সঞ্চয়পত্র নতুন নিয়ম ২০২২। অসত্য তথ্য দিলে জেল-জরিমানা

অসত্য তথ্য দিয়ে জাতীয় সঞ্চয়পত্র ক্রয় করলে সর্বোচ্চ ০৬ মাসের জেল ও এক লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রেখে সংসদে নতুন খসড়া আইন পাস হয়েছে।অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত বৃহস্পতিবার সরকারি ঋণ বিল ২০২২ জাতীয় সংসদে পাসের জন্য  প্রস্তাব করলে পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর মীমাংসা করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

অসত্য তথ্য দিলে সর্বোচ্চ ০৬ মাসের জেল অথবা সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা জরিমানা হবে

নতুন এ আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি নিজের অথবা কারও পক্ষে সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যু করা সার্টিফিকেটের উপাধি অর্জনের জন্য অসত্য তথ্য দিলে সর্বোচ্চ ০৬ মাসের জেল অথবা সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা জরিমানা হবে।

বর্তমান আইনে নির্দৃষ্ট কোনো জরিমানা করা ছিল না

বর্তমান আইনে নির্দৃষ্ট কোনো জরিমানা করা ছিল না। ১৯৪৪ সালের এ সংক্রান্ত আইন বাতিল করে নতুন করে প্রণয়নের জন্য বিলটি গঠন করা হয়।

সরকারের ঋণ গ্রহণ পদ্ধতিকে আরও আধুনিকীকরণ  করার উদ্দেশ্যে আইনটি পাস করা হয়েছে।

সংস্কার করে ‘সরকারি ঋণ বিল ২০২২’ স্বীকৃতি

গত বছরের ১৬ নভেম্বর সরকারি ঋণ বিল ২০২১ সংসদে উত্থাপন অর্থমন্ত্রী। পরে তা যাচাই-বাছাই করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটি বিলের নাম সংস্কার করে ‘সরকারি ঋণ বিল ২০২২’ স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার সম্মেলনে এটির ‘সরকারি ঋণ আইন, ২০২১’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

আরও বিস্তৃত করতে ৪০টি বিধান রয়েছে

নতুন এ আইনে টেকসই ঋণ নীতি এবং পরিকল্পনা গঠন, ঋণ কৌশলপত্র প্রস্তুত, ঋণের ঝুঁকি নির্ণয় ও সরকারের দায়ের হিসাবকে আরও বিস্তৃত করতে ৪০টি ধার রয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অভিযোগ ব্যতীত কোনো আদালত অসত্য তথ্য সম্পর্কে সংঘটিত অপরাধ আমলে নিতে পারবে না।

কোনো সরকারি সিকিউরিটি অথবা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের সার্টিফিকেটের মেয়াদ পূর্তির পরে আসল এবং মুনাফা দিয়ে দেওয়া হলে এ বিষয়ে সরকারের আর কোনো দায়িত্ব  থাকবে না।

সিকিউরিটির বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন

সরকারি সিকিউরিটির অধিকারী কোনো প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হলে অথবা অবসায়ন হলে ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিরূপিত প্রশাসক সিকিউরিটির বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে বিধান রাখা হয়েছে।

কোনো ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান তার সরকারি সিকিউরিটি বিধান মেনে হস্তান্তর করার পরে ওই ব্যক্তিকে সিকিউরিটির মূল অথবা মুনাফার বিষয়ে দোষারোপ করা যাবে না।

আইনে সরকার বাজেট ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে অর্থায়ন অথবা অন্য কোনো লক্ষ্য সরকারের দেশি অথবা বিদেশি মুদ্রায় নেওয়া সুদ বা মুনাফা সংযুক্ত অথবা সুদ বা মুনাফা ব্যাতিত যে কোনো প্রকারের ঋণ এবং বিনিয়োগ আদায় করতে পারবে।

সাধারণ মানুষের কাছ হতে সরকার যে ঋণ গ্রহণ করবে, তার উপযুক্ত গ্যারান্টি এই বিলের মাধ্যমে থাকবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিলে সরকারি ঋণ অফিসগুলোর করণীয় ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। শরিয়াহ ভিত্তিক সরকারি সিকিউরিটি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিধান রাখা হয়েছে।

স্বাভাবিক আমানত ব্যবস্থার পাশাপাশি শরিয়া ভিত্তিক আমান্ত ব্যবস্থা ‘সুকুক’ নামে শুরু করা ‘বন্ডকেও’ এ আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা চালু করা হয়েছিল।

বিলটির লক্ষ্য এবং কারণ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, সময় উপযোগী  একটি ঋণ আইনের অধীনে বাংলাদেশে সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের জন্য অধিকতর আধুনিক প্রক্রিয়ায় ঋণ আদায়, টেকসই ঋণনীতি এবং ঋণ পরিকল্বপনা গঠন, ঋণ কৌশলপত্র তৈরি, ঋণের ঝুঁকি নির্ণয়, ঋণ বাজেট প্রস্তুতসহ সরকারের সরাসরি এবং পরক্ষ দায়িত্ব হিসাবায়নের পথ অধিক দীর্ঘায়ত হবে।

সূত্র: bdnews24.com

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *