ইন্টারনেট দুনিয়া

স্মার্টফোন হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা করার ৫ টি উপায়

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন দিয়ে আমরা গেমিং, ব্যাংকিং, ফিনান্সিয়াল ট্রান্সলেশন, লাইভ ভিডিও কনফারেশন, ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং ডাটা শেয়ারিং ইত্যাদি  নানান ধরনের কাজ গুলো করে থাকি।যার কারনে, আমাদের ফোন গুলোতে প্রতিনিয়ত আমাদের ব্যক্তিগত এবং সংবেদনশীল অনেক ধরনের তথ্য গুলো জমা হয়েযাচ্ছে আমাদের অজান্তেই ।

অনেকের ধারনা যে স্মার্টফোন হ্যাক করা যায়না কিন্তু এ ধারনা একদমই ভুল। তাই বোকার রাজ্যে বাস না করে আমাদের সচেতন হয়ে ফোন চালাতে হবে এবং যেসব বিষয় লক্ষ্য করলে ফোন হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায় চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু তথ্য ।

আপনি কি ইন্সটল করছেন সে বিষয় খেয়াল রাখুন-

নিত্য নতুন প্রয়োজনে আমরা বিভিন্ন রকমের অ্যাপ বা সফটওয়্যার ইন্সটল করি ।আর এই ইন্সটল এর সময় আপনি খেয়াল করে দেখবেন যে বিভিন্ন ধরনের পারমিশন চাওয়া হয় আমাদের কাছে থেকে। এই গুলোর মধ্যে মূলত camera permission, file read করা, microphone access  সহ আরও  নানা ধরনের জিনিস থাকে। একবার আপনি পারমিশন বা  access এর মতো অপসন গুলো ক্লিক করে অনুমতি দিয়ে দেওয়ার পর, অ্যাপ গুলো মোবাইলের মধ্যে থাকা file গুলোতে সরাসরি দেখতে ও এক্সেস করতে পারবে, ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোন এক্সেস করতে পারবে।

সুতরাং কখনও কোনো অ্যাপ ইন্সটল করার সময় ভাল করে জেনে বুঝে ইন্সটল করুন এবং পারমিশন দিন যাতে করে আপনার প্রিয় জিনিস গুলো আপনার অজান্তেই অন্য কেউ না পেয়ে যায়। 

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যব্যহার করুন-

প্রয়োজনের খ্যাতিরে আমরা আমাদের স্মার্টফোনে বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে থাকি। আর এসব অ্যাকাউন্ট এর জন্য দরকার হয় আমাদের অনেক তথ্য এবং সব শেষে একটি পাসওয়ার্ড । মূলত এই পাসওয়ার্ড এর জন্য যে কেউ আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহজে পেতে পারেনা। তাই পাসওয়ার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে হতে হবে সর্তক। যেনতেন পাসওয়ার্ড দিলে সহজেই হ্যাক হতে পারে আপনার তথ্য গুলো তাই শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে যেমন পাসওয়ার্ড একটু বড় হলে খুব ভাল হয়ে এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে যা ডিকশনারিতে নেই অর্থাৎ এক্ষেত্রে সংখ্যা অক্ষর বিভিন্ন ধরনের সেইম্বল ইত্যাদির সংমিশ্রনে বানাতে হবে তবেই হবে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড । এ ধরনের পাসওয়ার্ড সহজে কেউ হ্যাক করতে সক্ষম হয়না তাই কিছুটা ভরসা করা যায় তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে । 

সফটওয়্যার আপডেট-

প্রতিদিন আপনার মোবাইলের সিস্টেম সফটওয়্যারটি আপডেট করার বিষয়টিতে আপনার নজর রাখতে হবে। সফটওয়্যার আপডেট আপনার মোবাইলের সাময়িক সমস্যা গুলোকে সহজেই দূর করে দিবে। এজন্য মোবাইলে কে নিরাপদ রাখতে নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট প্রয়োজন । মোবাইল ফোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মোবাইলর operating system  এবং apps গুলো  প্রতিনিয়ত আপডেটেড রাখাটা অত্যন্ত জরুরি।

আর এজন্য software updates-এর notification প্রতি আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে, আপনার মোবাইলে কোনো ধরনের software updates-এর notification চলে আসলে, সেটাকে সাথে সাথে install করে ফেলতে হবে।software updates  install করার মাধ্যমে আপনার মোবাইলের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা গুলো দূর হয়ে যাবে সহজেই । 

ওপেন  ওয়াইফাই ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে-  

যেকোন জায়গাতে কোনো ওপেন  ওয়াইফাই যা কিনা পাসওয়ার্ড ছাড়া সংযোগ হয় আমরা খুব খুশি হয়ে সেটিতে ব্যবহার করে ফেলি , এবং দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমরা একবারও ভাবিনা এটি আমাদের মোবাইলের জন্য আমাদের ডাটা গুলোর জন্য  কতটা ক্ষতিকর । আমরা অনেকেই জানিনা যে, হ্যাকারদের জন্য সব চেয়ে সহজ রাস্তা এই ধরণের ওপেন ওয়াইফাই গুলো ব্যবহার করে মোবাইল ও ল্যাপটপ হ্যাকিং করা । এজন্য আমাদের উচিত, যেকোনো জায়গাতে ওপেন ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক গুলো ব্যবহার করা থেকে নিজেদের বিরত রাখা। আর যদি কোনো কারনে ব্যবহার করতে হয়, তাহলে ভুলেও প্রাইভেত কার্যকলাপ গুলো, যেমন অনলাইন ব্যাঙ্কিং বা অনলাইনে কেনাকাটা ইত্যাদি  করবেননা। ওপেন ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক গুলো ব্যবহারের কারনে হ্যাকাররা খুব সহজেই আপনার অনলাইনে করা প্রত্যেক ক্রিয়াকলাপ গুলো দেখতে পারে। 

এজন্য, ওপেন ওয়াইফাই ব্যবহার করলে সাইবারগস্ট এর মতো  ভিপিএন গুলো  অবশ্যয় ব্যবহার করুন, এতে অনলাইন আকটিভিটি গুলো হ্যাকার সহজে ট্র্যাক করতে পারবেনা।

মোবাইল এন্টিভাইরাস অ্যাপ ব্যবহার করুন-

মোবাইল এন্টিভাইরাস অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনি আপনার মোবাইলকে ক্ষতিকারক সফ্টওয়্যার ও সম্ভাব্য সাইবার হামলা গুলো থেকে খুব সহজেই রক্ষা করতে পারবেন। মোবাইল এন্টিভাইরাস গুলো আমাদের মোবাইলে রিয়াল টাইম স্কানিং এর মাধ্যমে ভাইরাস ও সাইবার আক্রমণ গুলো খুব সহজ ভাবে সনাক্ত করে ফেলে। তাই, হ্যাকার এর মাধ্যমে বেশিরভাগ সাইবার হামলা গুলোর থেকে আমাদের নিজের মোবাইলকে বেশি নিরাপদ রাখার জন্য এন্টিভাইরাস অ্যাপ  ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। আপনি চাইলে খুব সহজে  সফটওয়্যার টি গুগল প্লে স্টোর থেকে ভালো ও জনপ্রিয়  এন্টিভাইরাস অ্যাপ গুলো আপনার স্মার্ট ফোনে ফ্রীতে ডাউনলোড করে তা ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।

এছাড়াও মোবাইলে অ্যাপ লক, সন্দেহজনক  কোনো ইমেল এবং লিংক, ব্লুটুথ এসব ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সর্তক হয়ে আপনার মোবাইল হ্যাক হওয়া হতে রক্ষা করতে পারবেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *