অনলাইনে পাসপোর্ট করার নিয়ম এবং অনলাইনে পাসপোর্ট করার জন্য খরচ কত লাগে?
অনলাইনে পাসপোর্ট করার জন্য কি কি লাগে এবং কত টাকা খরচ হয়
১. পাসপোর্ট অনলাইনে করার নিয়ম ও প্রক্রিয়া
পাসপোর্ট অনলাইনে করার নিয়ম প্রক্রিয়া দেশের নাগরিকত্ব অধিকারীর সাথে ভিত্তি করে পরিবর্তন করতে পারে, কিন্তু সাধারণভাবে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে এই ধরনের স্টেপগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে
১. সঠিক পাসপোর্ট আবেদন ফর্ম অনলাইনে পূরণ করুন।
২. সব প্রয়োজনীয় তথ্য, যেমন আপনার তথ্য, পস্পোর্টের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করুন।
৩. সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করুন এবং আবেদন সমর্পণ করুন।
৪. পাসপোর্ট ফি প্রদান করুন।
৫. যদি প্রয়োজন হয়, সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে যান।
২. পাসপোর্ট অনলাইনে করার জন্য আরো কি জানা দরকার?
দেশের নাগরিকত্ব অধিকারীর ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ নির্দেশনা পেতে অনুরোধ করা হবে এবং আপনি সেখানে সমস্ত প্রক্রিয়া এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের তালিকা পাবেন।
পাসপোর্টধারীদের ইমিগ্রেশনের জন্য ভিসা চেকিং-এর লাইনে দাড়াতে হবে না। বরং তারা ইলেকট্রনিক গেট ব্যবহার করে খুব দ্রুত ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন
পাসপোর্ট বা ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট হলো ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ ও অ্যান্টেনা যুক্ত একটি পাসপোর্ট যেখানে ব্যক্তির বায়োমেট্রিক পরিচিতি অর্থাৎ ছবি, আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে সেই চিপের ভেতর সমন্বিত করা থাকে। পাসপোর্টধারীদের ইমিগ্রেশনের জন্য ভিসা চেকিং-এর লাইনে দাড়াতে হবে না। বরং তারা ইলেকট্রনিক গেট ব্যবহার করে খুব দ্রুত ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। এখন দেশের যে কোন জায়গা থেকে অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে নির্ঝঞ্ঝাটভাবেই ই-পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। চলুন দেখে নিই, কিভাবে ই-পাসপোর্ট করবেন।
৩. আবেদনের সময় কি কি করতে হবে?
আবেদনের সময় আবেদনকারীর নাম, জন্ম তারিখ, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, পেশা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, পূর্ববর্তী পাসপোর্টের তথ্য (যদি থাকে), পিতা-মাতার নাম ও পেশা, যোগাযোগ নাম্বার ও জরুরি ক্ষেত্রে যোগাযোগ নাম্বার দিতে হবে। পেমেন্ট সেকশনে আবেদন ফি জমা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে হবে।
এখানে খেয়াল রাখা দরকার যে, একবার চূড়ান্তভাবে জমা করার পর আবেদনপত্র আর পরিবর্তন করা যাবে না। একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে শুধুমাত্র একটিই আবেদনপত্র জমা দেয়া যায়। আবেদনের সময় প্রতিটি তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী দেয়া আবশ্যক, অন্যথায় পাসপোর্ট পাওয়া যাবে না।
চূড়ান্তভাবে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করার পর সর্বশেষ সেকশনে পাসপোর্ট অফিসের নির্ধারিত দিনপঞ্জি থেকে বায়োমেট্রিকের জন্য সাক্ষাতের দিনক্ষণ ঠিক করে নিতে হবে।
অনলাইন আবেদন শেষ হলে পূরণকৃত আবেদন ফর্মটি ও বায়োমেট্রিকের জন্য সাক্ষাতের সময়সহ আবেদনের সামারি ডাউনলোড করে প্রিন্ট নিতে হবে।
৪.অনলাইনে পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগবে?
অনলাইনে পাসপোর্ট এর তিন ধরনের ডেলিভারি আছে যেখানে আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর থেকে নির্ধারিত কর্মদিবস পর পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে।
১. রেগুলার- ২১ কর্মদিবস
২. এক্সপ্রেস- ১০ কর্মদিবসে
৩. সুপার এক্সপ্রেস- দুই কর্মদিবস
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট ডেলিভারি ফি
রেগুলার- ৪ হাজার ২৫ টাকা
এক্সপ্রেস- ৬ হাজার ৩২৫ টাকা
সুপার এক্সপ্রেস- ৮,৬২৫ টাকা
৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট ডেলিভারি ফি
রেগুলার- ৫ হাজার ৭৫০ টাকা
এক্সপ্রেস- ৮ হাজার ৫০ টাকা
সুপার এক্সপ্রেস- ১০ হাজার ৩৫০ টাকা
৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট ডেলিভারি ফি
রেগুলার- ৬ হাজার ৩২৫ টাকা
এক্সপ্রেস- ৮ হাজার ৬২৫ টাকা
সুপার এক্সপ্রেস- ১২ হাজার ৭৫ টাকা
৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট ডেলিভারি ফি
রেগুলার- ৮ হাজার ৫০ টাকা
এক্সপ্রেস- ১০ হাজার ৩৫০ টাকা
সুপার এক্সপ্রেস- ১৩ হাজার ৮০০ টাকা
এখন অনলাইন পেমেন্ট বন্ধ আছে। তাই সোনালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, এবং ব্যাংক এশিয়াতে সশরীরে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করতে হবে। ব্যাংক ডিপোজিট ফর্মে আবেদনকারীর নাম এবং ই-পাসপোর্টে দেয়া আবেদনকারীর নাম সম্পূর্ণ এক হতে হবে।
এ সময় জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং আবেদনপত্রের সামারি প্রয়োজন হবে যেটি অনলাইন আবেদন জমা দেয়ার পরেই ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।
৫. পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে?
অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনপত্রটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট বের করতে হবে। অতপর এর সাথে সংযুক্ত করতে হবে এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং ব্যাংকের জমা রশিদ।
১৮ বছরের নিচের আবেদনকারীদের জন্য জন্ম সনদের সাথে পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিতে হবে।
কিছু কিছু ক্ষেত্র আবেদনে দেয়া তথ্য যাচাইয়ের জন্য কিছু কাগজপত্র সংযোজনের প্রয়োজন হতে পারে। যেমন- ঠিকানা, জন্ম সনদ, পুলিশ রিপোর্ট (পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে), এনওসি সনদ, অফিস আইডি কার্ড (চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে), শেষ পরীক্ষার সনদ (শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে)
৬. এমআরপিদের কেমন সুবিধা রয়েছে
যাদের এমআরপি আছে তাদেরকে পাসপোর্টের আবেদনের অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে এমআরপি’র ফটোকপিসহ মুল পাসপোর্ট এবং মুল এনআইডি কার্ড সাথে নিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে এমআরপিতে থাকা স্থায়ী ঠিকানা অপরিবর্তিত থাকলে কোন পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে না। কারণ এমআরপি করার সময় ইতোমধ্যে একবার পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়েছে। সর্বসাকুল্যে, পাসপোর্টের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সত্যায়িত করা ছাড়াই পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া যাবে।