পবিত্র কোরআনে বর্ণিত বরকতময় ত্বীন ফলের গুণাগুণ
কোলেস্টেরল আমার শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর। এর মাএ বেশি হলে তা আমাদের হার্টের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে। ত্বীন ফলে থাকা ফাইবার আমাদের শরীরে দ্রুত শোষিত হয়। এই ফাইবার দ্রুত দ্রবীভূত হয়ে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়াও ত্বীন ফলে বিদ্যমান পেকটিন কোলেস্টেরল কমাতে রাখে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে-
উচ্চ রক্ত চাপ এর সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য ত্বীন ফল অনেক কার্যকরী। আপনি যদি উচ্চরক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে নিয়মিত ত্বীন ফল গ্রহনে আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। ত্বীন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাসিয়াম। এটি উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে-
যারা বিভিন্ন যৌন সমস্যায় ভুগছেন তারা ত্বীন ফল কে তাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। ক্যালসিয়াম,পটাসিয়াম,আয়রন ও জিংক সমৃদ্ধ ত্বীন-কে যৌন পরিপূরক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এতে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম,যা সেক্স হরমোন ও এস্ট্রোজেন ও এন্ড্রোজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। ভালো ফলাফল পেতে রাতে দুধের সাথে ত্বীন ফল ভিজিয়ে রাখে সকালে ফল সহ দুধ খেয়ে নিবেন।
হজমে সাহায্য করে-
আমাদের মধ্যে এমন অনেক এই আছে যারা হজমের সমস্যায় ভুগছে। হজমের সমস্যার জন্য ফাইবার অনেক ভালো কাজ করে। ত্বীন ফল ফাইবার এর খুব ভালো উৎস। এতে বিদ্যমান ফাইবার আপনার হজমকে উন্নত করবে। এটি বিপাকেও সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রেহাই দেয়। দ্রুত এবং কার্যকরী ফল পেতে ২-৩ টি ত্বীন পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে পান করুন। এর সাথে চাইলে মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন।
রক্তস্বল্পতা দূর করে-
ত্বীন ফলে আয়রনের প্রাচুর্য্য আপনার শরীরের রক্তস্বল্পতা ও আয়রনের ঘাটতি পূরন করবে। নারীদের দেহে আয়রনের পরিমান সঠিক রাখা একান্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায়ও মায়ের দেহে আয়রনের পরিমান নিশ্চিত করতে পারে ত্বীন ফল। এতে উপস্থিত আয়রনের কার্যকারিতা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ ও দূর করতে সাহায্য করে।
প্রজনন ব্যবস্থাকে সচল রাখে-
ডুমুর ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা এবং ম্যাঙ্গানিজের মত খনিজগুলির সমৃদ্ধ হয় যা প্রাণবন্ততা ও উর্বরতা বজায় অবদান রাখে। ডুমুর দুধে ভিজিয়ে অথবা ওপরে বর্ণিত যে কোন উপায়ে খাওয়া যায়। সুতরাং, আপনি যদি গর্ভবতী হন বা একটি শিশুর পরিকল্পনা করেন, তবে আপনার ডায়েটে এই ফলটি অতিঅবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করুন।
কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে-
কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবনতা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছু ত্বীন ফল জলে ফুটিয়ে নিন এবং সেই ফলটি কিছুদিন ধরে পান করুন। ত্বীন ফল এর ভিজিয়ে রাখা পানি কিডনিতে পাথর প্রতিরোধে সহায়তা করে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে বর্তমান যুগে একটা মরণ ব্যধি হলো ক্যান্সার। যার এখন পর্যন্ত কোন স্বয়ংসম্পূর্ণ চিকিৎসা বের হয় নেই। এই মরণ ব্যধি ক্যান্সার প্রতিরোধে ত্বীন ফল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় উঠে এসেছে যে সকল নারীরা তাদের ডায়েটের অংশ হিসেবে রোজ ত্বীন গ্রহন করেন তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে। ত্বীন ফল এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কোলন ক্যান্সার রোধেও এটি বেশ কার্যকর।
হাড়ের রক্ষণাবেক্ষণে ত্বীন ফল-
মজবুত এবং স্বাস্থ্যকর হাড়ের জন্য ক্যালসিয়াম অপরিহার্য। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদানটি আমাদের দেহে উৎপাদন হয় না। তাই একমাত্র খাদ্যাভাসের মাধ্যমেই শরীরে এর চাহিদা পূরন করতে হয়। ত্বীন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের ক্যালসিয়াম। যা আমাদের দেহের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরন করে হাড়কে করে তুলবে মজবুত ও শক্তিশালী। এছাড়াও এটি পটাসিয়ামের ভাল উৎস হওয়ায় হাড়ের ক্ষয় রোধেও উপকারী। ওজন কমাতে সাহায্য করে- বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে, এই অসাধারণ ফলটি ওজন কমাতে যেমন সাহায্য করবে তেমনি চর্মসার ব্যক্তির জন্যও বয়ে আনবে সুসংবাদ। ত্বীন ফলের উচ্চ ফাইবার দেহের অতিরিক্ত ক্যালোরি হ্রাস করতে সক্ষম।
অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট গুণসম্পন্ন-
ত্বীন ফলের রয়েছে অসাধারণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতা। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্রিয়া আপনার শরীরকে জীবাণু মুক্ত রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও প্লাজমার লিপোপ্রোটিন বৃদ্ধিতেও এর বেশ সুনাম রয়েছে।
গলা ব্যাথা উপসম করে-
গলা ব্যাথা কমাতে সহায়তা করবে ত্বীন ফল। এটি গলা ব্যাথা কেবল উপশমই করেনা, তা প্রতিরোধেও কাজ করে। এটি ভোকাল কর্ডের জন্যও বেশ উপযোগী। টনসিলের নিরাময়েও ব্যবহার করা হয় ত্বীন ফল।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়-
ত্বীন ফল দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ম্যাকুলার অবক্ষয়ের কারনে বয়স্কদের দর্শন শক্তি লোপ পায়। এতে উপস্থিত ভিটামিন এ ম্যাকুলার অবক্ষয় রোধ করে এবং দৃষ্টি ক্ষমতাকে উন্নত করে। এছাড়াও রেটিনাল ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সক্ষম এই ফল।
ত্বকের সৌন্দর্যে ত্বীন-
বাড়তি বয়সের ছাপ হিসেবে মুখে ফুটে উঠে বলিরেখার মত যত সমস্যা। এক গবেষণায় জানা যায় ত্বীন ত্বকের বলিরেখা দূর করতে বেশ কার্যকর। এটি ত্বকে গভীর থেকে কাজ করে ফলে ব্রণ ও ব্রনের দাগ দূর করতেও এর জুরি নেই। ভিটামিন সি এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্রিয়া ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বককে সুন্দর ও কোমল করে তুলে।
চুলের পরিচর্যায়-
কেবল সুস্বাস্থ্যেই নয়, চুলের যত্নেও ত্বীন এর বিকল্প নেই। চুল পরা কমাতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে এটি। কারন এতে আছে চুলের জন্য উপকারী ভিটামিন সি,ই ও ম্যাগনেসিয়াম। চুলের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে এর খ্যাতি বেশ পুরোনো। এটি স্ক্যাল্পের ময়েশ্চার ধরে রাখে।