দলিল নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন এবং দলিল নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন কি কি ডকুমেন্ট দরকার?
দলিল রেজিস্ট্রেশনে কি কি ডকুমেন্ট দরকার?
দলিল নিবন্ধন
দলিল নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন হলো একটি কানুনি পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি দলিল বা সংস্থা সরকারী অথবা বেসরকারী কর্পোরেশন, সংস্থা, সমিতি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি আইন অনুসারে নিবন্ধিত করতে হয়। এটি কোন দেশের বিধান অনুযায়ী বিবেচিত হয় এবং নিবন্ধিত সংস্থা বা সংস্থাটি সরকারের দ্বারা সমর্থিত হয়।
দলিল নিবন্ধনের পদ্ধতি এবং প্রক্রিয়াটি দেশ থেকে দেশে ভিন্ন হতে পারে। যেমন, কিছু দেশে এটি স্থানীয় ন্যায় অদালতের মাধ্যমে হয়, আর কিছু দেশে সরকারি দলিল নিবন্ধন করার জন্য একটি বিশেষ নিবন্ধন বিভাগ বা অফিস অবদান করে।
একটি দলিল নিবন্ধন করার জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত তথ্য এবং কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে
১. প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ঠিকানা
২. প্রতিষ্ঠানের ধরণ (ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি)
৩. প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রম
৪. প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের তালিকা এবং তাদের পদবী বা অবদান
৫. নিদিষ্ট ব্যক্তির নাম এবং ঠিকানা যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধিত হবে
৬. নিবন্ধন সংক্রান্ত ফি বা ট্যাক্স প্রদানের বিবরণ
দলিল নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানপত্র, সদস্যদের আইডি কার্ড কপি, মালিকানাধীন সম্পত্তির দলিল প্রমাণ ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হয়।
দলিল নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি স্থানীয় আইন বা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণ করতে হয়। প্রক্রিয়াটি নিয়মিত করার মাধ্যমে একটি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সময়ের সাথে আনন্দ করতে পারে যখন সেই সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ।
জমির ডকুমেন্ট গুলো কোথায় পাবেন ?
১. পর্চা বা খতিয়ান।
২. দলিল।
৩. ম্যাপ বা নকশা।
এই ডকুমেন্টগুলো ছাড়া আপনি জমি বিক্রয়, হস্তান্তর অথবা ব্যাংক লোন নিতে নানান সমস্যায় পড়বেন।
সেকারণে, জমির খতিয়ান, দলিলসহ সকল কাগজপত্র সংগ্রহে রাখার জন্য সরকারি নানান দপ্তর রয়েছে, যারা ভূমি সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখে। এখন আপনার কাজ হল, ঐ সকল দপ্তরগুলো কে নিশ্চিত করে তাদের শরণাপন্ন হওয়া ও কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করা।
নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো, কোথায়, কীভাবে এবং কত সময়ের ভেতরে আপনি জমির খতিয়ান, দলিল ও নকশা সংগ্রহ করবেন।
প্রথমত, অবস্থায় জমির খতিয়ান বা পর্চা কোথায় পাবেন?
জমির পর্চা বা খতিয়ান মূলত চারটি অফিসে পাবেন। তা হলো
১. ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
২. উপজেলা ভূমি অফিস।
৩. জেলা ডিসি অফিস।
৪. সেটেলমেন্ট অফিস।
১. ইউনিয়ন ভূমি অফিস বা তহশিল অফিস
ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যদিও খতিয়ান বা পর্চার বালাম বহি থাকে কিন্তু আপনি এই অফিসে হতে খতিয়ানের কপি নিতে পারবেন না। ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে শুধু খসরা খতিয়ান নিতে পারবেন যেটা আইনত কোন মূল্য নেই তারপরেও এই অফিসটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আপনার জমির খতিয়ান নাম্বার জানা না থাকলে এই অফিস থেকে জেনে নিতে পারবেন এছাড়া জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর এই অফিসে দিতে হয়।
২. উপজেলা ভূমি অফিস
যদিও উপজেলা ভূমি অফিসের মূল কাজ নামজারী বা খারিজ বা মিউটেশন করা তবে খসরা খতিয়ান তুলতে পারবেন। এই অফিস হতেও খতিয়ানের সার্টিফাইড পর্চা বা কোর্ট পর্চা তুলতে পারবেন না।
৩. জেলা ডিসি অফিস
এই অফিস হতে পর্চা বা খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি সংরক্ষণ করতে পারবেন। এই অফিসের খতিয়ান এর গুরুত্ব সর্বাধিক। সব জায়গায় এই অফিসের খতিয়ান এর গুরুত্ব রয়েছে।
৪. সেটেলমেন্ট অফিস
শুধুমাত্র নতুন রেকর্ড বা জরিপের পর্চা / খতিয়ান এই অফিস হতে সংগ্রহ করা যাবে।
পাশাপাশি নতুন রেকর্ড এর ম্যাপ ও সংগ্রহ করা যায়।
প্রশ্ন
খতিয়ান তুলতে কত টাকা লাগবে?
উত্তর
সি এস, এস এ, আর এস, এর জন্য কত টাকা দিতে হবে তা নির্ভর করে ঐ স্থানের সিন্ডিকেটের উপর। তবে সিটি জরিপের জন্য 100 টাকা খরচ হবে।
দ্বিতীয়ত, আপনার জমির দলিল বা বায়া দলিল কোথায় পাবেন?
দলিল বা দলিল এর সার্টিফাইড কপি বা নকল মূলত দুটি অফিস হতে সংগ্রহ করা যায়, তা হলো।
১. উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস।
২. জেলা রেজিস্ট্রি বা সদর রেকর্ড রুম অফিস।
১. উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস
যেখানে নতুন দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হয় এই অফিস হতে নতুন দলিলের নকল ও মূল দলিল পাওয়া যায়। কিন্তু পুরাতন দলিল বা বায়া দলিল এই অফিসে পাওয়া যায় না।
২. জেলা রেজিস্ট্রি অফিস বা সদর রেকর্ড রুম।
এই অফিসে নতুন বা পুরাতন দলিলের সার্টিফাইড কপি বা নকল পাওয়া যায়।
প্রশ্ন
দলিল তুলতে কত টাকা খরচ হয়?
উত্তর
সরকারি খরচ যদিও সামান্য কিন্তু নকলের খরচ নির্ভর করে ঐ স্থানের সিন্ডিকেটের উপর।
আপনার জমির মৌজা ম্যাপ বা নকশা কোথায় পাবেন?
সাধারণত ম্যাপ বা নকশা দুইটি অফিসে পাবেন, তা হলো
১. জেলা ডিসি অফিস
২. ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ( DLR) অফিস, ঢাকা।
১. জেলা ডিসি অফিস
এই অফিস হতে সিএস, এসএ, আরএস, বিএস যেকোনো মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ করা যাবে।
সংগ্রহ করতে যা লাগবে আবেদন ফরম + 20 টাকার কোর্ট ফি এবং 500 টাকা নগদ জমা বাবদ বা ডি.সি.আর বাবদ। অর্থাৎ 520 টাকায় মৌজা ম্যাপ তুলতে পারবেন।
২.ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, (তেজগাঁও সাতরাস্তার মোড়), ঢাকা
সারা বাংলাদেশের যে কোনো মৌজা ম্যাপ সিএস, এসএ, আরএস, বিএস, জেলা ম্যাপ, বাংলাদেশ ম্যাপ উক্ত অফিস হতে তুলতে পারবেন।
এই অফিসের ম্যাপের গ্রহণযোগ্যতা ও অনেক বেশি। সারা বাংলাদেশের যে কোন ম্যাপ এই অফিসে পাওয়া যায়। ম্যাপ তুলতে খরচ আবেদন ফরম + কোর্ট ফি + ডি.সি.আর মোট= ৫৫০/= টাকা মাত্র।
প্রশ্ন
ম্যপ তুলতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তর
আবেদন করার দিন হতে, ৫-৮ কার্য দিবসের ভিতরে ম্যাপ সরবরাহ করা হয়।
দলিল নিবন্ধন কি কি ডকুমেন্ট দরকার?
দলিল নিবন্ধনের জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হতে পারে
১.প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানপত্র
এটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট তথ্য যেমন প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, প্রতিষ্ঠাতার নাম ইত্যাদি সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য থাকে। এটি স্থানীয় প্রশাসনিক কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত করতে হয়।
২. সদস্যদের আইডি কার্ড কপি
প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের আইডি কার্ডের কপি সংগ্রহ করতে হয়। এটি সদস্যদের ব্যক্তিগত ও পরিচিতি নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়
৩. মালিকানাধীন সম্পত্তির দলিল প্রমাণ
যদি প্রতিষ্ঠান মালিকানাধীন সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট কর্পোরেশন, স্থানীয় সরকার বা ভাড়ার মাধ্যমে যেমন ভাড়া নিয়ে থাকে, তবে সেই সম্পত্তির দলিল প্রমাণ করতে হয়। এটি জমি সনদ, ভাড়াপত্র, মালিকানাধীন সম্পত্তির চালান ইত্যাদি হতে পারে।
৪. নাগরিকত্ব সনদ
কোন দেশের নাগরিকত্ব সনদ প্রয়োজন হলে সেই সনদের কপি সংগ্রহ করতে হয়। এটি প্রতিষ্ঠানের নাগরিকত্ব ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের সম্প্রতিগত তথ্য যাচাই করতে ব্যবহৃত হয়।
এছাড়াও, দলিল নিবন্ধনের প্রক্রিয়াটি দেশের আইনের অনুযায়ী পরিচালিত হয় এবং প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে বিশেষ নিবন্ধন নিয়েও হতে পারে। সেই জন্য প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হতে পারে। এমনকি কিছু দেশে মালিকানাধীন সংস্থার জন্য আবেদন
পত্র ও প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে যাচাই প্রয়োজন হতে পারে।
এইভাবে, দলিল নিবন্ধনের জন্য যে কোনও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হয় যা