খতিয়ানে পিং মানে কি ২০২৩ । দং বলতে কি বুঝায়?

জমি জমার দলিলে বিভিন্ন প্রকার শব্দ ব্যবহার করা হয় কিন্তু এসব দুর্বোধ্য শব্দ আমরা বুঝতে পারি না – খতিয়ানে পিং মানে কি ২০২৩

নাল জমি মানে কি? সাধারনত নিচুঁ সমতল কৃষি জমি জমিকে নাল জমি বলে। বসতবাড়ী সংলগ্ন নাল জমিকে কোলা জমি বলে। মসজিদ বা কবরস্থান আলোকিত করার উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত নিষ্কর ভূমি। বসতবাড়ি সংলগ্ন সবজি চাষের জন্য উচুঁ ভিটি জমিকে পালাম ভূমি বলে।

ডি সি আর কি? ভূমি মালিকের নিকট হতে ভূমি কর আদায় করে যে নির্দিষ্ট ফরমে (ফরম নং-১০৭৭) ভূমিকর আদায়ের প্রমানপত্র বা রশিদ দেওয়া হয় তাকে দাখিলা বলে। ডি,সি,আর (DCR) কি ? ভূমি কর ব্যতিত অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায় করার পর যে নির্ধারিত ফরমে (ফরম নং-২২২) রশিদ দেওয়া হয় তাকে ডি, সি, আর বলে।

নামজারি কখন করা হয়? সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে নামজারির জন্য আবেদন করতে হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে মিউটেশন সহকারী পদের একজন দায়িত্বে থাকেন। নাজির পদের একজন নামজারির জন্য ফি জমা নেন। তহশিলদারেরা (সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা) নামজারির তদন্তের দায়িত্বে থাকেন।

মিদং অর্থ কি ।  পিং মানে কি / সরকারি স্ট্যাম্প বা কাগজমূলে কর্জদাতার কাছ থেকে টাকা ধার নেয়। বন্ধকী তমসুক মানে হলো বন্ধকনামা বা বন্ধকী বা বন্ধকী খত।

পর্চা কী? সরকারিভাবে জরিপ করা জমিজমার বিবরণসংবলিত সরকারি দলিলকে বলে ‘খতিয়ান’। এই খতিয়ানে থাকে মৌজার দাগ অনুসারে ভূমির মালিকের নাম, বাবার নাম, ঠিকানা, মালিকানার বিবরণ, জমির বিবরণ, মৌজা নম্বর, সীমানা প্রভৃতির হিসাব। আর এই খতিয়ানের অনুলিপিকেই বলা হয় পর্চা।

Caption: Land Act 1959

জমির দলিলপত্রে বহুল ব্যবহৃত কিছু শব্দের পূর্ণরূপ । বিতং = বিস্তারিত বিবরণ, কৈফিয়ত, বৃত্তাত অর্থে ব্যবহূত হয়।

  1. সাং = সাকিন, সাকিম। সাকিন বা সাকিম শব্দের অর্থ ঠিকানা, বাসস্থান।
  2. গং = অন্যরা, সমূহ। অমুক [ব্যক্তিনাম] ও অন্যান্য বা তার সহযোগীগণ।
  3. দং = দরুন, বাবদ, দখল।
  4. মোং = মোকাম। এর অর্থ আবাস, বাসস্থান হলেও মূলত বাণিজ্য স্থান।
  5. কিঃ = কিস্তি। কিন্তু শব্দটি দফা, বার, ক্ষেপ এই অর্থেও ব্যবহূত হয়।
  6. এজমালি/ইজমালি = যৌথ, সংযুক্ত, বহুজনের একত্রে।যেমন: এজমালি সম্পত্তি বলতে যৌথ মালিকাধীন সম্পত্তিকে বোঝায়।
  7. কিত্তা/ কিতা = আববি ‘ক্বত্বহ’ শব্দজাত। এর অর্থ অংশ, জমির ভাগ, পদ্ধতি।
  8. ছানি = আরবি শব্দ, অর্থ দ্বিতীয়বার। পুনর্বিবেচনার প্রার্থনা। যেমন: ছানি মামলা।
  9. নিম = ফারসি শব্দ। এর অর্থ অল্প, অর্ধেক, অধস্তন বা অধীন ইত্যাদি।
  10. ছোলেনামা = মীমাংসা, আপোষ/আপস। ছোলেনামা মানে আপস-মীমাংসাপত্র।
  11. জঃ = জমা। সাধারণ অর্থে ‘জমা’ বলতে সঞ্চিত, রাশীকৃত।
  12. নং = নম্বর বা সংখ্যা অর্থে বোঝানো হয়।
  13. পঃ = পঞ্চম বা পাঁচের স্থানীয় ভাষ্য।
  14. পোঃ = পোস্ট অফিস বা ডাকঘর বোঝানো হয়।
  15. মহঃ = মহকুমা। ব্রিটিশ আমলে জেলার একটি প্রশাসনিক অংশকেই মহকুমা বলা হতো।
  16. মুসাবিদা = খসড়া তৈরি করা। মুসাবিদাকারক মানে যিনি দলিল লেখেন।
  17. হিঃ = হিসাব শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ
  18. চৌঃ = চৌহদ্দি। চৌহদ্দি শব্দের অর্থ হচ্ছে চারধারের সীমানা।
  19. তঃ/তপঃ = তফসিল, তহশিল।
  20. তামাদি = ফারসি শব্দ। এর অর্থ নির্ধারিত সময়সীমা।
  21. বিতং = বিস্তারিত বিবরণ, কৈফিয়ত, বৃত্তাত অর্থে ব্যবহূত হয়।
  22. মাং/ মাঃ = মারফত। মারফত মানে মাধ্যম, অর্থাৎ যার হাত দিয়ে বা মাধ্যমে আদান-প্রদান করা হয়।
  23. সহঃ = সহকারী, যিনি কাজে সহযোগিতা করেন।
  24. সুদিখত = একশ্রেণীর বন্ধকী দলিল।
  25. তমঃ = তমসুক। আরবি শব্দজাত, যার অর্থ দলিল, ঋণ-স্বীকারপত্র বা খত। অর্থাৎ কর্জ গ্রহীতা যে লিখিত পত্র, বিশেষত
  26. হলফ = সত্য বলার জন্য যে শপথ করা হয়। হলফকারী মানে যিনি সত্যায়ন করেন।
  27. হলফ = সত্য বলার জন্য যে শপথ করা হয়। হলফকারী মানে যিনি সত্যায়ন
  28. খারিজ = সাধারণ অর্থে বাতিল করা হয়েছে এমন বোঝায়। ভূমি আইনে একজনের নাম থেকে অন্যজনের নামে জমির মালিকানা পরিবর্তন করে নেওয়াকে বোঝায়।
  29. মৌরাশি: পুরুষানুক্রমে কোনো ভূমি ভোগ দখল করাকে মৌরাশি বলে।
  30. বায়া (Vender): বিক্রেতা, বিক্রেতার সম্পাদিত দলিলকে বলে বায়া দলিল।
  31. তফসিল: কোনা জমি যে মৌজায় অবস্থিত সে মৌজার নাম, জে. এল. নং, খতিয়ান নং, দাগ নং, জমির শ্রেণী, পরিমাণ, জমির চৌহদ্দি বর্ণনা ইত্যাদি পরিচিতি সম্বলিত বিবরণকে ঐ জমির তফসিল বলে।
  32. মিনাহ (Deduction): কম, কমতি, জমি সিকস্তি হলে তার কর আদায় স্থগিত করাকে মিনাহ বলে।

জমির খতিয়ান কি?

খতিয়ান হলো দখল স্বত্বের প্রামাণ্য দলিল। এক বা একাধিক দাগের সম্পূর্ণ বা আংশিক ভূমি নিয়ে এক বা একাধিক ব্যক্তির নামে সরকার বা রাজস্ব অফিসার কর্তৃক যে ভূমি স্বত্ব প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। প্রতি খতিয়ানের একটি পৃথক পরিচিতি নম্বর থাকে। খতিয়ানকে “রেকর্ড অব রাইটস” বা “স্বত্বলিপি” বলা হয়। খতিয়ান হচ্ছে নিখুঁত মালিকানা স্বত্ব ও দখলী স্বত্বের প্রমাণ্য দলিল। খতিয়ানে তৌজী নম্বর, জে. এল. নম্বর, স্বত্বের বিবরণ, মালিকের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা থাকে।খতিয়ানের অপর পৃষ্ঠায় দাগ নম্বর, প্রত্যেক দাগের উত্তর সীমা (উত্তর দাগ), ভূমির শ্রেণী দখলকারের নাম, ভূমির পরিমাণ, হিস্যা, হিস্যা মতে পরিমাণ লেখা থাকে। উপযুক্ত আদালত কর্তৃক ভুল প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত খতিয়ান নির্ভূল হিসাবে গণ্য হতে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *