সিলেটের ঐতিহাসিক ভ্রমণের দর্শনীয় স্থান যা সিলেট সুনাম ঐতিহ্য ধরে রাখছে। ভ্রমণের দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি ?

সিলেটের ঐতিহাসিক ভ্রমণের দর্শনীয় স্থান  গুলো সম্পর্কে জেনে নেই । সিলেট কে লন্ডনের শহর বলা হয়

১. জাফলং

জাফলং, বাংলাদেশের সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার অন্তর্গত, একটি পর্যটনস্থল। জাফলং, সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত, এবং এখানে পাহাড় আর নদীর অপূর্ব সম্মিলন বলে এই এলাকা বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থল হিসেবে পরিচিত। পর্যটনের সাথে জাফলং পাথরের জন্যও বিখ্যাত। শ্রমজীবি মানুষেরা পাথরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে সেই বহু বছর যাবত৷

জাফলং প্রকৃতির কন্যা হিসাবে পরিচিত। সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে জাফলং সবার পছন্দ। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা প্রকৃতির দানে রুপের পসরা সাজিয়ে আছে জাফলং। পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ পানির ধারা, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, উঁচু উঁচু পাহাড়ে সাদা মেঘের খেলা জাফলংকে করেছে অনন্য। একেক ঋতুতে জাফলং একেক রকম রুপের প্রকাশ ঘটায়, যা পর্যটকদেরকে ভ্রমণের জন্য সারাবছরই আগ্রহী করে রাখে।

২. বিছানাকান্দি

বিছানাকান্দি আমার দেখা সিলেট এর আন্যতম সুন্দর জায়গা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তম ইউনিয়নে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অবস্থিত একটি গ্রামের নাম বিছানাকান্দি। বাগান এবং পাহাড়ের নজরকাড়া সৌন্দর্যের মাঝে অবস্থিত প্রকৃতির এই অপরূপ লীলাভূমির উভয় প্রান্ত থেকে খাসি পাহাড় এসে যুক্ত হয়েছে।এখানে ঝর্ণার পাশাপাশি বর্ষাকালে কালো মেঘ পাহাড়গুলোকে আচ্ছাদিত করে ফেলে।

যেভাবে যাবেন বিছানাকান্দি

রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সর্বপ্রথম আপনাকে সিলেট শহরে আসতে হবে। সিলেট শহরে টুরিস্টদের থাকার জন্য অনেক হোটেল রয়েছে। পছন্দ অনুযায়ী রুম ভাড়া করতে পারেন। নিরাপত্তাও ভালো। বিছানাকান্দি যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে নগরীর আম্বরখানা পয়েন্ট যেতে হবে। সেখান থেকে সিএনজি ভাড়া করে চলে যাবেন হাদারপার বাজার। সিএনজি হাদারঘাট পর্যন্ত রিজার্ভ করে গেলে ভালো হয়। পাঁচজন মিলে ৮০০-১০০০ টাকায় সাধারণত ভাড়া নেয়া হয়। তবে মানুষ কম থাকলে ২২০ টাকা জনপ্রতিও যাওয়া যায়।প্রায় ৪০-৫০ মিনিট লাগবে বিছানাকান্দি পৌঁছাতে,পথিমধ্যে গ্রামের দৃশ্য আর দূরের পাহাড় সত্যিই আপনাকে মুগ্ধ করবে।

হাদারপার বাজার থেকেই বিছানাকান্দি যাওয়ার নৌকা পাওয়া যায়। হাদারপার বাজার থেকে নৌকা রিজার্ভ করে বিছানাকান্দি যেতে হবে,শুধু বিছানাকান্দি গেলে ভাড়া নিবে ১৫০০-২০০০ বিছানাকান্দিপাংথুমাই রিজার্ভ ২০০০- ৩০০০ নিবে।

৩. রাতারগুল সিলেট ভ্রমণ

রাতারগুল সিলেট ভ্রমণ করলে আপনি একটি অদ্ভুত প্রাকৃতিক উদ্যানে যাবেন। রাতারগুল বনপ্রান্ত বা অন্যান্য নামে পরিচিত একটি উদ্যান যা সিলেট শহরের নিকটে অবস্থিত। এটি বিভিন্ন ধরনের গাছ, ফুল, পাখি এবং প্রাকৃতিক আকর্ষণীয় উপস্থান দেখায়।

রাতারগুল সিলেটে আপনি ঘুরে বেড়াতে পারেন গভীর বনমালিন্য সমৃদ্ধ অঞ্চলে। এখানে আপনি ঘন বন, ছোট ঝর্ণা, নদীর কিনারায় মনোরম স্থলের সাথে সম্পর্ক যুক্ত হতে পারেন। আপনি রাতারগুল সিলেটে মৌগুরী ঝর্ণা, খাসিয়াচড়ি ঝর্ণা, কাটালতলা ঝর্ণা, কাঞ্চনজংলা ঝর্ণা এবং বিভিন্ন সুন্দর পাহাড় উপভোগ করতে পারেন। রাতারগুল সিলেটে অবস্থিত নদীপাটগুলি আপনাকে প্রাকৃতিক শান্তি এবং প্রকৃতির সাথে সংযোগ করতে সহায়তা করবে।

৪. মালনিছড়া চা বাগান সিলেট

সিলেট জেলার মালনিছড়া উপজেলায় অবস্থিত মালনিছড়া চা বাগানগুলো সিলেটের মধ্যেই অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের প্রধান চা উৎপাদন অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ চা বাগান। এই বাগানগুলো প্রাকৃতিক আবহাওয়ায় উন্নত হলেও বিশেষ বৃষ্টি ও স্বাগতমতার সঙ্গে সীমান্তভুক্ত হলে চা কাটা হয়। মালনিছড়া চা বাগান সিলেট প্রধানত  চা উৎপাদনের জন্য পরিচিত। এখানে চা উৎপাদন প্রক্রিয়া, চা পাতা সংগ্রহ এবং চা পরিবেশে উদ্যানসহ আন্তর্জাতিক স্তরে পর্যটকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। মালনিছড়া চা বাগানগুলো ছয় মিল বরার চারপাশে প্রসারিত হয়েছে এবং এলাকাটি প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যময় হয়েছে। যদি আপনি মালনিছড়া চা বাগানে যাত্রা করতে চান, তবে আপনি প্রথমে সিলেট শহর থেকে।

৫.লাক্ষাতুড়া চা বাগান সিলেট

লাক্ষাতুড়া চা বাগান সিলেট অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ চা বাগান। এটি বাংলাদেশের সিলেট জেলার নগরীগুলোর একটিতে অবস্থিত। লাক্ষাতুড়া চা বাগানটি দাউদকান্দি উপজেলায় অবস্থিত যা হতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে সিলেট শহর থেকে।

লাক্ষাতুড়া চা বাগানটি প্রায় ১৭০ একর জমির উপর অবস্থিত এবং এটি সুন্দরবন পর্বতমালার নিচে অবস্থিত। বাগানটিতে বিভিন্ন জাতের চা গাছ চাষ করা হয়, যেমন অসম চা, দার্জিলিং চা, কিমানি চা ইত্যাদি। এখানে চা উৎপাদনের প্রক্রিয়া দেখা যায় এবং পর্যটকদের জন্য ভ্রমনের সুযোগ রয়েছে।

৬. হযরত শাহজালাল মাজার সিলেট 

হযরত শাহজালাল মাজার সিলেট বাংলাদেশের সিলেট শহরে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ ইসলামিক মাজার। হযরত শাহজালাল মাজার বাংলাদেশের সিলেট শহরে অবস্থিত একটি প্রমুখ ইসলামিক পিতামহ মাজার। এটি হযরত শাহজালাল যামানী রহ নামক একজন সুফি ও ইসলামিক আলেমের মাজার। শাহজালাল মাজারটি ইসলামিক ধর্মীয় আশ্রয়স্থল হিসাবে পরিচিত এবং দেশের একটি প্রমুখ পিতৃস্থান হিসাবে বিখ্যাত। হযরত শাহজালাল মাজারটি মুক্তসরে সিলেট শহরের মিরজানগর উপজেলায় অবস্থিত। এটি একটি মোসলেম মাজার এবং প্রতিবছর অন্যতম বহুল ভ্রমণ করা হয় এই অঞ্চলে। বাংলাদেশের সবচেয়ে পবিত্র মাজার হিসাবে বিখ্যাত হয়েছে শাহজালাল মাজার। মাজারে রয়েছে শাহজালাল যামানী রহ এর সমাধি স্থান, যেখানে তাঁর মাজারে পূজা ও আনন্দের অন্যতম গ্রহণ করা হয়। এটি মুক্তসরে সিলেট শহরের সিলেট সদর উপজেলা অন্তর্গত সামগ্রিকভাবে অবস্থিত। এটি ইসলামিক ধর্মীয় আশ্রয়স্থল হিসাবে পরিচিত এবং মাসজিদ ও মাজারের মধ্যে একটি সমন্বয়পূর্ণ মাঝরাস্থল হিসাবে পরিচিত।

হযরত শাহজালাল মাজারটি বাংলাদেশের সবচেয়ে পবিত্র মাজারের একটি বলে ধারণা করা হয়। এটি ইসলামিক মিশর শ্রমিক লীগ পরিচালিত একটি প্রকল্প ছিল এবং এর নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৯৮২ সালে। মাজারের উচ্চতা প্রায় ৮৫ ফুট এবং সেইসাথে মাঝার উচ্চতা ১০২ ফুট। মাঝারে একটি শতাব্দী উপলক্ষ্যে নির্মিত আলপিন শৃঙ্গ রয়েছে। মাজারে বড় একটি দরজা আছে যা একটি দলিল মাটি দ্বারা সূচিত।

৭. হযরত শাহ পরানের মাজার সিলেট 

হযরত শাহ পরানের মাজার সিলেট, বাংলাদেশের সিলেট শহরে অবস্থিত একটি প্রমিনেন্ট মাজার। এটি সিলেট শহরের বাংলাদেশ চৌদ্দ গ্রাম এলাকায় অবস্থিত। এটি হযরত শাহ পরানের মাজার হিসেবে পরিচিত।

হযরত শাহ পরান হলেন মুসলিম পীর আলেম এবং সূফি ওয়ালী ব্যক্তি। তিনি প্রধানত কাদিরগঞ্জ জেলা, বাংলাদেশের সিলেট শহরের সন্তান। তাঁর মাজারটি তাঁর জন্মস্থান থেকে সংস্কারক্ষণ করে আছে। এটি একটি মাসজিদ বিল্ডিং, কলাম, গোশতি ঘর এবং অন্যান্য স্থাপনাগুলির সাথে মিশে আছে। প্রতিবছর বৃহস্পতিবার বা সোমবার মাজারে একটি উপবাস দিন আয়োজিত হয়, যেখানে বৃক্ষস্থলীর মধ্যে তৈরি হয় একটি পীর জামে মসজিদ।

হযরত শাহ পরানের মাজারটি সিলেট শহরের ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী একটি পর্যটন স্পট হিসেবে থাকে।

এছাড়া সিলেটে জেলার অন্যান্য ভ্রমণের দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে সে গুলো হল

১.আলি আমজাদের ঘড়ি

২. হাছন রাজা যাদুঘর

৩. কীন ব্রীজ

৪. ভোলাগন্জ সাদা পাথর

৫. সংগ্রামপুঞ্জী মায়াবী ঝর্ণা (যদি পানি থাকে)

৬.লালাখাল

৭. ডিবির হাওর

৮. তামাবিল ( ভারত বাংলাদেশ) সিমান্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *