ডায়াবেটিস ঔষুধ সেবনের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম উপায় ২০২৩ । ডায়াবেটিস কেন হয়?
ডায়বেটিস বড়লোকি লোক গরীবের হবে না-ব্যাপারটি এমন নয়-আপনি যদি শর্করাজাতীয় খাবার বেশি খান এবং সে অনুযায়ী ক্যালরি বার্ণ না করেন তবে আপনিও এর আওতামুক্ত নয় – ডায়াবেটিস ঔষুধ সেবনের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম উপায় ২০২৩
কোন ধরনের ডায়াবেটিস সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য? – বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর ৯৭ শতাংশই টাইপ-২। এ ধরনের ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য। পদক্ষেপ নিলে এ রোগকে অনেক বিলম্বিত করা যায়। এ জন্য বড় কোনো আয়োজনের প্রয়োজন নেই। রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের সহজ কিছু টিপস আছে। নিয়মিত এগুলো মেনে চললে নিজেরাই শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
ডায়াবেটিস হল একটি রোগ যা শরীরের রক্তে গ্লুকোজ হাই লেভেল থাকে এবং একজন ব্যক্তির শরীর ইনসুলিন উৎপাদন করতে না পারে বা প্রভাবিত হয়। ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ হল শরীরে ইনসুলিন প্রণালীর সমস্যা। ডায়াবেটিস হল দুই প্রকার – টাইপ 1 এবং টাইপ 2। টাইপ 1 ডায়াবেটিসে, শরীর ইনসুলিন উৎপাদন করতে অক্ষম হয় যা শরীর রক্তে গ্লুকোজ একুশে না করে । টাইপ 2 ডায়াবেটিসে, শরীর ইনসুলিন উৎপাদন করা যায়, কিন্তু শরীর ইনসুলিন সম্পর্কিত সমস্যার কারণে শরীর প্রভাবিত হয়। টাইপ 2 ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে শরীরের ওজন বৃদ্ধি, অলসতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও অল্প শারীরিক কার্যক্রম সম্পর্কিত অন্যান্য কারণ।
পরিবারের ইতিহাস কি বলে? পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস। ডায়াবেটিসের পরিবারে থাকা ব্যক্তিদের ঝুঁকি ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকির চেয়ে বেশি থাকে। ওজন বৃদ্ধি পাওয়া ওজন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে এবং এটি আমাদের শরীরে ইনসুলিন কাজ করতে দ্বিগুণ প্রয়োজন করতে পারে। খাবারে বেশি বা নির্মম খাদ্য খেলে বা সমস্যাপূর্ণ জীবনযাপন করলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি হয়। সিগারেট ধূমপান ও নিকোটিন ব্যবহার। ধূমপান করা এবং নিকোটিন ব্যবহার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
ডায়বেটিসের অন্যতম কারণ অলসতা এবং পরিশ্রমহীন জীবনযাপন / আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের শারিরিক পরিশ্রম না করার কারণে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে
ডায়বেটিস কি চিরতরে নিরাময়যোগ্য রোগ? না। এটি কোন ঔষুধ বা কোন চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করা যায় না। তবে ডায়বেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।
Caption: Source of information
ডায়াবেটিস চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ করাই বাঞ্ছনীয় । অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম (স্ট্রোক নিউরোসার্জন) যা বলেছেন
- প্রতি বেলার খাবার খেতে হবে সময়মতো।
- কী পরিমাণ খাওয়া হচ্ছে, এটাও গুরুত্বপূর্ণ। তৈরি খাবার বেশি পরিমাণে না খেয়ে অল্প অল্প পরিমাণেও তো খাওয়া যায়। চিকিৎসক বললেন, ভাত না খেয়ে রুটি খেতে। এখন ভারী ভারী ছয়টা রুটি খেলে তো আর কাজ হলো না। বরং উল্টো ফল হবে।
- আঁশযুক্ত গোটা শস্য খাওয়ার প্রবণতা বাড়াতে হবে।। ময়দার রুটি আর মিলে ছাঁটা চালের বদলে লাল আটার রুটি বা ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত খেলে ভালো। গোল আলু, যতটা পারা যায় কম খেতে হবে। আলু খেতে হলে অবশ্যই তা ভাত বা রুটি ইত্যাদির পরিবর্তে হবে, সবজি বা শাকের বিকল্প হিসেবে নয়।
- অতিরিক্ত লবণ ও চর্বিজাতীয় খাবার পরিহার করুন। প্রতিদিন কিছু পরিমাণ শাকসবজি ও ফলমূল খান।
- ফাস্ট ফুড, কোমল পানীয় পরিহার করুন। প্রতিদিন পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ আর্সেনিকমুক্ত পানি পান
করুন। - বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে পরিবেশিত অস্বাস্থ্যকর খাদ্য বর্জনীয় |
- নিয়মিত শরীরকে সচল রাখতে হবে। হাঁটা উত্তম উদাহরণ হতে পারে।
- একটানা অধিক সময় বসে কাজ করবেন না। কম্পিউটার ব্যবহার ও কাজের ফাঁকে উঠে দাঁড়ান। একটু পায়চারি করুন ও গেম খেলা কমিয়ে দিন। টিভি দেখতে দেখতে চিপস খাবেন না | বেশি ক্ষুধার্ত হলে শসা খান |
- ধূমপান বর্জন করুন।
- রক্তের গ্লুকোজ, লিপিড, রক্তচাপ ও ওজন অবশ্যই লক্ষ্যমাত্রায় রাখতে হবে। নিয়মিত
ডায়াবেটিস পরীক্ষা করুন। ডায়াবেটিসের রোগীরা ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের (এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট) কাছে চিকিৎসা নিন। ওষুধ, ব্যায়াম, খাদ্য গ্রহণ তথা সার্বিক জীবনযাপন-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট এবং বিজ্ঞানসম্মত উপদেশ (যা শুধু আপনার জন্য প্রযোজ্য) মেনে চলুন।
কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না?
বিষয়টি এমন নয়। ডায়াবেটিস রোগটি খাদ্যাবাস এবং জীবন যাপনের ধরনের উপর নির্ভর করে সৃষ্টি হয়।ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে খেলাধুলা একটি উত্তম উপায়। খেলাধুলা করলে আপনি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন এবং ইস্টেবলিশ করতে পারবেন যে আপনার শরীর নিয়মিত ওজন লস এবং নিয়মিত পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদন করছে। আপনি স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়ার উপর লক্ষ্য করতে পারেন, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানোর জন্য সুপারিশকৃত। কিছু উদাহরণ হল- রানিং, ওয়াকিং, স্কোয়াশ, টেনিস, বাস্কেটবল এবং ফুটবল এমন কিছু খেলাধুলা যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। উঠানো-বসানো, সিট-আপ এবং কেজেল প্রাণায়াম এমন কিছু সাধারণ ব্যায়াম যা আপনার শরীরে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
ডায়াবেটিস হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যেমন সেল-মণ্ডল রোগ, ওজনের বৃদ্ধি, নিয়মিত খাবার খাওয়ার সমস্যা, পরিবারে ডায়াবেটিস রোগী থাকা ইত্যাদি। যে কেউ ডায়াবেটিস হয় না, তাদের শরীর খুব সহজেই উপার্জন করা গ্লুকোজকে উপযুক্ত পরিমাণে রক্ষা করতে সক্ষম। আপনি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায়, যার মাধ্যমে আপনি আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারেন- নিয়মিত ব্যায়াম করা। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উত্তম। সম্পূর্ণ খাদ্যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া। সকল খাদ্য উপাদান সঠিক পরিমাণে নেওয়া উত্তম। ওজন নিয়ন্ত্রণ করা। আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করা উত্তম। নিয়মিত চেকআপ করা। নিয়মিতভাবে আপনার চিকিত্সকে দেখানো।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা ২০২৩
ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার তালিকা একটি ব্যক্তিগত বিষয় যা আপনার চিকিত্সকের নির্দেশনা মেনে চলা উচিত। তবে, সাধারণত ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার তালিকা নিম্নলিখিত জিনিসগুলি থাকে-
খাদ্য ক্যাটাগরি | খাদ্যাদানের উদাহরণ |
---|---|
সবজি ও ফল | শাকসবজি, ফলমূল, কমলা, আম, পেঁপে, লেবু, কমলা, আমরা ইত্যাদি। |
প্রোটিন | মাছ, মাংস, ডাল, বিফ, চিকেন, টার্কি ইত্যাদি। |
কার্বোহাইড্রেট | পোলাও, চাল, রুটি, রোটি, নান, ডাল ইত্যাদি। |
ফ্যাট ও তেল | মাখন, তেল, ময়দা, ক্রিম, পিজ্জা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস, কেক, কুকিজ, চকলেট, আইসক্রিম, রসমালাই ইত্যাদি। |
নির্দিষ্ট সরঞ্জামগুলি | মিষ্টি, চিনি, শর্করা, রস, সোডা ইত্যাদি। |