খতিয়ান অনুসন্ধান । জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম ২০২৩

খতিয়ান জমির একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট।  মূলত জমির মালিকানা স্বত্ব রক্ষা ও রাজস্ব আদায়ের জন্য জরিপ বিভাগ কর্তৃক প্রতিটি মৌজার জমির এক বা একাধিক মালিকের নাম, পিতা বা স্বামীর নাম, ঠিকানা, দাগ নম্বর, ভূমির পরিমাণ, ভূমির ধরন, ভূমির অংশ, খাজনা ইত্যাদি বিবরণসহ যে ভূমি স্বত্ব প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে।

আলোচ্য সূচীঃ

  1. খতিয়ান কীভাবে বের করতে হয়
  2. খতিয়ন কত প্রকার
  3. খতিয়ান কেন করা হয়
  4. খতিয়ান বের করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
  5. খতিয়ান বের করতে কত খরচ লাগে

খতিয়ান বের করার নিয়ম

প্রথমে আপনাকে সেটেলমেন্ট অফিসে গিয়ে খতিয়ান এর জন্য আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ যথাযথ ভাবে আবেদন করার কিছু দিন পর আপনি আপনার খতিয়ানটি পেয়ে যাবেন। তবে এক্ষেত্রে দালালদের থেকে সাবধান থাকবেন। সেটেলমেন্ট অফিসের অনেক দালাল এর খপ্পরে পড়ে অনেকে প্রচুর অর্থ খরচ করেও সময়মত তাদের খতিয়ান পাচ্ছেন না। আবার খতিয়ান এ কোন জালিয়াতি আছে কি না তা বোঝার জন্য ভলিউম নাম্বার ভালো ভাবে মিলিয়ে নিবেন। ভলিউম নাম্বার এ মিল না থাকলে বুঝতে হবে যে খতিয়ান এ জালিয়াতি আছে। এসকল বিষয় খেয়াল রেখে আপনি সেটেলমেন্ট অফিস থেকে খতিয়ান তুলতে পারবেন।

খতিয়ান তুলতে যেসকল কাগজপত্র লাগবে

খতিয়ান তুলতে হলে কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে। খতিয়ান তুলতে হলে আপনাকে একটি আবেদন পত্র নিতে হবে। আবেদনের সাথে নির্ধারিত কোর্ট ফি জেলা প্রশাসকের সংশ্লিষ্ট ই-সেবাকেন্দ্র থেকে ক্রয় করে আবেদনপত্রের সাথে যুক্ত করে জেলা সেবা কেন্দ্রে জমা দিতে হবে। এ ছাড়াও আবেদনের সাথে কোর্ট ফি সংযুক্ত করে ডাকযোগে জেলা ই-সেবাকেন্দ্রে জমা দেওয়া যায়।

খতিয়ান বের করতে কত টাকা লাগে

খতিয়ান তোলার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি রয়েছে। খতিয়ান উত্তোলন ফি দিয়ে আপনাকে খতিয়ান তুলতে হবে। খতিয়ান ফি খুবই কম। নিচে খতিয়ান ফি কত টাকা তা দেয়া হল।

খতিয়ান উত্তোলন ফি জরুরি কোর্ট ফি-২০ টাকা, ডেলিভারী ফি-২ টাকা
সাধারণ কোর্ট ফি ১০ টাকা, ডেলিভারী ফি- ২ টাকা।

খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি খতিয়ান রয়েছেঃ

বাংলাদেশে সাধারণত ৪ ধরণের খতিয়ান রয়েছে। যথাঃ-

১. সি. এস খতিয়ান
২. এস. এ খতিয়ান
৩. আর. এস খতিয়ান
৪. বি. এস খতিয়ান / সিটি জরিপ

নিচে এই ৪ (চার) ধরনের খতিয়ান সম্পর্কে আলোচনা করা হলঃ

১. সি. এস খতিয়ানঃ ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ সরকার জরিপ করে যে খতিয়ান তৈরি করে তাকে সি. এস খতিয়ান বলা হয়। আমাদের দেশে এটিই প্রাথমিক খতিয়ান হিসাবে বিবেচিত।

২. এস. এ খতিয়ানঃ পাকিস্তান আমলে ১৯৫০ সালে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের চতুর্থ অধ্যায় এর ১৭ হতে ৩১ ধারা মতে ১৯৫৬-৬০ সালের দিকে যে খতিয়ান তৈরি করা হয় তাকে এস. এ (State Acquision) খতিয়ান বলে।

৩. আর. এস খতিয়ানঃ বাংলাদেশ সরকার পূর্বের তৈরিকৃত খতিয়ানের ভুল ত্রুটি সংশোধন করার জন্য নতুনভাবে উদ্যোগ নিয়ে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা আর. এস (Renisional Survey) খতিয়ান নামে পরিচিত।

৪. বি. এস খতিয়ান / সিটি জরিপঃ ১৯৯৮-৯৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত চলমান জরিপকে বি. এস খতিয়ান বা সিটি জরিপ বলে। এই খতিয়ান প্রস্তুতের কার্যক্রম এখনো চলছে।

খতিয়ান মূলত জরিপ বিভাগ কর্তৃক সরেজমিনে জমিতে গিয়ে জমির মালিকানা বিবরণ ও নকশা তৈরী করে যে রেকর্ড প্রকাশ করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। খতিয়ানের খাজনা আদায়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে।

যদি আপনি জমির দাগ থেকে খতিয়ান বের করতে চান তাহলে আপনাকে সরাসরি যেতে হবে সেটেলমেন্ট অফিসে। এবং সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়ার পর আপনি সেখান থেকে ম্যানুয়ালি খতিয়ান নম্বর বের করতে পারবেন।

One thought on “খতিয়ান অনুসন্ধান । জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম ২০২৩

  • 21/12/2022 at 9:41 am
    Permalink

    বুযরত খতিয়ান নম্বর দিয়ে মাঠ পর্চা উত্তোলন কিভাবে করবো???

    আর শুধু এস.এ খতিয়ান নম্বর ও এস.এ দাগ নম্বর জানা আছে।। কিন্তু ডিপি খতিয়ান নম্বর জানা নেই।। ডিপি খতিয়ান নম্বর অনুসন্ধানের জন্য করনীয় কি??
    আর আমি কিভাবে মাঠ পর্চা উত্তোলন করতে পারবো???

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *