রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে পার্থক্য ২০২৪ । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কিভাবে নির্বাচিত হয়?
প্রধানমন্ত্রী ৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে দায়িত্ব সরাসরি তদারকী করেন এবং সারা দেশ-কে নিয়ন্ত্রণ ও মাথায় রাখতে হয় – প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য ২০২৪
প্রধানমন্ত্রীর কাজ কি? –প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী পরিষদ শাসিত শাসন ব্যবস্থায় সরকার প্রধান হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। তাছাড়া তিনি এই ব্যবস্থাতে সংসদ বা সংসদের নেতার ভূমিকাও পালন করেন। অনেক শাসনব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের নিয়োগ বা বহিষ্কার করার অধিকারও রাখেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অবগত থাকেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে পার্থক্য কি? প্রধানমন্ত্রী হল মন্ত্রিবর্গের মধ্যে যিনি প্রধান। আমাদের দেশের সরাসরি জনগণ এর ভোটে নির্বাচিত হন। অন্যদকে রাষ্ট্রপতি হল রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি যিনি আমাদের দেশের জনগণের প্রত্যেক্ষ ভোট এ নির্বাচিত হন না। রাষ্ট্রের সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি হলেও প্রধানমন্ত্রীই সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে তার দায়িত্ব পালন স্পিকার স্বয়ং করে থাকেন।
রাষ্ট্রপতি যদি বুঝতে পারেন যে, যুদ্ধ, বহিঃশুত্রুর আক্রমন বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের বাংলাদেশ বা এর কোনো অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক নিরপত্তা সম্মুখীন হয় তাহলে তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। জরুরি অবস্থাকালে সংবিধানের কিছু বিধান ও মৌলিক অধিকারসমূহ স্থগিত থাকে। সংসদ নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে পধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী তার পছন্দমতো মন্ত্রীদের নিয়ে সরকার গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কারও পরামর্শ গ্রহন করেন না। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে মন্ত্রী,প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীদের নিয়োগ ও তাদের দপ্তর বণ্টন করেন।রাষ্ট্রপতি এটর্নি জেনারেল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মহাহিসাব রক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, রাষ্ট্রদূত, হাই কমিশনারদের নিয়োগ দান করেন। রাষ্ট্রপতি সংসদ আহবান করেন। প্রতিটি নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশনের ও প্রতি নতুন বছরের অধিবেশনের সূচনায় রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণদান করেন। রাষ্টপতির ভাষণের উপর সংসদ আলোচনা করে। সময়ে সময়ে তিনি সংসদে বাণীও প্রেরণ করেন। সংসদ ভেঙ্গে গেলে বা অধিবেশন না না থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রয়োজন হলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন। এ অধ্যাদেশ সংসদের আইনের মতো ক্ষমতাসম্পন্ন হয়্।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে পার্থক্য । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও বিচার সংক্রান্ত কাজঃ রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ করেন। প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কারও পরামর্শ গ্রহন করেন না। সুপ্রিম কোর্টের অন্য বিচারপতিগণও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হন। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা রয়েছে যেকোনো দন্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার। কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত যে কোনো দণ্ড তিনি মার্জনা করতে পারেন। সরকারি ব্যয়সংক্রান্ত কোনো বেল সংসদে উত্থাপন করতে হলে তাতে রাষ্ট্রপতির সুপারিশ লাগে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিভাগসমূহের সর্বাধিনায়কতা রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যাস্ত। তিনি বহিঃশুত্রুর আক্রমন মোকাবিলার জন্য যেকোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা করতে পারেন।
Caption: info source
প্রধানমন্ত্রী সরাসরি যে মন্ত্রণালয় বা বিভাগ দেখবেন । প্রতিমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন জনাব নসরুল হামিদ
- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
- প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
- সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ
- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়
- সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৬. শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কাজ কি?
প্রধানমন্ত্রী পুরো শাসনব্যবস্থায় কার্যকর নেতৃত্ব প্রদান করেন। সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেন। সকল নির্বাহী ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নামে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। বিচার, অর্থ, পররাষ্ট্র এবং শাসন বিষয়ক সকল কাজ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও মতামত অনুযায়ী পরিচালিত হয়। ২ আইন সংক্রান্ত কাজঃ আইন প্রণয়নে প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জাতীয় সংসদে সরকারি বিলের পৃষ্ঠপোষকতা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে সংসদের আইন প্রণয়ন বিষয়ক অধিকার পরিচালিত হয়। প্রধানমন্ত্রী সংসদের নেতা। প্রধানমন্ত্রী সংসদের সাফল্যজনক পরিচালনায় কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। বিরোধী দলের আস্থা অর্জন ও সহযোগিতা পেতে তিনি নেতৃত্বদান করেন। সংসদে সকল সদস্যদের অধিকার সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব অনেক। প্রধানমন্ত্রী আর্থিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও নির্দেশক্রমে অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রণয়ন ও সংসদে বিল উত্থাপন করেন। অর্থমন্ত্রীর বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক নীতিরই প্রতিফলন ঘটে। প্রধানমন্ত্রী্র পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রশাসনিক ব্যয় নির্বাহে অর্থ মঞ্জুরী প্রদান করেন।
রাষ্ট্রীয় কাজের সমন্ব্য়ে প্রধানমন্ত্রীঃ রাষ্ট্রীয় কাজের সমন্ব্য় প্রধানমন্ত্রী করে থাকেন। সকল মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও অধিদপ্তরের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় নেতৃত্ব প্রদান করেন। তিনি জাতির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী সরকারি দলের নেতা। সংসদ ও সংসদের বাইরে দলের নীতিনির্ধারণ ও কর্মসূচী বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী দেশের শাসন পরিচালনা, আইন প্রণয়ন, অর্থব্যবস্থার ওপর তদারকি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সর্বক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। তিনিই সংসদ নেতা এবং শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু।