শিশুর বয়স অনুযায়ী শিশুর খাদ্য তালিকা ২০২৩ । শিশুকে ইচ্ছামত খাবার প্রদান করা যাবে না

একজন শিশুকে কি কি খাওয়াবেন তা নির্ভর করবে খাদ্য তালিকায় কি দেওয়া আছে তার উপর-খাদ্য তালিকা মোতাবেক শিশুকে খাবার দিতে হবে – শিশুর বয়স অনুযায়ী শিশুর খাদ্য তালিকা ২০২৩

২৪ মাস পর্যন্ত যে খাবার খাবে –শিশুর জন্য মায়ের দুধই সেরা। শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির সবটুকুই মায়ের দুধে থাকে। প্রসবের পরে প্রথমে হালকা হলুদ রঙের যে দুধ আসে সেটাই শালদুধ। নবজাতক শিশুর জন্য শাল দুধ খুবই জরুরি। শালদুধ খাওয়ালে শিশু নানারকম রোগের (নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদি) হাত থেকে রক্ষা পায়। শিশুর মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য মায়ের দুধ খুবই প্রয়োজনীয়।

মনে রাখতে হবে-জন্মের সাথে সাথে (১ ঘন্টার মধ্যে) শিশুকে মায়ের বুকের দুধ দিতে হবে ও শালদুধ খাওয়াতে হবে। শালদুধ শিশুর প্রথম টিকা হিসাবে কাজ করে জন্মের পরে শিশুর মুখে মধু, চিনির পানি, সরিষার তেল, মিছরির পানি বা বাইরের তরল বা অন্য কোনো খাবার জিনিস একেবারেই দেয়া যাবে না। মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময় মা ও শিশুর অবস্থান (পজিশন) ও শিশুর মুখ স্তনে ঠিকভাবে লাগানো (অ্যাটাচমেন্ট) এবং প্রয়োজনে যথাযথভাবে দুধ গেলে খাওয়ানো প্ৰয়োজন।

বুকের দুধ খাওয়ানো মা ও শিশুর মধ্যে বন্ধন দৃঢ় হয়। শিশুকে ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত বাড়তি খাবারের পাশাপাশি মায়ের দুধ খাওয়ানো অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। বুকের দুধ শিশুর জন্য নিরাপদ ও সঠিক খাবার। এটি শিশুকে পর্যাপ্ত পুষ্টি যোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিশ্চিত করে। জন্মের পর থেকে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়াতে হবে অন্য কোন কিছু খাওয়ানো যাবে না এমনকি একফোঁটা পানিও না। ৬ মাস পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত দিনে কমপক্ষে ৮ বার ও রাতে কমপক্ষে ৩ বার মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে।

জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত শিশু শুধুমাত্র বুকের দুধ পান করবে নাকি অন্য খাবারও খাবে? / শিশুর খাবার পুষ্টিবিদদের নির্ধারিত খাদ্য তালিকা অনুসারে নির্ধারিত হইবে।

শিশুর বেড়ে উঠার সাথে সাথে তার চাহিদা অনুযায়ী খাবারের ঘনত্ব বাড়াতে হবে। শিশুর খাবার তৈরির পূর্বে ও শিশুকে খাওয়ানোর আগে শিশুর যত্নকারীদের অবশ্যই সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ভালভাবে ধুতে হবে।

খাদ্য ও পুষ্টি সহায়িকা PDF Download

শিশু খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে কি কি মনে রাখতে হবে

  1. গর্ভাবস্থা থেকে জন্মের প্রথম দু’বছরে অপর্যাপ্ত পুষ্টি সারাজীবনের জন্য শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করেতে পারে।
  2. শিশুর সুস্বাস্থ্য ও সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন সুষম খাবার, যার মধ্যে থাকবে শর্করা, আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ লবণ বিশেষত ভিটামিন ‘এ’ ও আয়রণ
  3. শিশুর খাবারে যাতে কমপক্ষে চার ধরনের খাবার, যেমন: ভাত, ঘনডাল, সবুজ বা রঙিন শাক/ হলুদ সবজি এবং দিনে একবার একটি প্রাণীজ খাবার (মাছ/ডিম/মুরগির কলিজা/মাংস) থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে
  4. শিশুর খাবার রান্নার সময় পরিমাণমত তেল মেশাতে হবে (মাঝারি ২ চামচ)
  5. ০-৬ মাস বয়সী শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে
  6. ৬ মাস বয়সের পর অর্থাৎ ১৮১ দিন থেকে শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর বাড়তি খাবার খাওয়ানো শুরু করতে হবে

৬ মাস পরে কি যে কোন খাবার খাওয়ানো যাবে?

জন্মের পর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ালে শিশুর ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায় শিশুকে বোতলে দুধ খাওয়াবেন না। এত শিশুর পেটের অসুখসহ বিভিন্ন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। দুধের পরিমাণ বাড়াতে ঘনঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে, শিশু যতই মায়ের বুকের দুধ খেয়ে খালি করবে মায়ের বুকে তত বেশি দুধ আসবে শিশুর দুধ খাওয়া শেষ হলে শিশুকে শুইয়ে দিবেন না। কাঁধের উপর তুলে নিয়ে শিশুর পিঠে আস্তে আস্তে চাপড় দিয়ে ঢেকুর তোলাতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *