জমির নামজারি বা খারিজ করার নতুন নিয়ম 2022

নতুন নিয়মে জমির নামজারি বা খারিজ করতে হয়-এখন ঘরে বসেই অনলাইনে নামজারির আবেদন করা যায়- ভুমি মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত নির্দেশনা বা সার্কুলার 2022

ভুমি মন্ত্রণালয় থেকে জমির নামজারি বা খারিজ করার নতুন নির্দেশনামূলক সার্কুলার প্রকাশ করা হয়েছে । গত ১৭ ই জুলাই  নতুন সার্কুলারটি প্রকাশিত হয়। যা্র স্বারক নম্বর ৩১.০০.০০০০.০৫৭.৩১.০০১.২২.৫। এখানে জমি খারিজ করতে পূর্বের যেসকল সমস্যাগুলো ছিল তা অনেকাংশেই দূর করা হয়েছে। আজকে আমরা আলোচনা করবো জমির নামজারি বা খারিজ করার নতুন নির্দেশনা সম্পর্কে। ই নামজারি ফি ২০২২ । জমি খারিজ করার জন্য কত টাকা পেমেন্ট করতে হয়?

সূচীপত্রঃ

  1. ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা/সার্কুলার
  2. কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলেও আবেদন গ্রহন করতে হবে
  3. নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আবেদনকৃত খারিজটির কাজ সম্পন্ন করতে হবে
  4.  আবেদন না-মঞ্জরের সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে হবে

ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত সার্কুলারে নিম্ন বর্ণিত বিষয়গুলে উল্লেখ করা হয়:

  • ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে ই-নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে ই-নাসজারি সিস্টেম নতুন ফরম চালু করেছে। এই নতুন সিস্টেমে বলা হয়েছেে কোন তথ্য বা কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলেই নামজারি আবেদন না-মঞ্জর করা যাবেনা। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে হবে।
  • বিগত সময়ে দেখা গেছে তুচ্ছ কারণেই খারিজ আবেদন না-মঞ্জর করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে নামজারির আবেদন না-মঞ্জর করতে চাইলে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করতে হবে।
  • নামজারি আবেদনের হার্ডকপি জমা না দেওয়ার কারণে আবেদনটি না-মঞ্জর করা যাবেনা। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাগরিকের নামজারি আবেদন সংশ্লিষ্ট সকল দলিলপত্রাদি ও প্রমানকসহ প্রথম থেকে শেষ ধাপ পর্যন্ত সকল সিদ্ধান্ত সিস্টেম হতে প্রিন্ট করে হার্ড নথি হিসেবে সংরক্ষণ করবেন।
  • অনেক ক্ষেত্রে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীর মতামতের ভিত্তিতে নামজারি না-মঞ্জর করা হয়। এতে আবেদনকারী জানতেও পারেনা কেন তার আবেদনটি বাতিল হয়েছে। তাই এখন থেকে কেন আবেদনটি বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা ‍দিতে হবে। এক কথায় জবাবদিহিতা থাকতে হবে। আইনের দূষ্টিতে গ্রহণযোগ্য তথ্যের ঘাটতি বা গড়মিলের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে না-মঞ্জর আদেশে উল্লেখ করতে হবে।
  • দলিলের নামের সংগে জাতীয় পরিপত্রের নামের পার্থক্য থাকলেই নামজারি আবেদন বাতিল করা যাবেনা। নামের ভিন্নতা থাকলে প্রস্তাবিত মালিকানার নামের সমর্থনে গ্রহণযোগ্য প্রমানক (যেমনঃ পাসপোর্টের কপি/জন্ম নিবন্ধন/বিভিন্ন ইউটিলিটি বিলের সত্যায়িত অনুলিপি ইত্যাদি) দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা যেতে পারে।
  • ই-নামজারি আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট দলিলপত্রাদি যাচাই করে সঠিক প্রতিয়মান হলে পক্ষগণের শুনানির প্রয়োজনীয়তা নেই। ই-নামজারি আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জটিল কোন বিষয় না থাকলে অনলাইনে শুনানি গ্রহন করা যেতে পারে।
  • আবেদনকারীর মোবাইল ফোন নম্বর সঠিক না থাকলে বা বিবাদির মোবাইল ফোন নম্বর না থাকলে আবেদন না মঞ্জর করা যাবেনা। আবেদনকারীকে সঠিক নম্বর দেয়ার নির্দেশ দিতে হবে। যাতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শুনানির প্রয়োজনে এসএমএস করতে পারে।
  • আবেদনকৃত জমির উপর আদালতে মামালা থাকলে আবেদনটি বাতিল করা যাবেনা। কেননা অনেক সময় দেখা যায় উক্ত জমির ক্রয়-বিক্রয়ের উপর আদালত কোন নিষেধাজ্ঞা দেননি।
  • আবেদনকৃত জমির শ্রেণীর বিষয়ে সর্বশেষ রেকর্ড বা দলিলে ভিন্ন ভিন্নভাবে উল্লেখ থাকলেই নামজারি না-মঞ্জর করা যাবেনা। এক্ষেত্রে ভূমি অফিসে রক্ষিত রেকর্ডপত্র ও বাস্তবতা যাচাই করতে হবে। তবে দলির সম্পাদনে রাজস্ব ফাঁকি পরিলক্ষিত হলে জেলা প্রশাসক বরাবর পত্রটি প্রেরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
  • আবেদনে প্রদত্ত দাখিলাতে কোন শ্রেণীর জমিতে ভূমি কর কম পরিশোধ করার জন্য নামজারি আবেদন বাতিল করা যাবেনা। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে কম পরিশোধিত কর পরিশোধ করার সুযোগ দিয়ে আদেশ প্রদান করতে হবে।
  • আবেদনের সাথে যদি কোন তথ্য ঘাটতি/গরমিল অথবা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনে কোন কারণে না-মঞ্জরের সুপারিশ থাকে, তাহলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবেদন না-মঞ্জরের পূর্বে শুনানির আদেশে উক্ত বিষয়ে বাদীকে প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা বা ঘাটতি তথ্যপ্রদানের সুযোগ দিতে হবে।
  • সর্বশেষ নামজারির ভিত্তিতে নামজারি করা হলে পূর্ববর্তী দলিল বা দলিলসমূহের অনুলিপি দাখিলের প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে সর্বশেষ রেকর্ডের পর প্রথম নামজারির ক্ষেত্রে সর্বশেষ রেকর্ড হতে জমির মালিকানা হস্তান্তর  দলিলের কপি ধারাবাহিকভাবে ই-নামজারি সিস্টেমে আপলোড করতে হবে।

এখন থেকে নামজারি আবেদন ইচ্ছে করলেই না-মঞ্জর বা বাতিল করা যাবেনা। নামজারি আবেদন বাতিল করতে চাইলে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পস্ট কারণ দেখাতে হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে সময় ও সুযোগ দিতে হবে। যাতে সে আবেদনে যে সকল ঘাটতি/গরমিল রয়েছে তার সমাধান করতে পারে।

খারিজ করার সময় সীমা ২০২৩ । জমির নামজারির বিস্তারিত জানুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *