বাসা বাড়ির বিদ্যুৎ ইউনিট কত ২০২৪। কি কি কারণে বিদ্যুৎ বিল বেশী ইউনিট ওঠে? এবং বিদ্যুৎ ইউনিট বের করার নিয়ম?
বাসা বাড়ির বিদ্যুৎ ইউনিট
১। কিভাবে ইউনিটের হিসেব করতে হবে
(মোট ওয়াট X মোট ঘন্টা ) ÷ ১০০০ = ইউনিট।
বা, (100 W X 10 Hr.) ÷ 1000 = 1 Unit.
অর্থাৎ, ১০০ ওয়াটের একটি লাইট অথবা একটি ফ্যান
অথবা একটি টিভি ১০ ঘন্টা চললে ১ ইউনিট বিদুৎ খরচ হয়।
[(1kWh = 1 unit (kwh হলো কিলো ওয়াট আওয়ার)
1hp = 746watt
Power, P = VIcosϕ (Single phase)
Power, P = √3VIcosϕ (Three phase)
1000W = 1kW
h = time in hour
kw কে সময় (ঘন্টা) দিয়ে গুণ করলে গুনফল ইউনিট হবে।
২। বিদ্যুৎ বিল হিসাব
বিদ্যুৎ বিল হিসাব করার জন্য প্রথমে একটি নিয়ম অনুসরণ করতে হবে এবং পরে তা বাসাবাড়িতে বা যে কোন স্থানে বিদ্যুৎ বিল হিসাব করার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
নীট বিল = এনার্জি বিল + মিটার বিল
এনার্জি বিল = এক মাসে ব্যবহিত ইউনিটের পরিমাণ (kWh) * প্রতি ইউনিটের মূল্য
মিটার বিল = ডিমান্ড চার্জ + সার্ভিস চার্জ
ডিমান্ড চার্জ = ১৫ টাকা পার কিলোওয়াট
সার্ভিস চার্জ = ১০ টাকা সিঙ্গেল ফেজের জন্য, ৩০ টাকা থ্রী ফেজের জন্য
ভ্যাট = নেট বিলের সাথে ৫% যোগ
নির্দিষ্ট সময় এর ভেতর বিল পরিশোধ করতে না পারলে জরিমানা = নেট বিলের সাথে ৫% যোগ।
৩। বাসা বাড়িতে আমরা যে ধরনের লোড ব্যবহার করে থাকি
লাইট সাধারণত = ১৫-২০০ ওয়াট
ফ্যান সাধারণত = ৫০-৮০ ওয়াট
টেলিভিশন = ২৫-১০০ ওয়াট
ল্যাপটপ = ২০-৬০ ওয়াট
রেফ্রিজারেটর = ৮০-২০০ ওয়াট
এসি = ১০০০-৩০০০ ওয়াট
আয়রন = ৫০০-১০০০ ওয়াট
পাম্প মোটর = ১/৮ থেকে ৩ হর্স পাওয়ার
ডেস্কটপ কম্পিউটার = ৮০-২৫০ ওয়াট ও ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, এই লোডগুলো ব্যবহার করবো এবং তা এই ওয়াটের ভিতরেই। এই লোড এবং ওয়াটগুলো দেওয়া হয়েছে সকলকে সাধারণ একটা ধারণা দেবার জন্য।
৪। লোডের হিসাব
উপরোক্ত আলোচনা আমরা দেখেছি বিদ্যুৎ বিল হিসাব করার জন্য একটি নিয়ম। সেখানে উল্লেখ আছে, নীট বিল = এনার্জি বিল + মিটার বিল।
এনার্জি বিল জানার জন্য এবার প্রথমে আমাদের জানতে হবে এক মাসে ব্যবহিত ইউনিটের পরিমাণ (kWh) ও প্রতি ইউনিটের মূল্য। তাহলে আমাদের ৯০% কাজ শেষ।
এক মাসে ব্যবহিত ইউনিটের পরিমাণ জানার জন্য আমাদের লোডের হিসাব করতে হবে অর্থাৎ কি কি লোড আমরা ব্যবহার করছি ও সেই লোডগুলো কত ওয়াটের।
৫। লোডের হিসাব
যদি লোড ওয়াটে দেওয়া থাকে তাহলে সেটা W এর মান। এখানে W মানেই watt.
লোডে কারেন্ট এবং ভোল্টেজ মান দেওয়া থাকলে তা পাওয়ারের সূত্র দিয়ে বের করতে হবে। পাওয়ার এর সূত্র শুরুতে প্রথমে ইনভার্টেড কমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হর্স পাওয়ারে দেওয়া থাকলে 746 দিয়ে গুণ করে W মানে watt এ নিতে হবে।
W কে kW নিতে হবে অর্থাৎ w কে ১০০০ দিয়ে ভাগ করে কিলোওয়াট নিতে হবে।
kW কে সময় (ঘন্টা) দিয়ে গুণ করে ইউনিট বের করতে হবে।
৬। বাসা বাড়িতে বিদ্যুৎ বিলের হিসাবের নিয়ম
এবার একটি বাসাবাড়ির উদাহরণ উদাহরণ দেখবো যেখানে প্রতি মাসে কেমন বিল আসতে পারে।
উদাহরণ একটি বাসা বাড়িতে 80 watt এর দুটি ফ্যান, 40 watt এর 3 টি লাইট, 220V, 0.4A, 0.8pf এর একটি টেলিভিশন এবং 2hp এর একটি পানি তোলার মোটর দৈনিক গড়ে 6 ঘন্টা করে চলে। তাহলে ডিসিম্বর মাসের বিদ্যুৎ বিল কত টাকা হবে যদি প্রতি ইউনিটের মূল্য 6.5 টাকা করে হয়?
সমাধান–
80 ওয়াটের 2 টি ফ্যান 1 দিনে যে ওয়াট খরচ করবে = 80*2 = 160W
40 ওয়াটের 3টি লাইটের জন্য 1 দিনে যে ওয়াট খরচ করবে = 40*3=120W
1 টি টেলিভিশন এর জন্য 1 দিনে যে ওয়াট খরচ করবে P = VICosϕ = 2200.40.8 = 70.4W
2hp একটি মোটর 1 দিনে যে ওয়াট খরচ করবে 2*746 = 1492W
তাহলে 1 দিনে সর্বমোট যে ওয়াট খরচ হবে = (120W + 160W + 70.4W + 1492W) = 1842.4W
আমরা জানি ওয়াট কে 1000 দিয়ে ভাগ করলে কিলোওয়াট (kW) পাবো।
তাহলে ১ দিনে যে কিলোওয়াট খরচ হবে = 1842.4/1000 = 1.8424kW
আমাদের লোডগুলো কিন্তু সারাদিন ২৪ ঘন্টা চলবে না। শুধুমাত্র ৬ ঘন্টা চলবে যা আমরা উদাহরনে দেখেছি।
তাহলে ৬ ঘন্টা করে চললে = 1.8424*6 = 11.0544kWh
৭। পুরো মাসের মোট ইউনিট খরচ বের করবো।
ডিসেম্বর মাস = ৩১ দিনে তাহলে এই মাসে মোট ইউনিট খরচ হবে = 11.0544 * 31 = 342.686kWh (ইউনিট)
দেয়া আছে প্রতি ইউনিটের মূল্য 6.5 টাকা করে।
ঐ মাসের বিদ্যুৎ বিল হবে = 342.686*6.5 = 2227.46 টাকা।
৮। গাণিতিক নিয়মেই বের করার নিয়ম
নীট বিল = এনার্জি বিল + মিটার বিল
এনার্জি বিল = এক মাসে ব্যবহিত ইউনিটের পরিমাণ (kWh) * প্রতি ইউনিটের মূল্য
kWh এর মান পেয়েছি 342.686 kWh। ডেস্কোতে প্রতি ইউনিটের মূল্য নিচে চিত্রে দেওয়া আছে।
ইউনিট 342.686 kWh অনুসারে ছবিতে পার ইউনিট (টাকা) চতুর্থ (d) স্টেপ এ আছে। তাহলে ছবি অনুসারে আমরা বিদ্যুৎ বিলকে ভাগ করবো।
১ থেকে ৭৫ = ৭৫
৭৬ থেকে ২০০ = ১২৫
২০১ থেকে ৩০০ = ১০০
৩০১ থেকে ৩৪২.৬৮৬ = ৪২.৬৮৬
সর্বমোট = ৭৫+১২৫+১০০+৪২.৬৮৬ = ৩৪২.৬৮৬ ইউনিট
ঐ মাসের বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য এনার্জি বিল = (৭৫৩.৮) + (১২৫৫.১৪) + (১০০৫.৩৬) + (৪২.৩৮৬৫.৬৩) = ১৭০৩.৮২ টাকা।
সার্ভিস চার্জ = ১০টাকা
ডিমান্ড চার্জ = ৩০ টাকা
ভ্যাট = ৫%
মিটার বিল = ডিম্যান্ড চার্জ + সার্ভিস চার্জ = ৩০+১০ = ৪০ টাকা
মোট বিল = (১৭০৩.৮২ + ৪০) = ১৭৪৩.৮২ টাকা {ভ্যাট ছাড়া}
৫% ভ্যাট = ১৭৪৩.৮২ * ৫% = ৮৭.২৩ টাকা
মিটার ভাড়া ১P = ৪০
টাকা তাহলে নীট বিল = ১৭৪৩.৮২ + ৮৭.২৩ + ৪০ = ১৮৭১.০৫ টাকা
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ করতে না পারলে অতিরিক্ত মাশুল দিতে হবে ৫%।