মেট্রোরেল ভাড়া ২০২২ । সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ সর্বোচ্চ ১০০ টাকা
বহুল অপেক্ষিত মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। মেট্রোরেলের যাত্রীদের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ২০ টাকা। আর উত্তরা হতে মতিঝিল স্টেশন পর্যন্ত ভ্রমণের জন্য ব্যয় হবে ১০০ টাকা।মেট্রোরেলে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া ধার্য করা হয়েছে ৫ টাকা।
মেট্রোরেলের ডিপোতে প্রদর্শনী এবং তথ্যকেন্দ্রের উদ্বোধনী
আজ মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে প্রদর্শনী এবং তথ্যকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় এসব তথ্য জানান সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মেট্রোরেলে পারিবারিক কার্ড ব্যবহারে বিশেষ সুবিধা
তিনি জানান, ধার্যকৃত ভাড়ার বাইরে যেসব যাত্রী সাপ্তাহিক, মাসিক, পারিবারিক কার্ড ব্যবহার করবেন, তাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের কাছ হতে কী হারে ভাড়া নেওয়া / আদায় করা হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়নি। তবে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা কোন প্রকার ভাড়া ছাড়া ( একদম ফ্রিতে) মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারবেন বলে জানান মন্ত্রী।
উত্তরা হতে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু
আগামী ডিসেম্বরে উত্তরা হতে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে সরকার। এই অংশে মোট ৯টি স্টেশন রয়েছে । আগারগাঁও হতে মতিঝিল পর্যন্ত আগামী বছরের শেষে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে । এই অংশে স্টেশন সংখ্যা রয়েছে সাতটি।
প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিনেও কার্ড রিচার্জ করা যাবে
মেট্রোরেল পরিচালনা ও দেখাশোনা করার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (DMTCL)। কোম্পানি তথ্য অনুযায়ী, সাপ্তাহিক, মাসিক, পারিবারিক কার্ড আগে হতে ক্রয় করতে হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিনেও কার্ড রিচার্জ করা যাবে। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় যাত্রীদের কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, অন্যথায় দরজা খুলবে না। পরবর্তীতে নেমে যাওয়ার সময় আবারও কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, অন্যথায় যাত্রী বের হতে পারবেন না।
অতিরিক্ত যাতায়াত করলে যাত্রীরা ঐ কার্ড দিয়ে দরজা খুলতে পারবেনা
আরেকটি কার্ড হবে অস্থায়ী, যা প্রতি যাত্রায় দেওয়া হবে। স্টেশন হতে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এ কার্ড ক্রয় করতে হবে। এটিও দেখতে স্মার্ট কার্ডের মতোই হবে। ভাড়ার অতিরিক্ত যাতায়াত করলে যাত্রীরা ঐ কার্ড দিয়ে দরজা খুলতে পারবেনা। সে ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের নিকট বাড়তি ভাড়া জমা দিয়ে বের হতে হবে।
প্রতি তিন মিনিট অন্তর অন্তর চলবে মেট্রোরেল
প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যাত্রী নিয়ে যাতায়াত শুরু হলে মেট্রোরেল ভোরে দুদিক হতে যাত্রা করবে। প্রাথমিকভাবে রাত ১২টা পর্যন্ত ট্রেন যাতায়াত করবে। শুরুতে ১০ মিনিট পর পর মেট্রোরেল চলবে। পর্যায়ক্রমে এক ট্রেনের সাথে অন্য ট্রেনের সময়ের পার্থক্য কমে আসবে। চূড়ান্তভাবে প্রতি তিন মিনিট অন্তর অন্তর মেট্রোরেল চলার কথা রয়েছে। শুরুতে দৈনিক ৪ লাখ ৮৩ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবেন।
প্রকল্প সূত্র জানিয়েছেন, একটি ট্রেনের ছয়টি কোচের মধ্যে দুই প্রান্তের দুটি কোচকে বলা হচ্ছে ট্রেইলর কার। এতে ড্রাইভার থাকবেন। এসব কোচে ৪৮ জন করে যাত্রী বসতে পারবেন। মাঝের চারটি কোচ হচ্ছে মোটরকার। এতে বসার ব্যবস্থা আছে ৫৪ জনের। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে যেতে পারবেন ৩০৬ জন যাত্রী। প্রতিটি কোচ সাড়ে ৯ ফুট চওড়া। মাঝখানের বিস্তীর্ণ জায়গায় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন।
বর্তমানে খরচ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা
শুরুর দিকে মেট্রোরেল প্রকল্পের খরচ ছিল প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এরপর খরচ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে খরচ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা। তারা ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। সরকার ব্যয় করছে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
সূত্র: যুগান্তর