ব্যাংকিং নিউজ

কৃষি ঋণ অবলোপন নীতিমালা ২০২৩ । ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মওকুফে মামলা করতে হবে না

ব্যাংক ঋণ মওকুফের ক্ষেত্রে অর্থ আদায়ের পদক্ষেপ হিসেবে আদালতে মামলা করতে হয় – কৃষি  ও সিএমএসএমই ঋণের ক্ষেত্রে মামলা ছাড়াই ঋণ রাইট অফ করা যাবে– কৃষি ঋণ অবলোপন নীতিমালা ২০২৩

অর্থ ঋণ আদালত আইন কি বলে?–The Transfer of Property Act, 1882 অথবা বর্তমানে প্রচলিত অন্য কোন আইনে বিপরীত যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (৩) এর অধীন বন্ধকী মামলা ব্যতিরেকে, এই আইনের অধীন দায়েকৃত কোন মামলায়, আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ডিক্রী বাদী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিষ্ক্রিয় সমাপ্তির (Foreclosure) প্রাথমিক ডিক্রী হিসাবে গণ্য হইবে; এবং ঋণের বিপরীতে বাদীর অনুকূলে বন্ধকী স্থাবর সম্পত্তি ডিক্রীর ধারাবাহিকতায় নিলাম বিক্রয় হওয়া মাত্রই উক্ত প্রাথমিক ডিক্রী চূড়ান্ত ডিক্রী হিসাবে গণ্য হইবে, এবং বিক্রয় চূড়ান্ত ও ক্রয় বৈধ গণ্য হইবে এবং অতঃপর উক্ত সম্পত্তি পূনরুদ্ধার করিবার কোনরূপ অধিকার (Right to redeem) বিবাদী-দায়িকের থাকিবে না৷ অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩

০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নং-০১ এর প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে। সার্কুলারের ০২(খ) অনুচ্ছেদে অবলোপনের জন্য নির্বাচিত ঋণ/বিনিয়োগ হিসাবসমূহের ক্ষেত্রে আগাম আইনগত ব্যবস্থা সূচিত না হয়ে থাকলে অবলোপনের পূর্বে অবশ্যই অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ অনুযায়ী মামলা দায়ের করতে হবে মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয় তবে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর আওতায় অত্যাবশ্যকীয়ভাবে মামলাযোগ্য না হলে টাঃ ২,০০,০০০/-(দুই লক্ষ টাকা) পর্যন্ত যে কোন অংকের অবলোপনযোগ্য ঋণ/বিনিয়োগ আদালতে মামলা দায়ের ব্যতিরেকে উক্ত সার্কুলারের ২ (গ) এ বর্ণিত নির্দেশনা পরিপালন সাপেক্ষে অবলোপন করা যাবে মর্মেও নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

কৃষি (Agriculture) এবং সিএমএসএমই (CMSME) ঋণসহ অন্যান্য খাতের ঋণ/বিনিয়োগ অবলোপনের জন্য বাছাইকৃত ক্ষুদ্র অংকের ঋণের মামলা খরচ ঋণস্থিতি বিবেচনায় প্রায়শই অধিক হয় বিধায় এই মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে যে, অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর আওতায় অত্যাবশ্যকীয়ভাবে মামলাযোগ্য না হলে টাঃ ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ টাকা) পর্যন্ত ক্ষুদ্র অংকের ঋণ অবলোপন করার আবশ্যকতা দেখা দিলে সেক্ষেত্রে আদালতে মামলা দায়ের ব্যতিরেকে অবলোপন করা যাবে। তবে, অন্যান্য বিষয়ে বিআরপিডি সার্কুলার নং-০১/২০১৯ এ বর্ণিত নির্দেশনা পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

কৃষি ঋণ মওকুফ বা রাইট অফ করতে ব্যাংকের এখতিয়ার / কৃষি ঋণ রাইট অফ বা অনাদায়ী দেখানোতে শিথিলতা

কৃষি ঋণ বা সিএমএসএমই (CMSME) ঋণ ব্যাংক রাইট অফ বা অনাদায়ী দেখাতে পারবে। এক্ষেত্রে মামলা করতে হবে না।

অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩

ঋণ আদায় মামলায় আদালতের ক্ষমতা ও অধিক্ষেত্র । আদালত যে পদক্ষেপ নিতে পারে

  • (১) অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (৫) ও (৬) এর বিধান সাপেক্ষে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায় সম্পর্কিত যাবতীয় মামলা ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত, ঘোষিত বা গণ্য হওয়া অর্থ ঋণ আদালতে দায়ের করিতে হইবে এবং উক্ত আদালতেই উহাদের নিষ্পত্তি হইবে৷
  • (২) এই আইনের অধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্থাবর সম্পত্তি জামানত স্বরূপ বন্ধক গ্রহণপূর্বক প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে উক্ত বন্ধকী স্থাবর সম্পত্তির বিক্রয় (Sale) বা নিষ্ক্রিয় সমাপ্তির (Foreclosure) উদ্দেশ্যে The Transfer of Property Act, 1882 (Act No. IV of 1882) এর section 67 এর অধীন এবং The Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908) এর Order XXXIV এর বিধান অনুযায়ী কোন বন্ধকী মামলা (Mortgage suit) দায়ের করিতে চাহিলে, উক্ত মামলাও এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত অর্থ ঋণ আদালতেই দায়ের করিতে হইবে; এবং এইরূপ ক্ষেত্রে The Code of Civil Procedure, 1908 এর বিধানসমূহ এই আইনের বিধানসমূহের সহিত, যতদূর সম্ভব, সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রযোজ্য হইবে৷
  • (৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকর্তৃক দায়েরকৃত মামলা নিষ্ক্রিয় সমাপ্তির (Foreclosure) উদ্দেশ্যে একটি বন্ধকী মামলা (Mortgage suit) হইলে, কেবলমাত্র সেই ক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ডিক্রী প্রাথমিক ডিক্রী (Preliminary decree) হইবে এবং অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে ঋণ আদায়ার্থ দায়েরকৃত মামলায় আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ডিক্রী চূড়ান্ত ডিক্রী (Final decree) হইবে৷
  • (৪) The Transfer of Property Act, 1882 অথবা বর্তমানে প্রচলিত অন্য কোন আইনে বিপরীত যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (৩) এর অধীন বন্ধকী মামলা ব্যতিরেকে, এই আইনের অধীন দায়েকৃত কোন মামলায়, আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ডিক্রী বাদী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিষ্ক্রিয় সমাপ্তির (Foreclosure) প্রাথমিক ডিক্রী হিসাবে গণ্য হইবে; এবং ঋণের বিপরীতে বাদীর অনুকূলে বন্ধকী স্থাবর সম্পত্তি ডিক্রীর ধারাবাহিকতায় নিলাম বিক্রয় হওয়া মাত্রই উক্ত প্রাথমিক ডিক্রী চূড়ান্ত ডিক্রী হিসাবে গণ্য হইবে, এবং বিক্রয় চূড়ান্ত ও ক্রয় বৈধ গণ্য হইবে এবং অতঃপর উক্ত সম্পত্তি পূনরুদ্ধার করিবার কোনরূপ অধিকার (Right to redeem) বিবাদী-দায়িকের থাকিবে না৷
  • (৫) The Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No. III of 1913) এর বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অর্থ ঋণ আদালত কর্তৃক আদায়যোগ্য ঋণ “সরকারী পাওনা” হইলেও উহা আদায়ার্থ মামলা এই আইনের অধীন আদালতেই দায়ের করিতে হইবে:
  • তবে শর্ত থাকে যে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনূর্ধ্ব 1[৫,০০,০০০ টাকার (পাঁচ লক্ষ টাকা)] দাবী সম্বলিত মামলাসমূহ অর্থ ঋণ আদালতে দায়ের না করিয়া The Public Demands Recovery Act, 1913 এর বিধান অনুযায়ী সার্টিফিকেট মামলা হিসাবেও দায়ের করা যাইবে৷
  • (৬) কোন বিশেষ আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ আদায়ার্থ কোন বিশেষ বিধান উক্ত বিশেষ আইনে থাকিলে, এই আইনের বিধান উক্ত আইনের বিধানের অতিরিক্ত গণ্য হইবে; এবং অনুরূপ আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই আইনের অধীন আদালতে ঋণ আদায়ার্থ মামলা দায়ের করা হইলে এই আইনের বিধানাবলীই প্রযোজ্য হইবে৷
  • (৭) উপ-ধারা (১) এর বিধান সত্ত্বেও, এই ধারার কোন কিছুই কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ধারা ২ এর দফা (ক) এর উপ-দফা (১২), (১৩), (১৪), (১৫), (১৬) ও (১৭) এর অধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারকে প্রদত্ত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে কার্যকর হইবে না৷
  • (৮) এই আইনের অধীন দায়েরকৃত মামলা “অর্থ ঋণ মামলা” নামে রেজিিষ্ট্র হইবে৷
  • (৯) কোন জেলায় একাধিক অর্থ ঋণ আদালত থাকিলে, মামলা দায়েরের জন্য উহাদের স্থানীয় অধিক্ষেত্র জেলা জজ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে৷
  • (১০) জেলা জজ স্বেচ্ছায় বা মামলার কোন পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে, ন্যায় বিচারের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজন মনে করিলে, কোন অর্থ ঋণ আদালতে বিচারাধীন কোন মামলা তাঁহার নিজ এখ্‌তিয়ারাধীন এলাকায় অবস্থিত অন্য কোন অর্থ ঋণ আদালতে, যদি থাকে, স্থানান্তর করিতে পারিবেন৷
  • (১১) অর্থ ঋণ আদালত একটি দেওয়ানী আদালত হিসাবে গণ্য হইবে এবং, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত অসংগতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, দেওয়ানী আদালতের সমস্ত ক্ষমতা ও এখ্‌তিয়ার উহার থাকিবে৷

অর্থ ঋণ আদালতের আদেশের চূড়ান্ত পরিনতি কি?

অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর অনুচ্ছেদ ২০–এই আইনের বিধান ব্যতিরেকে, কোন আদালত বা কর্তৃপক্ষের নিকট অর্থ ঋণ আদালতে বিচারাধীন কোন কার্যধারা বা উহার কোন আদেশ, রায় বা ডিক্রীর বিষয়ে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না, এবং এই আইনের বিধানকে উপেক্ষা করিয়া কোন আদালত বা কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিয়া কোন প্রতিকার দাবী বা প্রার্থনা করা হইলে, ঐরূপ আবেদন কোন আদালত বা কর্তৃপক্ষ গ্রাহ্য করিবে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *