কলেজ ছাত্রকে বিয়ে করে আলোচিত সেই কলেজ শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার
কলেজ ছাত্রকে বিয়ে করে সকলের আলোচনায় আসা নাটোরের সেই কলেজ শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪১) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার আনুমানিক সকাল সাতটার দিকে নাটোর শহরের বলারিপাড়া মহল্লার ভাড়া বাসা থেকে মরাদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর বর্তমান স্বামী মামুন হোসেনকে (২৩) আটক করে পুলিশ হিবাযতে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়ায় আটকে রাখেন মামুনকে
নাটোর সদর থানা মাধ্যমে জানা গেছে, বলারিপাড়া মহল্লার নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চতুর্থ তলায় মামুন-খায়রুন দম্পতি ভাড়া থাকতেন। আজ সকাল সাতটার দিকে মামুন তাঁর আশপাশের বাসার লোকজনকে জানা, তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। তখন আশপাশের লোকজন তাঁদের বাসায় গিয়ে দেখতে পান ড্রয়িং রুমের ঝেতে মরাদেহটি পড়ে আছে। তখন স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা মামুনকে আটক করে রাখেন। মামুন তখন উপস্থিত লোকজনের কাছে বলেন, তাঁর স্ত্রী সিলিং ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
রাত দুইটার দিকে বাহিরে যায় মামুন
নান্নু মোল্লা ম্যানশনের প্রহরী নিজাম উদ্দিনের সাথে কথা বলে জানাজায়, গতকাল শনিবার রাতে মামুন-খায়রুন দম্পতির বাসায় শুধু তাঁরাই ছিলেন।শনিবার আনুমানিক রাত দুইটার দিকে মামুন তাঁর (নিজাম উদ্দিনের)কাছ থেকে প্রধান ফটকের চাবি নিয়ে বাহিরে যান।আনুমানিক সকাল ছয়টার সময় বাসায় ফিরে আসেন এবং সাতটার সময় তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে সবাইকে জানান।
স্ত্রীকে ঝুলান্ত অবস্থায় দেখতে পান মামুন
প্রহরীর ভাষ্য মতে, খায়রুনের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখতে পাওয়া জায়নি। তবে গলায় দাগ আছে। ড্রয়িংরুমের সিলিং ফ্যানেে সঙ্গে একটুকরা পোড়া কাপড় দেখা গেছে। কাপড়টির কিছু অংশ মেঝেতেও পড়ে থাতে দেখা যায়। পোড়া কাপড়ের বিষয়টি তিনি ভোরে মামুনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। ওই সময় তিনি (মামুন) বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি বেডরুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। পাশের রুমে শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি এসে তাঁর স্ত্রীকে ঝুলান্ত অবস্থায় দেখতেপান।ফ্যান থেকে ওড়না খোলার জন্য তিনি(মামুন) আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানান।
এক ছেলেকে নিয়ে থাকতেন খায়রুন নেছা
আজ সকালে খায়রুনের চাচাতো ভাই ছবের উদ্দিন জানান, তাঁর বোন(খায়রুন নেছা) নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ডিগ্রি কলেজে দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার বাসিন্দা মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। তাঁর বর্তমান স্বামী মামুন হোসেন একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রাম এলাকার বাসিন্দা ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর এক ছেলেকে নিয়ে তিনি (খায়রুন নেছা)থাকতেন।
পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছয় মাসের সম্পর্কের পর গত বছরের ডিসেম্বরে মামুন এবং খায়রুন বিয়ে করেন। গত জুলাইয়ে তাঁদের এই বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে আলোচনায় আসেন এই দম্পতি।
শিক্ষিকাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি তিনি আত্মহত্যা
নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাছিম আহমেদ বলেন, শিক্ষিকার লাশ উদ্ধারের পর তাঁর মৃত্যুর কারণ জানার জন্য তাঁরা তদন্ত শুরু করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে ওই শিক্ষিকাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে।
সূত্রঃ প্রথম আলো