মানসিক চাপ । অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণ ও লক্ষণ এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উপায়

অতিরিক্ত মানসিক চাপ হলে কি ধরনের সমস্যা দেখা দেয় 

মানসিক চাপ কাকে বলে? অতিরিক্ত মানসিক মানুষের মানসিক চাপ হলো মানসিক স্তম্ভক বা পরিস্থিতি যা কোনও বিষয়ে মানসিক চলমান তথা স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে। এটি কম বা বেশি স্থায়ী হতে পারে এবং এর কারণে মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত হতে পারে। মানসিক চাপ সম্পর্কে কিছু সাধারণ কারণ হতে পারে যেমন পরিবারের সমস্যা, ব্যক্তিগত সমস্যা, কর্মজীবনের চাপ এবং সামাজিক পরিবেশের মাঝে থাকা বিভিন্ন অস্থিরতা। মানসিক চাপ সেই অবস্থার নাম যা কম বা বেশি সমস্যার কারণে মানসিক বা শারীরিক কাজকর্মে অক্ষমতা বা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের  উপায় 

১) মানুষের ব্যাপারে বেশি আগ্রহী হবেন না। কে কী করছে সে বিষয়ে মাথা ঘামানো নিজের মানসিক চাপ বৃদ্ধির একটি কারণ। আরেকটি সমস্যা হবে, অন্যের বিষয় নিয়ে মাথা ঘামালে নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করার মনোভাব সৃষ্টি হবে। টাকা-পয়সা, সামাজিক অবস্থান, পদমর্যাদা, গাড়ি, বাড়ি, অলংকার, পোশাক, সৌন্দর্য ইত্যাদি দিক থেকে তখন মানসিক চাপ অনুভব করবেন। তাই আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন তা নিয়ে খুশি থাকুন আর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। তাহলে হৃদয়ে পরম প্রশান্তি অনুভব করবেন ইনশাআল্লাহ।

২) কাউকে নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি করবেন না। কে কী করছে সে বিষয়ে মাথা ঘামানো নিজের মানসিক চাপ বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারন।

৩) আপনার যতটুকু দায়িত্ব ও কর্তব্য ততটুকু পরম আন্তরিকতার সাথে পালন করুন। আপনার সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব কাঁধে তুলতে যাবেন না।

৪) মানুষের সাথে অতিরিক্ত সম্পর্ক মানসিক চাপের অন্যতম কারণ।

কাজেই আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশী, অধীনস্থ সকলের সাথে সীমিত সম্পর্ক রাখুন। সম্পর্ক যত ব্যাপক হবে আপনি ততটাই পেরেশানির সম্মুখীন হবেন।

৫) সাধ্যের বাইরে নিজের অর্থ-সম্পদ কারো জন্য উজাড় করে দিবেন না। যারা কৃত্রিমভাবে নিজের সব কিছুকে উৎসর্গ করে দেয় তারা মানুষের কৃতজ্ঞতা পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে।

৬) আজকের দিনটিকে ভালভাবে উপভোগ করুন। আগামী কাল কী হবে সেটা ঈশ্বর এর উপর ছেড়ে দিন। দুনিয়াবী বিষয়ে আগামীর চিন্তায় অস্থির হয়ে মানসিক চাপ বৃদ্ধি করবেন না।

৭) প্রতিদিন একান্ত নির্জনে কিছু সময় কাটান। এ সময় ঈশ্বর এর নিকট প্রার্থনা করুন।

৮) জ্ঞানীদের জীবনী পড়ুন, তাদের উপদেশ ও মূল্যবান বাণীগুলো পড়ুন।

৯) জীবনে যত বিপদ ও সমস্যাই আসুক সহজভাবে মেনে নিন। আল্লাহর লিখিত তাকদিরের বাইরে কিছুই ঘটে না। বিপদাপদেই হয়ত কল্যাণ রয়েছে যা বাহ্যিক দৃষ্টিতে আপনার দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।

১০) মনে আনন্দ বজায় রাখুন, মানুষের সাথে দেখা-সাক্ষাতে হাসতে শিখুন।

১১) শরীরকে তার হক দিন। প্রয়োজনীয় খাবার, ঘুম, বিশ্রাম গ্রহণ করা জরুরী।

১২) দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজের লিস্ট তৈরি করে আগেরটা আগে পরেরটা পরে করুন। অগোছালো কার্যক্রম মানসিক অস্থিরতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ তৈরি করে।

১৩) প্রতিটি কাজ ১০০ পার্সেন্ট নির্ভুল করতে হবে এই চিন্তা মাথা থেকে সরাতে হবে।

১৪) অতিলোভ করবেন না। অল্পে তুষ্টি মানসিক শান্তির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি তাকওয়ারও পরিচায়ক।

১৫) আপনার যতটুকু দায়িত্ব ও কর্তব্য ততটুকু পরম আন্তরিকতার সাথে পালন করুন। আপনার সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব কাঁধে তুলতে যাবেন না। অনুরোধে ঢেঁকি গিলবেন না। অন্যথায় আপনাকে অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকতে হবে।

১৬) মানুষের সাথে অতিরিক্ত সম্পর্ক মানসিক চাপের অন্যতম কারণ। তাই আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশী, কলিগ, ক্লাসমেট ইত্যাদির সাথে সীমিত সম্পর্ক রাখুন। সম্পর্ক যত ব্যাপক হবে ততই আপনি নানা বাধ্যবাধকতার জালে আটকে যাবেন।

১৭) অতিলোভ করবেন না। অতিলোভী ব্যক্তি অর্থ-কড়ি, ধন-দৌলত, পদমর্যাদা ইত্যাদি বৃদ্ধির চিন্তায় বিভোর থাকে। যদি সামান্য টাকা-পয়সা হাতছাড়া হয় বা চাকুরীর প্রমোশন থেকে বঞ্চিত হয় তবে তার হাহুতাশ দেখে কে? সুতরাং অল্পে তুষ্টি মানসিক শান্তির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি তাকওয়ারও পরিচায়ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *