Asset Distribution Rules bd । ছেলে মেয়ের মধ্যে সম্পত্তি ভাগাভাগির নিয়ম

জমি বা সম্পত্তি বাবা হোক বা মায়ের হোক একই নিয়মে বন্টন করা হবে-বোনের দ্বিগুন হারে ভাই প্রাপ্য হবেন– এমন নয় যে, মায়ের সম্পদ বিধায় ভাইয়ের অর্ধেক পাবে না-বাবা মায়ের সম্পত্তি বন্টনের নিয়ম

মায়ের সম্পত্তি ভাই বোনেরা ভাগ বের করে কিভাবে? মায়ের মৃত্যুর পর সম্পত্তি নিষ্ক্রিয় হওয়া পর্যন্ত ভাই ও বোনেরা সম্পত্তি ভাগ বাঁটতে না চেষ্টা করবেন। নিষ্ক্রিয় হওয়া পর সম্পত্তি বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যেমন আবাসিক সম্পত্তি, আদর্শ সম্পত্তি এবং অর্থ সম্পত্তি। সম্পত্তি নিষ্ক্রিয় হলে বাংলাদেশে আইন অনুযায়ী এর ভাগ বাঁটতে হবে। ভাই ও বোনের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ বাঁটার জন্য একটি পরিষ্কার উপায় নির্ধারণ করা উচিত। ভাই ও বোনের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ বাঁটার জন্য একটি মধ্যস্থ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বোন যা পাবে ভাই তার দ্বিগুণ হারে সম্পত্তি পাবেন। মনে রাখবেন হত্যাকারী কখনও সম্পদের উত্তরাধিকার হতে পারে না তা ছেলে হোক বা মেয়ে। পিতা মাতার হত্যাকারী সন্তান পিতার মাতার সম্পত্তি পায় না।

মায়ের সম্পত্তি ছেলে মেয়ে কে কতটুকু পাবে? আমাদের সমাজে প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে যে, মায়ের সম্পত্তি মেয়েরা বেশী পাবে। অর্থাৎ মায়ের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার হিসাবে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশী পরিমাণ সম্পত্তির অংশীদার হবে। মুসলিম আইনের ফারায়েজের বিধান অনুযায়ী কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার ছেলে সন্তান মেয়ে সন্তানের চেয়ে দ্বিগুণ সম্পত্তি অবশিষ্টাংশভোগী হিসাবে পায়। এখানে পিতার সম্পত্তি অথবা মাতার সম্পত্তি বলতে আলাদা কোন বিধান নেই। পিতা মারা গেলে তার সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে যেভাবে বণ্টন করা হবে মাতার সম্পত্তি ও সেই একই পদ্ধতিতে বণ্টন করা হবে।

মৃত মায়ের সম্পত্তি কিভাবে বন্টিত হয়? মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। পিতার সম্পত্তি যে হারে একজন কন্যা পেয়ে থাকে মায়ের সম্পত্তির ক্ষেতেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। কেউ কেউ মনে করেন মায়ের সম্পত্তি কন্যা অনেক কম পায় ব্যাপারটি ঠিক হয়।

উত্তরাধিকার নির্ণয় / সরকারি ক্যালকুলেটর ব্যবহারে করে আপনি সহজেই সম্পত্তি বন্টন করতে পারবেন

তথ্য ইনপুট দিয়ে ফলাফল ক্লিক করলেই কে কত অংশ পাবে তা দেখতে পারবেন। একজন সাধারণ মানুষও সহজেই সম্পত্তি বা সোনা বা যে কোন সম্পদ উত্তরাধিকারীর মধ্যে বন্টন করতে পাবেন।

বাবা মায়ের সম্পত্তি বন্টনের নিয়ম । মায়ের নামে সম্পত্তি ভাই-বোনেরা কি সমান অংশ পায়?

Caption: Portion Calculator

ওয়ারিশ সম্পত্তি বন্টন ২০২৪ । সম্পত্তি বা জমির কতটুকু কে পাবে চলুন জেনে নিই

  • স্বামীর অংশঃ স্বামী ২ ভাবে মৃত স্ত্রীর সম্পত্তির ভাগ পেয়ে থাকে। স্বামী কখনো তাঁর মৃত স্ত্রীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে না। মৃত স্ত্রীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকলে স্বামী স্ত্রীর সম্পত্তির ১/৪ অংশ পাবে। মৃত স্ত্রীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান কেউই না থাকলে স্বামী স্ত্রীর সম্পত্তির ১/২ অংশ পাবে।
  • স্ত্রীর অংশঃ স্ত্রীও ২ ভাবে তাঁর মৃত স্বামীর সম্পত্তি পেয়ে থাকে। বিধবা স্ত্রী কোন ভাবে তাঁর স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে না। মৃত স্বামীর কোন সন্তান বা তাঁদের পুত্রের সন্তান থাকলে স্ত্রী, স্বামীর সম্পত্তির ১/৮ অংশ পাবে। যদি মৃত স্বামীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান কেউই না থাকলে তবে স্ত্রী, স্বামীর সম্পত্তির ১/৪ অংশ পাবে। স্ত্রী একাধিক হলেও সবাই মিলে ১/৪ অংশ সমান ভাগেই পাবে।
  • বাবার অংশঃ বাবা তাঁর মৃত সন্তানের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ৩ ভাবে হয়ে থাকে। যদি মৃত সন্তানের পুত্র, পুত্রের পুত্র বা পুত্রের পুত্রের পুত্র এভাবে যতই নিচের হোক না কেন যদি থাকে, তবে মৃত সন্তানের পিতা পাবেন সন্তানের সম্পত্তির ১/৬ অংশ। যদি মৃত সন্তানের শুধু মাত্র কন্যা সন্তান বা তাঁর পুত্রের কন্যা সন্তান থাকলে তবে পিতা সন্তানের সম্পত্তির ১/৬ অংশ পাবেন। এই ক্ষেত্রে কন্যাদের ও অন্যান্যদের দেয়ার পর অবশিষ্ট যে সম্পত্তি থাকবে তাও পিতা পাবেন। আর যদি মৃত সন্তানের কোন পুত্র-কন্যা বা পুত্রের সন্তান কিছুই না থাকে তাবে বাকী অংশীদারদের তাঁদের অংশ অনুযায়ী দেয়ার পর অবশিষ্ট যা থাকবে তার সবটুকুই বাবা পাবেন। তবে মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান ও বাবা কেউ না থাকলে তাঁর সম্পত্তি তাঁর জীবিত ভাই বা ভাইরা পাবে। আবার ভাই না থাকলে তাঁর ভাইয়ের সন্তানরা পাবে।
  • মায়ের অংশঃ মা তাঁর মৃত সন্তানের সম্পত্তি পেয়ে ৩ ভাবে পেয়ে থাকে। – মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নেরই হোক থাকলে অথবা যদি মৃত ব্যক্তির আপন, পূর্ণ বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাইবোন থাকলে তবে মাতা ছয় ভাগের এক ভাগ (১/৬) পাবেন। মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নের হোক না থাকলে এবং মৃত ব্যক্তির যদি একজনের বেশি ভাই বা বোন না থাকে তবে মাতা তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) পাবেন। কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নের হোক না থাকলে অথবা কমপক্ষে দুইজন ভাইবোন না থাকলে এবং যদি মৃত ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রীর অংশ বাদ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে, তার তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) মাতা পাবেন। মৃত ব্যক্তির এক ভাই থাকলেও মাতা ১/৩ অংশ পাবেন।
  • পুত্র সন্তানের অংশঃ মৃত ব্যক্তির ছেলে বা ছেলেরা সকল ক্ষেত্রেই সম্পত্তি পায়। যেক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির ছেলে ও মেয়ে রয়েছে সেই ক্ষেত্রে ছেলে বা ছেলেরা, মেয়ে বা মেয়েদের চেয়ে দ্বিগুন সম্পত্তি পাবে। মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে মাতাপিতা ও স্বামী-স্ত্রী নির্দিষ্ট সম্পত্তি পাওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি ছেলে মেয়ের মধ্যে বন্টন করা হবে। তবে মেয়ে না থাকলে অংশীদারদের অংশ দেয়ার পর অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে বাকী সম্পূর্ণ সম্পত্তি ছেলে বা ছেলেরাই পাবে।
  • কন্যা সন্তানের অংশঃ উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে কন্যারা তিনভাবে মাতাপিতার সম্পত্তি পেতে পারে। একমাত্র কন্যা হলে তিনি রেখে যাওয়া সম্পত্তির দুই ভাগের এক ভাগ বা (১/২) অংশ পাবে। একাধিক মেয়ে হলে সবাই মিলে সমানভাগে তিন ভাগের দুই ভাগ বা (২/৩) অংশ পাবে। যদি পুত্র থাকে তবে পুত্র ও কন্যার সম্পত্তির অনুপাত হবে ২:১ অর্থাৎ এক মেয়ে এক ছেলের অর্ধেক অংশ পাবে। যাহোক কন্যা কখনো মাতাপিতার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয় না। পিতা মারা গেলে তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় যে সম্পত্তি পেতেন তা তাঁর মৃত্যুর পরও তাঁর উত্তরাধিকারীরা পাবে। ১৯৬১ সালের আগে এই নিয়ম ছিল না। পরে একটি আইন পাস করে এই নিয়ম চালু করা হয়। কারণ এতিমরা যাতে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হয় সেই সম্পর্কেও ইসলামে নির্দেশ দেয়া আছে। আবার মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে কোন সন্তানকে ত্যাজ্য বলে ধরা হয় না। ফলে সম্পত্তি থেকে তাকেও বঞ্চিত করা যায় না। তবে কোন ব্যক্তি রেজিস্ট্রিকৃতভাবে সম্পত্তি দান বা হস্তান্তর করে গেলে এবং সন্তানকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে সন্তানের অংশ উল্লেখ না করে গেলে ঐ সন্তান আর সম্পত্তি পাবে না। সৎ ছেলে-মেয়ে, সৎ বাবা বা সৎ মায়ের সম্পত্তি পায় না। একই ভাবে সৎ বাবা বা সৎ মা, সৎ ছেলে-মেয়ের সম্পত্তি পায় না।

মায়ের সম্পত্তি বন্টনের উদাহরণ দিতে পারেন?

হ্যাঁ। চলুন দেখে নিই। মুসলিম ফারায়েজের সম্পত্তি বণ্টনের সকল পর্যায়ে সমস্তরের পুরুষ মহিলাদের চেয়ে দ্বিগুণ সম্পত্তি পায়। দুটি ক্ষেত্রে মহিলা পুরুষের চেয়ে দ্বিগুণ সম্পত্তি পাওয়ায় ওমরিয়াতান নীতি প্রয়োগ করে পুরুষের অংশ দ্বিগুণ করা হয়েছে। যেমন – কোন ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর তার পিতা + মাতা + স্বামী / স্ত্রীর কেউ জীবিত থাকলে স্বামী ১/২ অংশ, মাতা ১/৩ অংশ এবং পিতা অবশিষ্টাংশ ভোগী হিসেবে ১/৬ অংশ পাওয়ার কথা। কিন্তু পবিত্র কুরআনের সূরায়ে নিসার ১১ নং আয়াতে বলা হয়েছে প্রত্যেক পুরুষ মহিলাদের চেয়ে দ্বিগুণ সম্পত্তি পাবে। উল্লেখিত উদারণে দেখা যাচ্ছে মৃত ব্যক্তির মাতা পিতার চেয়ে দ্বিগুণ সম্পত্তি পাচ্ছে। পবিত্র কুরআনের বিধানকে বাস্তবায়নের জন্য ওমরিয়াতান নীতি প্রয়োগ করে স্বামী ১/২ অংশ, মাতা ১/৬ অংশ এবং পিতা ২/৬ অংশের বিধান করা হয়েছে।

https://reportbd.net/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *