ভিক্ষুক পুনবার্সন কেন্দ্র ২০২৪ । ভিক্ষুকগণ কোথায় গিয়ে কর্মসংস্থান সাহায্য চাইবে?
বাংলাদেশ সরকার ভিক্ষাবৃত্তি নিবৃত্তকরণের জন্য বার্ষিক ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়- এসব অর্থ অর্থ ভিত্তিক সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে বরাদ্দ মঞ্জুরী প্রদান করা হয় – ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি ২০২৪
৬৪ জেলায় কি বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে?– জি। ‘ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’ শীর্ষক কর্মসূচির ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২য় কিস্তি (অক্টোবর/২৩-ডিসেম্বর/২৩) বাবদ ভিক্ষুক পুনর্বাসন, দৈনিক মজুরিভিত্তিক জনবলের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য ব্যয় খাতে ৬৪টি জেলায় নিম্নেবর্ণিত হারে অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হলো। উল্লেখ্য, বরাদ্দকৃত অর্থ মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর মহোদয় কর্তৃক স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখায় প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রথম কবে ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প চালু করা হয়? দেশে দারিদ্র্য নিরসনে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং ভিক্ষাবৃত্তির মত অমর্যাদাকর পেশা থেকে মানুষকে নিবৃত করার লক্ষ্যে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ‘‘ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’’ শীর্ষক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আগস্ট/২০১০ খ্রিঃ হতে কর্মসূচি’র কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সাল হতে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হলেও তা তেমন ব্যাপকতা পায়নি। বর্তমান জনবান্ধব সরকার ভিক্ষাবৃত্তির মত সামাজিক ব্যধিকে চিরতরে নির্মূলের বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। বিষয়টি বিবেচনায় এনেই ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে প্রথম বারের মত দেশের ৫৮টি জেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের নিমিত্তে অর্থ প্রেরণ করা হয়।
ভিক্ষুককে কি নগদ টাকা প্রদান হয়? না। ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য ছাড়কৃত অর্থ দ্রুত উপজেলা/ইউসিডি পর্যায়ে প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে। ১ম ও ২য় কিস্তির অর্থ বিতরণের সামগ্রিক তথ্যাদি উল্লেখপূর্বক একটি প্রতিবেদন নিম্নস্বাক্ষরকারী বরাবর প্রেরণ করতে হবে। ভিক্ষুকদেরকে নগদ অর্থ প্রদান করা যাবে না। বরাদ্দকৃত অর্থ দ্বারা ভিক্ষুকদের আয়বর্ধন হয় এমন কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে, যাতে করে তাঁরা সমাজের মূলস্রোতধারায় ফিরে আসতে পারে। উক্ত অর্থ ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট নীতিমালাসহ সকল আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে। দৈনিক মজুরিভিত্তিক জনবলের বেতন ও উৎসব ভাতার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে হাজিরা নিশ্চিতসহ সংশ্লিষ্ট নীতিমালা যথাযথভাবে প্রতিপালন করে প্রদান করতে হবে; ছ) যথাযথ খাতভিত্তিক ব্যয় নিশ্চিত করতে হবে। অব্যয়িত অর্থ ৩০ জুন ২০২৪ তারিখের মধ্যে বিধিমতে সমর্পণ করতে হবে।
ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের মাধ্যমে ঠিক কতজন উপকৃত হয় / সম্ভাব্য উপকারভোগী ৩০00 জন
গৌরীপুর উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছর থেকে শুরু হয় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচী । এই কর্মসূচীর অধীনে এপর্যন্ত প্রায় ৯৫০জনকে পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থান করা হয় যাদের ৪৭০ জনকে নগদ অর্থ, উপকরণ, ভ্যান দোকান, পান দোকান, ডিম পাড়া মুরগি বিতরণের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। আর যারা একে বারেই অক্ষম তাদের বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি কার্ড প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়।
ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি ২০২৪ । ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান, পুনর্বাসন ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা।
- সমাজ থেকে ভিক্ষাবৃত্তি দূর করা;
- ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা;
- ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের দক্ষতা ও পেশা ভিত্তিক এককালীন আর্থিক অনুদান প্রদান;
- প্রচার মাধ্যমে ভিক্ষাবৃত্তির কুফল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা;
- অসুস্থ ভিক্ষুকদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা;
- ভাসমান আশ্রয়হীন ব্যক্তিদের স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা;
- ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠিকে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠিতে পরিণত করা;
- শারীরিকভাবে অক্ষম/অসুস্থ ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
ঢাকা শহরে ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা কোন গুলো?
ঢাকা শহরে ভিক্ষাবৃত্তি রোধের জন্য প্রাথমিকভাবে সরকার শহরের কিছু এলাকা ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করেছে। এলাকাগুলো হচ্ছে- বিমান বন্দরে প্রবেশ পথের পূর্ব পাশের চৌরাস্তা, বিমান বন্দর পুলিশ ফাড়িঁ ও এর আশ-পাশ এলাকা, হোটেল রেডিসন সংলগ্ন এলাকা, ভি আই পি রোড, বেইলী রোড, হোটেল সোনারগাঁও ও হোটেল রূপসী বাংলা সংলগ্ন এলাকা, রবীন্দ্র স্মরণী এবং কূটনৈতিক জোনসমূহ। ঢাকা শহরের ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষিত এলাকাসমূহ ভিক্ষুকমুক্ত রাখার লক্ষ্যে নিয়মিত মাইকিং, বিজ্ঞাপন, লিফলেট বিতরণ এবং বিভিন্ন স্থানে নষ্ট হয়ে যাওয়া প্লাগস্ট্যান্ড মেরামত/নতুন স্থাপন করার কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও ঢাকা শহরের ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষিত এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আটককৃত ভিক্ষুকদের আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার নিমিত্তে ৫ টি আশ্রয়কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ফাঁকা জায়গায় অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৬টি টিনসেড ডরমিটরি ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকাসমূহে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪১ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ২৯০০ জন ভিক্ষুকে আটক করা হয়। আটককৃতদের রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় ৭৫০ জন কে (ভিক্ষাবৃত্তি না করার শর্তে) মুক্তি দেওয়া হয়। অবশিষ্ট ২১৫০ জন কে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণের নিমিত্ত আশ্রয়কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়। ভিক্ষুক পুনর্বাসনের কাজটি পদ্ধতিগতভাবে করার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান নীতিমালা