কুরআনের শরীফের ৩ কুল। সূরা ইখলাস,সূরা ফালাক ও সূরা নাসের ফজিলত ও ব্যাখা

কুরআনের শরীফের ৩ কুল

 

১। কুরআনের শরীফের ৩ কুল

১। সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা সকাল ও বিকাল ৩ বার করে পড়লে সব ধরনের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।( সহীহ তিরমিযী হা ২৮২৯

২। প্রতি ফরজ সালাতের পর সূরা ইখলাস ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা একবার করে পাঠ করতে হবে । (আবু দাউদ হা১৩৬৩)

৩। নবী (স:) রাতে ঘুমানোর পূর্বে সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস একবার করে পড়ে হাতে ফুকে সমস্ত শরীরে একবার বুলিয়ে দিতেন । এভাবে তিনি ৩ বার করতেন।(বুখারী তাও হা‌ ৫০৭০)

৪। যে কোন সময় অসুস্থতা অনুভব করলে সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা পড়ে শরীরে ফুক দিতে হবে।(বুখারী হা ৪৬২৯)

৫। জিন ও মানুষের বদনজর থেকে নিরাপদ থাকার জন্য সূরা ফালাক ও নাস পাঠ করে শরীরে ফুকতে হবে।(সহীহুল জামে হা ৪৯২০)

 

২। সূরা ইখলাস ফজিলত ও ব্যাখা

১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) (সূরা) কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ সম্পর্কে বলেছেন, নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য। (মুসলিম ৮১২)

২) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত , রাসূলুল্লাহ (সাঃ) (সূরা) কূল হুওয়াল্লাহু আহাদ সম্পর্কে বলেছেন, সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রান আছে, নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।

৩) অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবাগনকে বললেন, তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে অপারগ? প্রস্তাবটি তাদের পক্ষে ভারী মনে হল। তাই তারা বলে উঠলেন হে আল্লাহর রাসূল এ কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে? ( অর্থাৎ কেও পারবে না।) তিনি বললেন কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস সামাদ (সূরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য। (অর্থাৎ, এই সূরা পড়লে এক তৃতীয়াংশের কুরআন পড়ার সমান নেকী অর্জিত হয়।) (সহীহুল বুখারি ৫০১৫)

৪) উক্ত সাহাবী (রাঃ) আরো বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি কোন লোককে সূরাটি বারবার পড়তে শুনল। অতপর সে সকালে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিকট এসে তা ব্যক্ত করল। সে সূরাটিকে নগণ্য মনে করেছিল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ আছে, নিঃসন্দেহে এই সূরা (ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।(সহীহুল বুখারি ৫০১৫)

৫) আনাস (রাঃ) হতে বর্নিত, এক ব্যক্তি নিবেদন করল, ষহে আল্লাহর রাসূল আমি এই (সূরা) কূল হুওয়াল্লাহু আহাদ ভালবাসি। তিনি বললেন, এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (সহীহুল বুখারি ৭৭৪)

 

৩। সূরা ফালাক ও সূরা নাসের ফজিলত

১) উকবাহ বিন আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একদা বললেন, তুমি কি দেখনি, আজ রাতে আমার উপর কতকগুলি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে যার আনুরূপ আর কিছু দেখা যায়নি? (আর তা হল,) কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ক ও কুল আউযু বিরাব্বিল নাস। (মুসলিম ৮১৪)

২) আবূ সাঈদ খুদরী ( রাঃ) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সূরা ফালাক্ক ও নাস অবতীর্ণ হবার পূর্ব পর্যন্ত নিজ ভাষাতে) জিন ও বদ নজর থেকে (আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। পরিশেষে যখন উক্ত সূরা দু টি অবতীর্ণ হল, তখন ঐ সূরা দুটি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং অন্যান্য সব পরিহার করলেন। (তিরমিজী ২০৫৮)

 

৪। সুরাহ আল ইখলাস(১-৪)

ﺑِﺴﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣﻤٰﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣﻴﻢِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

ﻗُﻞ ﻫُﻮَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﺣَﺪٌ

বলুন, তিনি আল্লাহ, এক,

ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟﺼَّﻤَﺪُ

আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,

ﺍﻟﺴﻴﺪ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﺼﻤﺪ ﺇﻟﻴﻪ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﺎﺟﺎﺕ

ﻟَﻢ ﻳَﻠِﺪ ﻭَﻟَﻢ ﻳﻮﻟَﺪ

তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি

ﻭَﻟَﻢ ﻳَﻜُﻦ ﻟَﻪُ ﻛُﻔُﻮًﺍ ﺃَﺣَﺪٌ

এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।

 

৫। সুরাহ আল ফালাক (১-৫)

ﺑِﺴﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣﻤٰﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣﻴﻢِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

ﻗُﻞ ﺃَﻋﻮﺫُ ﺑِﺮَﺏِّ ﺍﻟﻔَﻠَﻖِ

বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার,

ﻣِﻦ ﺷَﺮِّ ﻣﺎ ﺧَﻠَﻖَ

তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে,

ﻭَﻣِﻦ ﺷَﺮِّ ﻏﺎﺳِﻖٍ ﺇِﺫﺍ ﻭَﻗَﺐَ

অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়,

ﻭَﻣِﻦ ﺷَﺮِّ ﺍﻟﻨَّﻔّٰﺜٰﺖِ ﻓِﻰ

ﺍﻟﻌُﻘَﺪِ

গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে

ﻭَﻣِﻦ ﺷَﺮِّ ﺣﺎﺳِﺪٍ ﺇِﺫﺍ ﺣَﺴَﺪَ

এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।

 

৬। সুরাহ আন নাস(১-৬)

ﺑِﺴﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣﻤٰﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣﻴﻢِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

ﻗُﻞ ﺃَﻋﻮﺫُ ﺑِﺮَﺏِّ ﺍﻟﻨّﺎﺱِ

বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার,

ﻣَﻠِﻚِ ﺍﻟﻨّﺎﺱِ

মানুষের অধিপতির,

ﺇِﻟٰﻪِ ﺍﻟﻨّﺎﺱِ

মানুষের মাবুদের

ﻣِﻦ ﺷَﺮِّ ﺍﻟﻮَﺳﻮﺍﺱِ

ﺍﻟﺨَﻨّﺎﺱِ

তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে,

ﺍﻟَّﺬﻯ ﻳُﻮَﺳﻮِﺱُ ﻓﻰ ﺻُﺪﻭﺭِ

ﺍﻟﻨّﺎﺱِ

যে কুমন্ত্রণাদেয় মানুষের অন্তরে

ﻣِﻦَ ﺍﻟﺠِﻨَّﺔِ ﻭَﺍﻟﻨّﺎﺱِ

জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *