যে আটটি পন্থা মেনে চললে বাড়বে আপনার স্মৃতি শক্তি
আমরা কাজের চাপে প্রায় সময়ই এটা-সেটা ভুলে যায়। এর কারণ আমাদের স্মৃতি শক্তির দূর্বলতা। যদি দীর্ঘ দিন ধরে এইভাবে চললে থাকে তাহলে তার পরিণাম কিন্তু ভয়ংকর। এমনটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। ঘুমের অভাব, প্রচন্ড মানুষিক চাপ, সুষম খাবার না খাওয়া এই স্মৃতি শক্তির দূর্বলতার অন্যতম কারণ। আজকের এই অলোচনা স্মৃতিশক্তির দুর্বলতার কারণ এবং তা প্রতিকার এর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
পরিমাণ মতো ঘুম-
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য পরিমিত ঘুম আবশ্যক। ঘুম যদি কম হয়ে থাকে তাবে তা বার্ধক্যের গতি কে ত্বরান্বিত করে। ঘুমের অনিয়ম এই ভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে মস্তিষ্ক প্রায় ৭ বছর পর্যন্ত বুড়িয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ এর ঘুম। ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং স্থিতিশীলতা বাড়ায়। চেষ্টা করবেন রাত ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ার। ৬-৮ ঘন্টা রোজ ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।।
নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন-
নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত হাঁটাচলা এবং ব্যয়াম শরীর এর পাশাপাশি ব্রেনকেও সুস্থ রাখে। সপ্তাহে কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট হাঁটার গড়ে তুলেন। এই অভ্যাস আপনাকে শারীরিক এবং মানুষিক উভয় দিক থেকে সুস্থ রাখবে।
খাদ্য তালিকায় বাদাম রাখুন –
বাদাম মস্তিষ্কের জন্য অনেক উপকারী একটি খাদ্য উপকরণ। পলিফেনলস ব্রেনের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কাজ করে। আখরোটে এই পলিফেনলস থাকে প্রচুর পরিমাণের। এছাড়াও চিনা বাদাম এবং কাজুবাদাম এ রয়েছে মেগা ৩, ওমেগা ৬ ফ্যাট, ভিটামিন বি ৬ এবং ভিটামিন ই। এগুলো স্মৃতি শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনার খাদ্য তালিকায় রোজ একমুঠো বাদাম রাখবেন।
খুঁজে নিন অবসর-
দীর্ঘদিন এর মানুষিক চাপ এবং উদ্বেগ আমাদের মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। অপনি যদি দীর্ঘ দিন ধরে মানুষিক চাপে থাকেন তাহলে নিজের জন্য অবসরের সময় রের করুন। অপনার মস্তিষ্ক কে অবসর দিতে পরিবার কে সময় দিন কিংবা পরিবার এর সাথে ঘুরে আসুন। এছাড়াও রিল্যাক্স এর জন্য যোগব্যায়াম এর অনুশীলন করুন। যোগব্যায়াম আপনার মানুষিক অস্থিরতা কমাতে সাহায্য করে।
রোজ নতুন কিছু করুন –
সৃজনশীলতা বিকশিত হয় এমন কাজ করার চেষ্টা করুন। রোজ একই ধরনের কাজ আপনার সৃজনশীলতার বিকাশ কে বাধা প্রদান করে। মস্তিষ্ক যেন নির্জীব না হয় এর জন্য রোজ নতুন কিছু শিখার জন্য সময় দিন।
বাছাই করে নিন সঠিক খাদ্য তালিকা –
আপনাদের খাবার থেকে প্রাপ্ত শক্তির ২০% খরচ হয় মস্তিষ্কের কাজে। সুতরাং মস্তিষ্কের বিকাশ এর উপর খাদ্যের ভূমিকা অনেক। সকুজ শাক-সবজিতে আছে ফলেট, ভিটামিন বি ৯, এবং লুটেনন নামক উপাদান যা আমাদের কগনিশনের পতন রোধ করে। এছাড়াও ফুলকপি এবং গাজরে রয়েছে প্রচুর ফলেট ও ক্যারটিনয়েড যা মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম করে তুলে। সামুদ্রিক মাছের তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের ওমেগা ৩ ফ্যাট যা মস্তিষ্কের জন্য খুব উপকারী। কালোজাম ও স্ট্রেরেরি ডিমেনশিয়া নির্মূল করে। এটি মস্তিষ্কে সংকেত আদান প্রদান এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উক্ত খাদ্য উপকরণ গুলো আপনার খাদ্য তালিকায় আজ থেকেই যুক্ত করে নিন।
অবসর সময়ে ব্রেন গেম খেলুন –
স্মার্ট ফোনের স্মার্ট গেম ছেড়ে ব্রেন গেম খেলুন। ভাল না লাগলেও এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে দাবা খেলুন। পেপার বা মোবাইলে ক্রসওয়ার্ড সমাধান করুন। একটি গবেষণায় জানা গেছে, মস্তিষ্কের রোগ ‘ডিম্যানশিয়া’-র থেকে রক্ষা করে এই ধরনের গেমগুলি।
পায়ের আঙুলের ম্যাসাজ-
প্রতিদিন পাঁচ মিনিট করে পায়ের আঙুল ম্যাসাজ করুন৷ প্রথমে আঙুলের ওপর থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে টিপে টিপে নীচের দিকে যান। এই ম্যাসাজ মস্তিষ্কের কোষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করে।