রাজশাহী প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান যা রাজশাহীর সুনাম ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এবং সেই ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি?

রাজশাহী প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জেনে নেই 

 

 

রাজশাহী সম্পর্কে জেনে নেই 

রেশমীবস্ত্রের কারণে রাজশাহীকে রেশম নগরী নামে ডাকা হয়। বাংলাদেশের শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহী সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন এবং সবুজ বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর শহর রাজশাহী। অনেকের মতে এক‌ই সাথে বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন শহরও বটে। রাজশাহী বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী। এটি উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শহর, যা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। বিভাগীয় শহর রাজশাহী বাংলাদেশের শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম বায়ু দূষণের শহর।  রাজশাহী তার আকর্ষণীয় রেশমীবস্ত্র, আম, লিচু এবং মিষ্টান্নসামগ্রীর জন্য প্রসিদ্ধ।রাজশাহী প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান গুলো সাফিনা পার্ক রাজশাহী,উৎসব পার্ক রাজশাহী,জিয়া পার্ক রাজশাহী,পুঠিয়া রাজবাড়ী পুঠিয়া,বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী,বাঘা মসজিদ বাঘা রাজশাহী,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী রাজশাহী কলেজ রাজশাহী ,পদ্মার পাড় রাজশাহী,শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা রাজশাহী।

রাজশাহী শহরে এবং এর আশেপাশে বেশ কিছু বিখ্যাত ও ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে।

১. পুঠিয়া রাফজবাড়ী পুঠিয়া

বাংলার প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যর মধ্যে রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ী অন্যতম। এটি ছিলো মহারানী হেমন্তকুমারীর বাসভবন। ভবনের সম্মুখ ভাগের স্তম্ভ, অলংকরণ, কাঠের কাজ, কক্ষের দেয়ালে ও দরজার উপর ফুল ও লতাপাতার চিত্রকর্ম চমৎকার নির্মাণ শৈলীর পরিচয় বহন করে। রাজবাড়ীর ছাদ সমতল, ছাদে লোহার বীম, কাঠের বর্গা এবং টালি ব্যবহৃত হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য রাজবাড়ির চারপাশে পরিখা খনন করা হয়েছিল।

কীভাবে যাবেন রাজশাহী জেলা থেকে ৩২ কি মি উত্তর পূর্বে নাটোর মহাসড়কে পুঠিয়া অবস্থিত। বাসে করে দেশের যে কোন স্থা হতে পুঠিয়া আসা যায় এবং ট্রেনে করে নাটোর অথবা রাজশাহী নেমেও সড়কপথে সহজে আসা যায়। এছাড়া রাজশাহী শহর থেকে বাস ও অটোরিক্সাযোগে যাওয়া যায়।

২. বরেফন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী 

এটি প্রত্ন সংগ্রহে সমৃদ্ধ রাজশাহী শহরে স্থাপিত বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থল হাতেম খাঁন মহল্লায় অবস্থিত এটি। ১৯১০ সালের ১৩ নভেম্বর ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপিত হলেও বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এটি পরিচালনা করে থাকে।

কীভাবে যাবেন রাজশাহী জিরোপয়েন্ট থেকে আনুমানিক ৮০০ মিটার পশ্চিম দিকে প্রধান সড়কের উত্তরে অবস্থিত এটি। রিকশা কিংবা অটোতে করে যাওয়া যায়।

৩. বাঘা মসজিদ রাজশাহী

একটি উঁচু টিলার উপর টেরাকোটা অলংকরণে দশ গম্বুজ বিশিষ্ট এবং তিনশত ধারণক্ষমতা সমৃদ্ধ অতুলনীয় বাঘা মসজিদটি বাংলাদেশের প্রাচীনতম মসজিদ গুলির অন্যতম। রাজশাহী শহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব দিকে বাঘা উপজেলা শহরের কেন্দ্রস্থলে এটি অবস্থিত। সুলতান নাসিরউদ্দিন নুসরাত শাহ ১৫২৩ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন।

কীভাবে যাবেন রাজশাহী শিরোইল বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে যাওয়া যাবে। ভাড়া প্রায় ১০০ টাকার মতো

৪. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী

প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ খ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী জেলায় অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। এটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় এবং এটির আছে ডিজিটাল ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসটি গড়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি ড. সোয়ানি টমাসের স্থাপত্য পরিকল্পনায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার৷ কীভাবে যাবেন বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশন ও ঢাকা রাজশাহী মহাসড়কের পাশে রাজশাহী শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত৷ এছাড়া রাজশাহী জিরো পয়েন্ট থেকে রিকশা বা অটোতে যাওয়া যাবে।

৫. রাজশাহী কলেজ রাজশাহী 

১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কলেজ রাজশাহী শহরে অবস্থিত একটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ঢাকা কলেজ ও চট্টগ্রাম কলেজ এর পরে রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের ৩য় প্রাচীনতম কলেজ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ৬৮৫টি কলেজের তথ্যের ভিত্তিতে রাজশাহী কলেজ হচ্ছে বাংলাদেশের সেরা কলেজ। বাংলাদেশে এই কলেজ থেকেই সর্বপ্রথম মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান করা শুরু হয়। কলেজটি রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থলে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এর পাশে অবস্থিত। এই প্রাচীন কলেজের পাশে অবস্থিত হওয়ার কারণে স্কুলটির নাম কলেজিয়েট রাখা হয়েছিলো।

৬. পদ্মার পাড় রাজশাহী 

রাজশাহী শহরের পাশদিয়ে বয়ে চলেছে পদ্মা নদী। এটির পাশে গড়ে উঠেছে সুন্দর পাড় বাঁধ ও দর্শনীয় স্থান। প্রতিদিন বহু মানুষ এই খানে আসেন। প্রতিটি উৎসবে বিনোদন পিয়াসীদের কাছে সেরা ঘোরাঘুরির স্পট হিসেবে প্রথম পছন্দ পদ্মা নদীর পাড়। নগরীর বুলনপুর থেকে বড়কুঠি ও পঞ্চবটি হয়ে সাতবাড়িয়া দীর্ঘ প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পদ্মার পাড় এখন রাজশাহীবাসীর জন্য বিনোদনের সেরা ঠিকানা।

কীভাবে যাবেন জিরোপয়েন্ট থেকে পশ্চিমদিকে আনুমানিক ৩ কি.মি. কোর্ট এর দিকে, প্রধান রাস্তার উত্তর পার্শ্বে এটি অবস্থিত। রিকশা কিংবা অটোতে যাওয়া যাবে।

৭. শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা রাজশাহী 

স্বাধীনতা যুদ্ধের ও ইতিহাসের বিভিন্ন উপকরণ সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সালে এই সংগ্রহশালাটি প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার কমপ্লেক্স এলাকায়। শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগ্রহশালা। স্বাধীনতা যুদ্ধে শিক্ষক, ছাত্র, কর্মচারীদের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্ত্বরে গড়ে উঠেছে দেশের সর্বপ্রথম মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক জাদুঘরটি।

কীভাবে যাবেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইট দিয়ে প্রবেশ করে প্রশাসনিক ভবনের ডান দিকে শহীদ মিনারের পাশে শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালার অবস্থান।

এছাড়া রাজশাহী জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে সে গুলো হল

 

সাফিনা পার্ক, উৎসব পার্ক, রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার, শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, হযরত শাহ মখদুমেরর মাজার, হাওয়া খানা, গোয়ালকান্দি জমিদারবাড়ি ইত্যাদি।রাজশাহী এক্সপ্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *