অল্প পুঁজিতে ব্যবসার আইডিয়া | নতুন ব্যবসার আইডিয়া ২০২৩
আমরা অনেকেই অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করার চিন্তা-ভাবনা করে থাকি। কিন্তু সঠিক পরামর্শের অভাবে অনেকের পক্ষে তা হয়ে উঠে না। তাই আজকের আলোচনা আপনাদের জন্য অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন কিছু ব্যবসা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবো। এর মধ্যে আপনার জন্য যেটা উপযুক্ত হবে সেটা বাচাই করে কাজ শুরু করতে পারেন আজ থেকেই।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর ব্যবসা –
আগে বিয়ে,জন্মদিন এর মতো অনুষ্ঠান গুলো আমাদের পরিবারের বড়রাই আয়োজন করে থাকবো। এক কথায় বলতে গেলো তারাই ছিলো পরিবারের ইভেন্ট ম্যানেজার। কিন্তু যুগের সাথে সাথে এই চিন্তাই পরিবর্তন এসেছে। তাই বর্তমানে কদর বেড়েছে প্রোফেশনাল ইভেন্ট ম্যনেজার দের। যদি আপনার মধ্যে সৃজনশীলতা থেকে থাকে তাহলে আপনিও কম পুজিতে ব্যবসা হিসেবে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কে নির্বাচন করতে পারেন। এই কাজ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু উপায় অবলম্বন করতে হবে তাহলে আপনি দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন। আপনার কাজের পুরিপূর্নভাবে মার্কেটিং করতে হবে। যাতে করে মানুষ ধারণা করে যে আপনি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর কাজ করেন। সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে যাতে করে কোনো ধরনের ত্রুটি বিচ্যুতি না ঘটে। সঠিক ভাবে কাজ করতে পারলে ধীরে ধীরে আপনি বড় অনুষ্ঠান গুলোর কাজ পেতে শুরু করবেন।
ব্লগিং-
বর্তমানে অনলাইন ব্লগিং অনেক জনপ্রিয় । আপনি খুব সহজেই ব্লগিং শুরু করতে পারবেন আর এখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। ব্লগিং করার জন্য অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইট তৈরি, ডোমেইন, হোস্টিং এর জন্য কিছু অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। তারপর আপনার ওয়েভসাইট এ নিয়মিত বিভিন্ন আর্টিকেল পোস্ট করতে হবে । আপনি এ ব্যাপারে যদি পারদর্শী না হন তাহলে ইউটিউবে এ ব্যাপারে প্রচুর ভিডিও রয়েছে । সেখান থেকে একটা ভালো ধারণা পেয়ে যাবেন। আপনার ওয়েবসাইট কে SEO করার ও প্রয়োজন হবে। এই ক্ষেত্রে আমরা নিজের SEO টা শিখে নিলে ইনভেস্টমেন্ট অনেকটাই কম লাগবে। এখানে সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে অভিজ্ঞ হতে হবে পাশাপাশি লেগে থাকতে হবে। তাহলে খুব সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
হোম কিচেন এর ব্যবসা-
বর্তমানে অনলাইন এর কল্যানে হোম কিচেন এর চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে । বাইরের খাবারের ক্ষেত্রে অনেকেই হোটেলের খাবার পছন্দ করে না। ঘরোয়া পরিবেশের রান্না পছন্দ করে। অতএব আপনি এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেন। বিশেষ করে যেসকল নারীরা অর্থ উপার্জন করতে চায় কিন্তু পারিবারিক বিভিন্ন কারনে ঘরের বাইরে জব করতে পারেন না। তারা অল্প পুঁজিতে হোম কিচেন এর ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারে। নানান আইটেমের খাবার তৈরি করে অনলাইন page এবং group এর মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন। এই ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি কাজ করতে হবে সেটা হল খাবারে স্বাদ এবং মান ঠিক রাখতে হবে। খাবারের স্বাদ এবং মান যতো ভালো হবে আপনার খাবারের প্রতি সবাই ততোটাই আগ্রহী হবে। বারবার আপনার খাবার খেতে চাইবে।তাই অবশ্যই খাবারের স্বাদ এবং মান ঠিক উন্নত করার চেষ্টা করবেন।
অনলাইন ইন্সট্রাক্টর-
আপনার যদি কোন Skill এর ভালো নলেজ থাকে এবং আপনি সেটা অন্যকে শিখাতে ভালোবাসেন তাহলে আপনি ঘরে বসেই হয়ে যেতে পারেন অনলাইন ইন্সট্রাক্টর। খুব বেশি ইনভেস্টমেন্ট এর প্রয়োজন হবে না এতে। মাত্র ১০-১৫ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন। আপনার খুব ভালো বুঝানোর ক্ষমতা থাকলে অল্পদিনের মাথায় আপনি আয় করতে পারবেন। টেন মিনিট স্কুুল এর অন্যতম একটি উদাহরণ। ইউটিউব দিয়ে প্রথমে শুরু করতে পারেন। এর পর নিজের ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে কোর্স আকারে বিক্রি ভালো পরিমাণ টাকা আয় করার সুযোগ তো থাকছেই।
গ্রাফিক্স ডিজাইনিং-
বর্তমান এ অনলাইন বিজনেস এর প্রসার এর ফলে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কম্পিউটার আর প্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যার থাকলে শুরু করতে পারেন এই ব্যবসা। এতে আলাদা কোন অফিসেরও প্রয়োজন নেই। ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন ঘরে বসেই। অর্ডার পেতে পারেন অনলাইনে অথবা চুক্তিবদ্ধ হতে পারেন বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যাদের নিয়মিত গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের কাজের প্রয়োজন। আজকের ডিজিটাল যুগে গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের কাজের সুযোগ প্রচুর। এছাড়াও অনলাইন এ বেশ কিছু মার্কেট সাইট রয়েছে সেখানে আপনি আপনার ডিজাইন বিক্রি করে ভালো আয় করতে পারবেন।
ড্রপশিপিং –
ড্রপশিপিং আজকের দিনে সবথেকে ভালো ছোটো আকারের লাভদায়ক ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে একটি। এক্ষেত্রে রিটেল সাপ্লাই পদ্ধতিতে অনলাইনে স্টোর খুলে অন্য কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট সেল করতে হয়। এই ব্যবসা খুব কম খরচে এমনকি টাকা ইনভেস্ট না করেই শুরু করতে পারবেন। এই ব্যবসাতে কাস্টমারের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে সেটি সাপ্লাইয়ার-এর কাছে পাঠানো হয়। এরপর সাপ্লাইয়ার ঐ অর্ডার করা প্রোডাক্টটি সরাসরি কাস্টমারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে মধ্যবর্তী মার্জিন ড্রপশিপারের কাছে চলে যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া এজেন্সি –
ডিজিটাল যুগের এই প্রতিযোগিতায় সকল কোম্পানিগুলি তাদের ব্যবসার উন্নতির জন্য অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই তারা মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং করতে জানে এমন লোক বা এজেন্সির সাহায্য নিচ্ছে। আপনার যদি মার্কেটিং বিষয়ে জ্ঞান থাকে অথবা আপনি মার্কেটিং ভালোভাবে শিখে কাজ করতে চান তাহলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া এজেন্সি খুলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে কয়েকজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারদের খুজে নিতে হবে এবং তাদেরকে নিয়ে নিজের একটি সোশ্যাল মিডিয়া এজেন্সি খুলতে হবে। যাদের নিজের ব্যবসার উন্নতি করার দরকার পড়বে তারা নিজে থেকেই আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। আর আপনি তাদের কাজ করে দিলে তার পরিবর্তে আপনি ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই ব্যবসা থেকে কি পরিমান টাকা ইনকাম হতে পারে তা আপনার দক্ষতা এবং কি পরিমানে কাজ আসছে তার উপর নির্ভর করবে।
স্ক্রিন প্রিন্ট-
স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, বাটিক, টাই-ডাই ইত্যাদির পাশাপাশি বর্তমানে টি-শার্ট ডিজাইনিং এর অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে স্ক্রিন প্রিন্ট। স্ক্রিন প্রিন্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল শুধু কাপড়ই নয়, কাগজেও ছাপা বা প্রিন্ট করা যায়। স্ক্রিন প্রিন্ট এক ধরনের ছাপার পদ্ধতি। স্ক্রিন প্রিন্ট অনেকদিন আগে থেকেই ছাপার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে বর্তমানে এটি খুবই জনপ্রিয়। অল্প পুঁজিতে আপনিও শুরু করতে পারেন স্ক্রিন প্রিন্ট এর ব্যবসা। বজার থেকে পাইকারি রেটে কাপড় কিনে স্ক্রিন প্রিন্ট করে বাজারে কিংবা অনলাইন page, group এর মধ্যে খুব সহজেই বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন। আপনার ডিজাইন যদি ইউনিক হয়ে থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনি বড় একটা বাজার ধরতে পারবেন।
ব্যবসায় সফলতা জন্য য়ে সবসময় মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ দরকার হয় সেটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। সফলতা অনেকটাই নির্ভর করে আপনার সঠিক পরিকল্পনা, পরিশ্রম এবং প্রবল ইচ্ছে শক্তির উপর। সুতরাং নিজের লক্ষ্য ঠিক করে আজ থেকেই যাএা শুরু করুন