সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ ২০২২
পল্লী সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রমের সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ/দারিদ্র্য বিমোচনের সূতিকাগার এবং পথিকৃৎ হিসেবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক মুক্তির ক্ষেত্রে সূচনা করে এক নতুন ও বর্ণিল ইতিহাস।পল্লী সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রমের আওতায় বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সূত্রপাত। ফলে এ কার্যক্রমটি বাংলাদেশ ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সূতিকাগার এবং পথিকৃৎ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় সমাজসেবা অধিদফতর ১৯৭৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে তৎকালীন ১৯টি থানায় ‘পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম’ শুরু করে। এর সফলতার আলোকে ১৯৭৭ সালে আরও ২১টি থানায় এ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়। পরবর্তীতে সম্প্রসারিত পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম ২য় পর্বে (১৯৮০-৮৭) ১০৩টি উপজেলায়, ৩য় পর্বে (১৯৮৭-৯২) ১২০টি উপজেলায়, ৪র্থ পর্বে (১৯৯২-৯৫) ৮১টি উপজেলায়, ৫ম পর্বে (১৯৯৫-২০০২) ১১৯টি উপজেলায়, ৬ষ্ঠ পর্বে (২০০৪-০৭) ৪৭০টি উপজেলায় এবং বর্তমানে এরই ধারাবাহিকতায় দেশের সকল উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলে বসবাসরত ভূমিহীন, দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করে বিভিন্ন কর্মদলে সুসংগঠিত করা হয়ে থাকে এবং সুদমুক্ত ক্ষুদ্র পুঁজি প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদনমূলক ও আয়বর্ধক কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করে দেশের সকল প্রকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
কাদের জন্য এবং সুদমুক্ত ঋণের পরিমান
- দরিদ্র জনগণকে সংগঠিত করে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসা;
- দরিদ্রতা বিমোচন ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন;
- সচেতনতামূলক উদ্বুদ্ধকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন;
- পরিবার প্রতি সর্বনিম্ন ৫,০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণ ;
- আদায়কৃত সার্ভিস চার্জের অর্থ দিয়ে লক্ষ্যভূক্ত ব্যক্তিদের টেকসই সংগঠন (পল্লী সমাজেসবা গ্রাম সমিতি) সৃষ্টি ও গ্রাম সমিতি’র নিজস্ব পুঁজি গঠন।
সুদমুক্ত ঋণপ্রাপ্তির শর্তাদি
- নির্বাচিত গ্রামের বাসিন্দা;
- পল্লী সমাজসেবা কর্মদলের দলীয় সদস্য;
- যে সদস্যের পরিবারের বার্ষিক গড় আয় ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত (দরিদ্রতম) ‘ক’ শ্রেণি
- পরিবারের বার্ষিক গড় আয় ৫০,০০১ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত (দরিদ্র) ‘খ’শ্রেণি
- পরিবারের বার্ষিক গড় আয় ৬০,০০১ টাকার ঊর্ধেব (দারিদ্র্যসীমার ঊর্ধে) ‘গ’ শ্রেণি
- ‘ক’ ও ‘খ’শ্রেণি ক্ষুদ্রঋণসহ অন্যান্য সেবা এবং গ শ্রেণি সুদমুক্ত ঋণ ব্যতীত অন্যান্য সামাজিক সেবা;
সেবা প্রদান পদ্ধতি
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত গ্রামে ইউনিয়ন সমাজকর্মী/কারিগরি প্রশিক্ষক কর্তৃক পরিবার জরিপ সম্পন্নকরণপূর্বক ক ও খ গ্রুপভুক্ত পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে কর্মদল গঠন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের পর প্রত্যেক দলীয় সদস্যকে ২০ টি সামাজিক কার্যক্রম অবহিতপূর্বক অভ্যস্ত করানো হয়। অতঃপর গ্রাম কমিটি বা কর্মদল হতে প্রস্তাবিত ঋণ প্রার্থীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইপূর্বক আবেদনপত্রসহ খসড়া তালিকা সংশ্লিষ্ট সমাজকর্মী/কারিগরি প্রশিক্ষক দাখিল করেন এবং আদায়কৃত সঞ্চয় প্রকল্প গ্রাম বা কর্মদলের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। প্রস্তুতকৃত খসড়া তালিকা, আবেদনপত্র, স্কিম ফিল্ডসুপারভাইজার কর্তৃক পরীক্ষান্তে সুপারিশসহ উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের নিকট দাখিল করেন। অতঃপর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ইউপিআইসির সভার আয়োজন করে ঋণ অনুমোদন করেন। অবশেষে নির্বাচিত ঋণ গ্রহীতাদের মাঝে ঋণের চেক/নগদ টাকা বিতরণের স্থান, তারিখ নির্ধারণ করে তাদের অবহিতপূর্বক ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের জুন ২০২১ পর্যন্ত
বিষয় | পরিসংখ্যান |
(১) সর্বমোট প্রাপ্ত বরাদ্দের পরিমাণ | ৯৬ কোটি ১৮ লক্ষ ০৬ হাজার ২৫০ টাকা |
(২) ক্ষুদ্রঋণ হিসাবে বরাদ্দকৃত তহবিল | ৯১ কোটি ১৭ লক্ষ ৩৭ হাজার ৬৭ টাকা |
(৩) বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ | ৮৬ কোটি ৬৫ লক্ষ ১৯ হাজার ১২ টাকা |
(৪) আদায়কৃত অর্থের পরিমাণ | ৬৫ কোটি ৭২ লক্ষ ৩৪ হাজার ৯৮৭ টাকা |
(৫) আদায়ের হার | ৭৫% |
(৬) পুনঃবিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ | ১৩৩ কোটি ০১ লক্ষ ১৩ হাজার ১৪৭ টাকা |
(৭) পুনঃবিনিয়োগকৃত অর্থ হতে আদায়ের পরিমাণ | ১০০ কোটি ৮২ লক্ষ ৮৯ হাজার ৩৩৯ টাকা |
(৮) পুনঃবিনিয়োগকৃত অর্থ হতে আদায়ের হার | ৭৬% |
(৯) আদায়কৃত সার্ভিস চার্জ | ৯ কোটি ৮২ লক্ষ ০৩ হাজার ৫৪২ টাকা |
(১০) আদায়কৃত ব্যাংক সুদ | ৩ কোটি ৪৬ লক্ষ ১১ হাজার ৯৮০ টাকা |
(১১) শুরু হতে মোট উপকারভোগী | দগ্ধজনিত ২,১৪২ জন এবং প্রতিবন্ধী ১,৮৮,৫৪৬ জন সর্বমোট ১,৯০,৬৮৮ জন |
(১২) বর্তমান উপকারভোগী (ঋণগ্রহীতার সংখ্যা) | ৯৯,৮০৩ জন |
সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ ২০২২ : ডাউনলোড