সর্বশেষ নিউজ

মোবাইল নম্বর দিয়ে বিকাশ হ্যাক । বিকাশ একাউন্ট হতে টাকা চুরি হলে কি করবেন?

বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করা কোন সহজ ব্যাপার নয়-আপনার মোবাইল বা ওটিপি ও পিন কেউ না পেলে কোন ভাবেই হ্যাক করতে পারবে না – মোবাইল নম্বর দিয়ে বিকাশ হ্যাক

বিকাশ কি ওটিপি বা পিন জানতে চায়? না। – আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নাম্বার কিংবা অ্যাপ ভেরিফিকেশন কোড কখনোই কাউকে দিবেন না। মনে রাখবেন, বিকাশ কখনোই এসব তথ্য জানতে চাইবে না। যেকোনো তথ্য যাচাই করতে বিকাশ হেল্পলাইন 16247 নাম্বারে কল করুন।

শুধু বিকাশ মোবাইল নম্বর দিয়েই কি হ্যাক করা যায়? না। শুধু মোবাইল নম্বর বা বিকাশ মোবাইল নম্বর দিয়ে কেউ বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করতে পারবেনই না। এমনটি হতেই পারে না যে, আপনি কিছু করেন নি বা কাউকে কোন তথ্য বা মোবাইল দেননি আর বিকাশ হতে টাকা উদাও হয়ে যাবে। বিকাশ একাউন্ট একটি ব্যাংক সার্ভিস ব্যাংক কখনও গ্রাহকের টাকা উধাও করতে পারে না। সরকার নিবন্ধন প্রতিষ্ঠান কখনই এমনটি করে না এবং কেউ কি চায় তাদের ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যাক?

প্রতারণা এড়িয়ে চলতে করণীয় কি?  বিকাশ একাউন্টের পিন (PIN) ও এসএমএস-এ আসা ৬ সংখ্যার ভেরিফিকেশন কোড (OTP) আপনার একান্ত গোপন তথ্য। বিকাশ কখনোই ১৬২৪৭ বা অন্য কোন নাম্বার থেকে কল করে আপনার পিন (PIN) ও এসএমএস-এ আসা ৬ সংখ্যার ভেরিফিকেশন কোড (OTP) জানতে চায় না। তাই এসব তথ্য কেউ চাইলেই বুঝবেন সে প্রতারক। কেউ কল করে এমন গোপন তথ্য চাইলেই কথা না বাড়িয়ে কলটি কেটে দিন। এছাড়াও, প্রতারক ফোন করে বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স চেক করে দেখার জন্য বলতে পারে অথবা কলে থাকা অবস্থায় আপনার পিন (PIN), ম্যাসেজে আসা ভেরিফিকেশন কোড (OTP) ডায়াল করতে বলতে পারে। ফোনে থাকা অবস্থায় কখনোই আপনার পিন নাম্বার অথবা মেসেজে আসা ভেরিফিকেশন কোড ডায়াল করা যাবেনা। আবার, আপনার পিন সরাসরি জানতে না চেয়ে তা কোনো সংখ্যা দিয়ে যোগ/বিয়োগ, গুণ/ভাগ করে সেই সংখ্যাটি জানতে চাইতে পারে। এমন ঘটনার সম্মুখীন হলে কথা না বাড়িয়ে ফোনটি কেটে দিন এবং সাথে সাথে ১৬২৪৭ নাম্বারে কল করে বিকাশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন। এছাড়াও নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে পারলে আপনি কখনোই প্রতারণার শিকার হবেননা।

কোনো অবস্থাতেই কারো কথা অনুযায়ী কলে থাকা অবস্থায় বিকাশ পিন (PIN) বা মেসেজে আসা ভেরিফিকেশন কোড (OTP) ডায়াল করবেন না। কেউ পিন সরাসরি জানতে না চেয়ে তা কোনো সংখ্যা দিয়ে গুণ/ভাগ, যোগ/বিয়োগ করতে বললে তা থেকে বিরত থাকুন। কলে থাকা অবস্থায় কেউ বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স চেক করতে বললে তা করা থেকে বিরত থাকুন। নতুন বিকাশ এজেন্টদের ডিএসও পরিচয়ে ফোন দিয়ে এজেন্ট ফোনে কিছু ডায়াল করতে অথবা টাকা লেনদেন করতে বললে সাথে সাথে ফোনটি কেটে দিন। এবং, আপনার মোবাইলে সেভ থাকা ডিএসও নাম্বারে ফোন দিয়ে বিষয়টি তাকে অবহিত করুন।
ফোন বা ইমো/মেসেঞ্জার-এ কল করে বা মেসেজ দিয়ে পরিচিত/অপরিচিত কেউ তৎক্ষণাৎ টাকা পাঠাতে বললে আগে তা যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে নিন। বিকাশ-এর ভেরিফাইড অনলাইন পেইজ বা ওয়েবসাইট ব্যতীত বিকাশ-এর কোনো প্রমোশনাল অফার বা পোস্ট দেখলে হেল্পলাইনে (16247) ফোন দিয়ে আগে তথ্যের সত্যতা যাচাই করে নিন।

সচেতনতাই প্রতারণা প্রতিরোধের সর্বপ্রথম ও সর্বোত্তম হাতিয়ার। / চুরি হওয়ার আগে চুরির ধরণ বা কৌশলগুলো জেনে নিতে হবে

তাই কিছু কথা সবসময় মনে রাখবেন, তাহলেই আপনার টাকা নিরাপদ থাকবে- যে যাই বলুক, কখনোই বিকাশ একাউন্টের ওটিপি/পিন বলবো না, টাইপ করবো না। অফিসার সেজে ভয়/লোভ দেখালে কল কেটে দিবো। এজেন্ট সেজে ভুলে টাকা এসেছে বললে কল কেটে দিবো। ফোন করে অনুদান বা ভাতা দিতে চাইলে কল কেটে দিবো। অনলাইনে ভাতা/উপহার-এর লিংক-এ যেতে বললে শুনবো না।

লোভ, ভয় অথবা ভুল বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে মোবাইলে অপরিচিত কাউকে নিজের টাকা বিকাশ করবেন না। প্রতারক বলতে পারে সে ভুলে আপনার মোবাইলে টাকা বিকাশ করেছে কিংবা বলতে পারে আপনি লটারি জিতেছেন বা নতুন চাকুরি পেয়েছেন। এছাড়াও বিকাশ কর্মকর্তা সেজে প্রতারক আপনাকে নতুন সেবা চালুর প্রস্তাব দিতে পারে কিংবা একাউন্ট বন্ধের ভীতি দেখাতে পারে। এসব কথা শুনে ফাঁদে পা দিবেন না। আগে তথ্য যাচাই করুন।

লোভ, ভয় অথবা ভুল বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে মোবাইলে অপরিচিত কাউকে নিজের টাকা বিকাশ করবেন না। প্রতারক বলতে পারে সে ভুলে আপনার মোবাইলে টাকা বিকাশ করেছে কিংবা বলতে পারে আপনি লটারি জিতেছেন বা নতুন চাকুরি পেয়েছেন। এছাড়াও বিকাশ কর্মকর্তা সেজে প্রতারক আপনাকে নতুন সেবা চালুর প্রস্তাব দিতে পারে কিংবা একাউন্ট বন্ধের ভীতি দেখাতে পারে। এসব কথা শুনে ফাঁদে পা দিবেন না। আগে তথ্য যাচাই করুন।

বিকাশ প্রতারণ পদ্ধতিগুলো । চুরি ধরনগুলো জেনে রাখুন তাতে করে আপনি ভয় পেয়ে উল্টাপাল্টা কিছু করবেন না

  1. বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে ভুয়া কল- প্রতারক আপনাকে নকল বিকাশ এজেন্ট বা গ্রাহক সেজে ফোন করে এবং বিকাশ-এ অভিযোগ করে অন্য বিকাশ একাউন্টের পরিবর্তে ভুলবশত আপনার একাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে বলে দাবি করে। প্রতারক আরো জানায় যে, ইতোমধ্যে সে বিকাশ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছে এবং বিকাশ-এর একজন অফিসার একাউন্টটি আনব্লক করে দেয়ার জন্য আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। তারপর ভুয়া বিকাশ প্রতিনিধি সেজে কেউ একাউন্ট আনব্লক করার অজুহাতে আপনাকে ফোন দিয়ে আপনার মেসেজে আসা ভেরিফিকেশন কোড (OTP) ও পিন (PIN) হাতিয়ে নিতে পারে এবং আপনার আর্থিক ক্ষতি করতে পারে।
  2. অনুদান/ভাতা/উপবৃত্তির ভুয়া কল বা মেসেজ- প্রতারক আপনাকে ভুয়া তথ্য যেমন: উপবৃত্তি, বয়স্ক ভাতা, সরকারি অনুদান, পল্লী বিদ্যুৎ সুবিধা পাবেন বলে মেসেজ দিয়ে কিছু নির্দিষ্ট নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করতে বলে অথবা সরাসরি কল করে। পরবর্তীতে আপনার একাউন্ট যাচাইয়ের জন্য মেসেজে আসা ভেরিফিকেশন কোড (OTP) ও আপনার বিকাশ পিন (PIN) প্রদান/ডায়াল করতে বলে। সাথে আপনাকে কোনো এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে নিজ নাম্বারে কিছু ক্যাশ ইন করতে বলে। প্ররোচিত হয়ে তাদের কথামতো কাজ করলেই আপনি প্রতারণার শিকার হয়ে যেতে পারেন।
  3. একাউন্ট আপডেট/তথ্য হালনাগাদ- প্রতারক বিকাশ প্রতিনিধি সেজে ফোন/মেসেজ দেয় এবং আপনাকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে প্ররোচিত করে (যেমন: নতুন সার্ভিস চালু করা, তথ্য হালনাগাদ) বা ভয় দেখিয়ে (যেমন: একাউন্ট তথ্য হালনাগাদ না করলে তা বন্ধ হয়ে যাবে) আপনার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় গোপনীয় তথ্য সংগ্রহ করে। আপনি যদি প্ররোচনায় পরে ওটিপি (OTP) এবং পিন (PIN) শেয়ার করেন, তখন আপনার একাউন্ট প্রতারকদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
  4. ইমো (IMO)/মেসেঞ্জার (Messenger)/হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) – প্রতারক আপনার পরিচিত কেউ সেজে ইমো/মেসেঞ্জার/হোয়াটসঅ্যাপ এ মেসেজ দিয়ে অথবা পরিচিত কারো ইমো (IMO)/মেসেঞ্জার (Messenger) একাউন্ট হ্যাক করে সেই একাউন্ট থেকে মেসেজ দিয়ে ভুয়া তথ্যের মাধ্যমে আপনাকে প্ররোচিত করে। তারপর আপনাকে তাদের দেয়া একটি বিকাশ নাম্বারে সেন্ড মানি/ক্যাশ ইন করার জন্য অনুরোধ করে। অনুরোধের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা যাচাই না করেই টাকা ক্যাশ ইন বা সেন্ড মানি করলে, আপনি প্রতারণার শিকার হবেন।
  5. দুর্ঘটনার ভুয়া সংবাদ – প্রতারকরা নিজেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে অথবা আত্মীয় বা পরিচিত ব্যক্তির কন্ঠ নকল করে আপনাকে ফোন দিতে পারে। তারপর তারা আপনার পরিচিত কারো দুর্ঘটনা/মৃত্যুর আকস্মিক কোনো খবর বা ভুয়া কোনো তথ্য দিয়ে আপনাকে মানসিকভাবে ব্ল্যাকমেইল করে তাৎক্ষণিক সহায়তা বা সাহায্যের জন্য টাকা সেন্ড মানি/ক্যাশ ইন করতে বলে। ঘটনার সত্যতা যাচাই না করেই টাকা পাঠালে, আপনি প্রতারণার শিকার হবেন।
  6. ভুয়া অফার/বিজ্ঞাপন – প্রতারক এসএমএস/কল/ফেসবুক পোস্ট/ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভুয়া চাকরি, বিকাশ বা অন্যান্য সংস্থার সেবা বা পণ্যের অফার, ভুয়া বিজ্ঞাপন ইত্যাদি দ্বারা প্ররোচিত করে এবং তার জন্য ফর্ম ফিল আপ, রেজিস্ট্রেশন ফি বা ট্যাক্স/ভ্যাট ফি অথবা অগ্রিম বাবদ গ্রাহকদের নির্দিষ্ট বিকাশ একাউন্টে অর্থ সেন্ড মানি/ক্যাশ আউট/পেমেন্ট করতে বলে। প্ররোচিত হয়ে আপনি তাদের ফাঁদে পা দিলে প্রতারিত হবেন।
  7. এজেন্ট ডিএসও মাস্কিং বা হেড অফিস কর্মকর্তা – প্রতারকরা বিকাশ-এর ডিএসও/এসআর নাম্বার মাস্ক করে অথবা বিকাশ হেড অফিস কর্মকর্তা সেজে বিকাশ এজেন্টদের কল করে এবং তাদেরকে বিভিন্ন অফারের প্রলোভন দেখায়। যেমন: এজেন্ট অ্যাপ সক্রিয় করে দেয়া/সেভিংস একাউন্ট খোলা/কমিশন বাড়ানো/পার্সোনাল একাউন্ট লিংক করা/পার্সোনাল একাউন্টের ক্যাশ আউট চার্জ কম করা/এজেন্ট ব্যানার/পোস্টার বিতরণ করা ইত্যাদি। অফারগুলো সক্রিয় করার জন্য এজেন্টকে বিকাশ ডায়াল অপশনে গিয়ে কিছু সংখ্যা ডায়াল করতে বলে অথবা ব্যক্তিগত নাম্বারে টাকা ক্যাশ ইন করতে বলে। ফলস্বরূপ, তারা প্রতারণার শিকার হয়।

চুরি বা অঘটন ঘটে গেলে কি করবেন?

আপনার যদি মনে হয় আপনি প্রতারণার শিকার হয়ে গেছেন, তাহলে প্রথমেই, বিকাশ হেল্পলাইন ১৬২৪৭-এ কল করে অথবা অন্যান্য গ্রাহক সেবার মাধ্যমে ব্যাপারটি বিকাশ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত অবহিত করুন। প্রতারণা সংঘটনের সময়কাল এবং যেভাবে আপনাকে প্রতারিত করা হয়েছে সেই ঘটনা বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন। আপনার বিকাশ একাউন্টের পিনটি (PIN) দ্রুত পরিবর্তন করে ফেলুন। পিন পরিবর্তনের সময় নতুন পিনটি কারো সাথে শেয়ার করবেননা। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আপনি বিকাশ হেল্পলাইন ১৬২৪৭ এ কল করে অথবা অন্যান্য গ্রাহক সেবার মাধ্যমে সহায়তা নিতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *