ইউটিউব ইনকাম এর ২৪% কেটে রাখবে গুগল

ইউটিউব কি কম বেশি আমরা সকলেই জানি। কিন্তু ইউটিউব এর আসল পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা। কিংবা ইউটিউব কি কেউ জিজ্ঞেস করলে আমরা অনেকেই সেটির গ্রহনযোগ্য সঠিক উত্তর দিতে সক্ষম হবো না।

ইউটিউব হচ্ছে একটি জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম। যা সোশ্যাল মিডিয়া, বিনোদন জগৎ কিংবা ভার্চুয়াল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবেও আমরা জানি। ইউটিউব এর যাত্রা প্রথম শুরু হয় ২০০৫ সালের ১৪-ই ফেব্রুয়ারিতে। এরপর জনপ্রিয়তার জন্য ২০০৬ সালে গুগল এটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে ফেলে । বর্তমানে ইউটিউব গুগল-এর অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয়ে চলেছে ।

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার যতগুলো উপায় রয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে সেরা এবং জনপ্রিয় ও বহুল পরিচিত মাধ্যম হচ্ছে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা। চলুন এখন আসি আসল কথায়, জানা যাচ্ছে যে এখন থেকে ইউটিউব ইনকামের ২৪% কেটে নিবে গুগল ।

যেসব ইউটিউবাররা আমেরিকার বাহিরে থাকেন অর্থাৎ, যারা আমেরিকা বাদে অন্য দেশ গুলো থেকে ইউটিউব এর মাধ্যমে আয় করে যাচ্ছে তাদের জন্য নতুন এই নিয়ম নিয়ে এসেছে জনপ্রিয় এই প্লাটফরম ইউটিউব । তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই কারন উপায় ত আছে সব কিছুরই । ভাবুন যে আপনি প্রতি মাসে ইউটিউব থেকে প্রায় ১০০০ ডলার ইনকাম করেন। এখন এই যে ১০০০ ডলার তার মধ্যে থেকে আপনি হয়ত আমেরিকান ভিউ থেকে ১০০ ডলার ইনকাম করছেন। তাহলে আপনাকে এই ১০০ ডলার যা আমেরিকান ভিউ থেকে এসেছে , এর হিসাবে ৩০ ডলার ইউটিউবকে দিতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে একটি বিশেষ শর্ত রয়েছে, আপনি যদি আপনার নিজ দেশে দেওয়া ট্যাক্স ইনফর্মেশন ইউটিউব কে ঠিক মত সরবরাহ করেন তবেই ১০০ ডলার থেকে ৩০ ডলার দিতে হবে ইউটিউবকে।

তবে ইন্ডিয়ান ইউটিউবার এর জন্য বিষয়টি একটু ভিন্ন , যারা ইন্ডিয়া থেকে ইউটিউব এর মাধ্যমে আয় করে তাঁরা যদি তাদের দেশের ট্যাক্স ইনফর্মেশন ইউটিউবকে সঠিক ভাবে সরবরাহ করে তবে তাদের আয়ের ১৫% কেটে নেওয়া হবে।এখন তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে এখানে কেন ২৪% না কেটে ১৫% কাটা হবে? আসলে ইন্ডিয়ার সাথে আমেরিকার যে ট্যাক্স রিলেশনশিপ আছে সে হিসেবে এ ট্যাক্স কাটা হবে।শুধু ইন্ডিয়া নয় আমেরিকার সাথে যে যে দেশগুলোর ট্যাক্স রিলেশনশিপ রয়েছে তাদের জন্যও পরিমান ১৫%। আর আপনি যদি ইউটিউবকে কোন প্রকার ট্যাক্স ইনফর্মেশন না দেন তাহলে ইউটিউব আপনার মোট আয়ের ২৪% কেটে নিবে এই নিয়ম নিরধারিত হয়েছে।

আর যদি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ান ভিউ থাকে তবে আপনি যদি আপনার নিজ দেশের ট্যাক্স ইনফর্মেশন ইউটিউবকে সরবরাহ করেন তাহলে আপনাকে কোন প্রকার টাকা ইউটিউবকে দিতে হবে না।এর জন্য অবশ্যই আপনাকে আপনার ট্যাক্স ইনফর্মেশন বিষয়াবলী সব ইনফরমেশন সাবমিট করতে হবে। এখানে একটা বিষয় পরিস্কার যে, সরকারকে এখন থেকে আপনাকে অবশ্যই ট্যাক্স দিতে হবে সময়মত ।কারন ট্যাক্স না দিলে আপনি আপনার যে ট্যাক্স ইনফর্মেশন সেটি পাবেন না আর ট্যাক্স ইনফর্মেশন না পেলে ইউটিউবকে ট্যাক্স ইনফর্মেশন সাবমিট করতে পারবেন না। আপনি হয়ত এখন ভাবছেন যে তাহলে আমেরিকা থেকে যারা ইউটিউব এর মাধ্যমে আয় করে যাচ্ছেন অর্থাৎ যারা আমেরিকার ভিডিও ক্রিয়েটর তাদের জন্য অনেক ভালো। বিষয়টি কিন্তু এমনও না কারন তাঁরা ইতিমধ্যে ইউটিউবকে ট্যাক্স ইনফর্মেশন সরবরাহ করেই চলেছেন ।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে ইউটিউব কি ইচ্ছা করে এই নিয়ম নিয়ে আসল নাকি অন্য কোন কারন রয়েছে এর পিছনে ? না গুগল বা ইউটিউব ইচ্ছা করে এই নিয়ম নিয়ে আসেনি ।আমেরিকার ট্যাক্স রুলস চ্যাপ্টার-৩ অনুযায়ী কেউ যদি আমেরিকার ভিউ থেকে আয় করেন তাহলে অবশ্যই তাকে আমেরিকার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হবে। এজন্য বলা যাচ্ছে, গুগল ইচ্ছাকৃত ভাবে এই নিয়ম নিয়ে আসেনি এবং আপনার আয় থেকে কেটে নেওয়া আয় গুগল নিজের কাছেও রাখবে না। আপনার বা আমার আয় থেকে ট্যাক্স কেটে নিয়ে সেই টাকা গুগল আমেরিয়াকে রাজস্ব বোর্ডে জমা দিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *