ভ্যাট ও ট্যাক্স

আয়কর রিটার্ন ২০২৪। ২০২৪ সালে কয় জনের উপর আয়কর দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে?

আয়কর রিটার্ন ২০২৪

 

 

১। রিটার্ন দেওয়ার হিসাব নিকাশ

শুরু হলো আরেকটি নতুন অর্থবছর, এল নতুন কর বছর। শেষ মুহূর্তের ঝামেলা এড়াতে আপনি এখনই বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দিতে পারবেন। আপনি আয়ের হিসাব-নিকাশ দেবেন ২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে এ বছরের জুন মাস পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে করযোগ্য আয় থাকলে কর দিতে হবে। এখন আপনি হিসাব করে দেখুন, কত আয় করলেন।

প্রতিবছরই আয়কর অধ্যাদেশে কমবেশি পরিবর্তন হয়। সেখানে ব্যক্তি আয়ের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আসে। রিটার্নের প্রস্তুতি নিতে জেনে নিতে হবে এবার আয়করে কী ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রতিবছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন দেওয়া যায়।

এবারের রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে ব্যক্তি করদাতাদের জন্য যেমন ভালো খবর আছে, তেমনি খারাপ খবরও আছে। খারাপ খবরটি হলো, বিভিন্ন মহলের দাবি সত্ত্বেও এবারও করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়নি। করমুক্ত আয়সীমা আগের মতোই আড়াই লাখ টাকা বহাল রাখা হয়েছে। চার বছর ধরেই করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করা হয়নি। ভালো খবর হলো, সঞ্চয়পত্রসহ নির্দিষ্ট কিছু খাতে বিনিয়োগ করলে কর ছাড় বাড়বে।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন অন্যান্য সিটি করপোরেশন এবং সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে ন্যূনতম কর যথাক্রমে ৫ হাজার টাকা, ৪ হাজার টাকা ও ৩ হাজার টাকা দিতে হবে।

 

৪। যাদের রিটার্ন বাধ্যতামূলক

২০২৪ সালে কয় জনের উপর আয়কর দেওয়া বাধ্যতামূলক যাদের উপর আয়কর দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে সরকার ন্যূনতম কর যথাক্রমে ৫ হাজার টাকা, ৪ হাজার টাকা ও ৩ হাজার টাকা দিতে হবে। ১০ পেশাজীবীর আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। এই তালিকায় আছেন চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, হিসাববিদ, ব্যয় ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক বিশেষ হিসাববিদ, প্রকৌশলী, স্থপতি, জরিপকারী, আয়কর পেশাজীবী এবং সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা স্থানীর সরকারে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদার। গত বছর থেকে ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে সব বেসরকারি চাকরিজীবীর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি উবার, পাঠাওয়ের মতো রাইড শেয়ারিংয়ে গাড়ি দিলেও বছর শেষে রিটার্ন দিতে হবে।

যদি আপনার মোট সম্পদের পরিমাণ ২৫ লাখ টাকার বেশি হয় তবু আপনাকে সম্পদ বিবরণী দিতে হবে। আপনার স্বামী বা স্ত্রী কিংবা অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান ও নির্ভরশীল ব্যক্তি করদাতা না হলে তাঁদের সম্পদ ও দায় আপনার সম্পদ বিবরণীতে দেখাতে হবে।

 

৫। চেক লিস্ট

শুধু আয়কর ও সম্পদ বিবরণীর ফরম পূরণ করে দিলেই হবে না, আয় কিংবা বিনিয়োগ করে কর রেয়াতের বিপরীতে বেশ কিছু কাগজপত্র আয়কর বিবরণীর দলিলের সঙ্গে জমা দিতে হবে। এ জন্য যেসব কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে সেগুলোর অন্যতম হলো বেতন খাতের আয়ের দলিল, সিকিউরিটিজের ওপর সুদ আয়ের সনদ, ভাড়ার চুক্তিপত্র, পৌর করের রসিদ, বন্ধকি ঋণের সুদের সনদ, মূলধনি সম্পদের বিক্রয় কিংবা ক্রয়মূল্যের চুক্তিপত্র ও রসিদ, মূলধনি ব্যয়ের আনুষঙ্গিক প্রমাণপত্র, শেয়ারের লভ্যাংশ পাওয়ার ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট, সুদের ওপর উৎসে কর কাটার সার্টিফিকেট।

কোনো করদাতা যদি কর রেয়াত নিতে চান, তবে বেশ কিছু কাগজপত্র লাগবে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জীবনবিমার কিস্তির প্রিমিয়াম রসিদ, ভবিষ্য–তহবিলে চাঁদার সনদ, ঋণ বা ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, স্টক বা শেয়ারে বিনিয়োগের প্রমাণপত্র, ডিপোজিট পেনশন স্কিমে চাঁদার সনদ, কল্যাণ তহবিলে চাঁদা ও গোষ্ঠী বিমার কিস্তির সনদ, জাকাত তহবিলে চাঁদার সনদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *