্ষকের আয় এবং করদায় পরিগণনা পদ্ধতি ২০২২
বিনিয়োগজনিত রেয়াত কি? মোট বিনিয়োগের উপর একটি অংশ আয়কর রেহাই পাওয়া যায়।
- নির্দিষ্ট কয়েকটি খাতে করদাতার বিনিয়োগ/চাঁদা থাকলে করদাতা কর ছাড় বা কর রেয়াত পাবেন। করদাতার মোট আয়করের পরিমাণ থেকে কর রেয়াত/ছাড়ের পরিমাণ বাদ দিয়ে অবশিষ্ঠ টাকা কর পরিশোধ করতে হবে।
-
করদাতারা কর ছাড় পাওয়ার জন্য বিভিন্ন লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন। তবে সরকার অনুমোদিত কিছু নির্দিষ্ট বিনিয়োগ খাত ও অনুদান খাতে বিনিয়োগ/দান করলেই এই কর রেয়াত পাওয়া যাবে। যেমন, জিপিএফ, ইন্সুরেন্স, ডিপিএস, শেয়ার ক্রয়, বন্ড ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ। প্রতিবছর যে পরিমাণ চাঁদা প্রদান করেন সেটিই আপনার বার্ষিক বিনিয়োগ।
-
আয়কর কম দেয়ার বৈধ একটি উপায় হচ্ছে কর রেয়াত। চলুন দেখে নিই কিভাবে কম আয়কর দেয়া যায়, আপনার বার্ষিক আয় ১৫ লাখ টাকার কম হলে মোট বিনিয়োগ ও দানের পরিমাণের ১৫ শতাংশ কর রেয়াত পাওয়া যাবে। ১৫ লাখ টাকা বা বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এখন ১৫% কর ছাড় পাওয়া যাবে।
- রেয়াতযােগ্য অংক হিসেবে মোট করযোগ্য আয়ের ২০% নির্ধারণ করা হয়েছে। যা পূর্বে ২৫% নির্ধারণের বিধান ছিল। চাইলেই আপনি খুব বেশি বিনিয়োগ দেখাতে পারবেন না। মোট আয়ের ২০% এর অধিক বিনিয়োগ দেখালে সেটি রেয়াতের আওতায় আসবে না।
- নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ণ দাখিলে ব্যর্থ হলে কর রেয়াতের প্রাপ্যতা ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭.৫% করা হয়েছে। পূর্বে নির্ধারিত সময়ে মধ্যে দাখিলে ব্যর্থ হলে প্রাপ্যতায় প্রভাব পড়ত না।
ন্যূনতম আয়কর কত টাকা দেয়া যায়?
যদি আপনার মোট আয় ৩ লক্ষ ১ হাজারও হয়। তবে এক হাজার টাকার উপর ৫% কর দিতে হবে। ১০০০ টাকা ৫% যেহেতু ৫০ টাকা আসবে কিন্তু আপনি ৫০ টাকা আয়কর দিতে পারবেন না। আপনাকে ন্যূনতম আয়কর প্রদান করতে হবে। মোট করযোগ্য আয় আয়সীমা অতিক্রম করলে প্রদেয় নূন্যতম আয়কেরর পরিমাণ হচ্ছে- ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন বা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এরিয়ার বাসিন্দা হলে আপনাকে ৫,০০০ টাকা। আর যদি অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দা হউন তবে ৪,০০০ টাকা এবং সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকা অর্থাৎ উপজেলা লেভেলের বাসিন্দা হউন বা আপনার অফিস সেই অঞ্চলে হয় তবে ন্যূনতম ৩,০০০ টাকা কর পরিশোধ করতে হবে। একজন চাকুরীজীবি করদাতা আয়বছরে একাধিক স্থানে কর্মরত থাকলে যে স্থানে তিনি অধিক কাল কর্মরত ছিলেন ন্যূনতম করের জন্য সে স্থানই তাঁর অবস্থানস্থল বলে বিবেচিত হবে।
করদাতা অনিবাসী হলে বাংলাদেশে তিনি যে ঠিকানা ব্যবহার করেন সে ঠিকানাই তাঁর অবস্থানস্থল হিসেবে বিবেচিত হবে।
করমুক্ত সীমার উর্দ্ধে আয় আছে এমন কোন করদাতার প্রদেয় আয়করের পরিমাণ (কর ধার্য ও কর রেয়াত বাদ দেয়ার পর) হিসাব অনুযায়ী ন্যূনতম আয়করের পরিমাণ অপেক্ষা কম হলেও তাঁতে ন্যূনতম আয়কর পরিশোধ করতে হবে।