সঞ্চয়পত্র ২০২২ । সঞ্চয়পত্র বিক্রয় হ্রাস ৮১ শতাংশ
বিভিন্ন শর্তের কারণে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রয় কমে ৮১ শতাংশের নিচে চলে এসেছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সবশেষ হালনাগাদ বিবরণীর মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৭ হাজার ১৮ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকার সঞ্চয়পত্র জমা অথবা বিক্রয় হয়েছে। এর মাঝে আসল টাকা এবং সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬২৫ কোটি ৩২ টাকা। সঞ্চয়পত্রের আসল টাকা এবং সুদ পরিশোধের পর এ খাতে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৯৩ কোটি ১১ লক্ষ টাকা।
সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রয় বা ঋণ হ্রাস
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে নিট বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় বর্তমান অর্থবছরে একই সময়ে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রয় বা ঋণ হ্রাস পেয়েছে এক হাজার ৭১১ কোটি টাকা যা শতকরা ৮১ শতাংশের বেশি।সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গানোর নিয়ম
আয়কর রিটার্নের সনদ বাধ্যতামূলক
খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়েছে সরকার। সব শেষ পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে আয়কর রিটার্নের সনদ বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে সরকার। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হ্রাস করা হয়। আবার ঘোষণার বাহিরে সঞ্চয়পত্র থাকলে জেল-জরিমানার নিয়ম রাখা হয়েছে। যার কারণে অনেকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমিয়েছেন।সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের নতুন নিয়ম
সঞ্চয়পত্রের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মুনাফার হার পরিবর্তন না করার প্রস্তাব
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে অভাব পূরণ করতে সঞ্চয়পত্র হতে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেবে বলে ঠিক করেছে সরকার। গত ৯ জুনে জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বর্তমান অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মুনাফার হার পরিবর্তন না করার প্রস্তাব করেন। পরে ৩০ জুন ঐ প্রস্তাবিত বাজেট পাস হয়।সঞ্চয়পত্র ফরম
জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এবং টিআইএন নম্বর প্রদান বাধ্যতামূলক
বাজেট ভাষনে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, অল্প-আয়ের লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য উচ্চ মুনাফা হারের সঞ্চয়পত্র কিনার ব্যবস্থা রাখা হলেও বেশি উচ্চ-আয়ের বিনিয়োগকারীরা এ স্কিমসমূহের সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছিল বেশি। যার ফলে আমরা ইতঃপূর্বে বিক্রি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন করেছিলাম। যার কারনে নির্ধারিত সীমার বেশি সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষমতা সীমিত হয়েছে। এছাড়াও, সঞ্চয়পত্র কিনার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এবং টিআইএন নম্বর প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
এদিকে সদ্য জারি করা জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর ও সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক হিসাবে ৫ লক্ষ টাকার অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ আইন, ২০২২ এর ৪৮ ধারা ঠিকঠাক পরিচালনা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্দেশনা মতে, এখন হতে যদি কোনো ব্যক্তি সঞ্চয়পত্রে পাঁচ লক্ষ টাকার অধিক বিনিয়োগ বা পোস্টাল সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট খুলতে চান, তবে তাকে সর্বশেষ বছরের আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।
সূত্র: সমকাল