বাংলাদেশ অকটেন ও পেট্রোলের চাহিদা ২০২২। পেট্রোল-অকটেন উৎপাদন করবে বাংলাদেশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে  দেখা দিয়েছে জ্বালানি তেলের ভয়াবহ সংকট। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। তাই বর্তমানে দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে  জ্বালানি তেলের মূল্য। এই পরিস্থিতিতে অকটেন-পেট্রোলের চাহিদার সম্পূর্ণটাই দেশে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়।

অকটেন-পেট্রোল উৎপাদনে চারটি প্রতিষ্ঠানকে  কনডেনসেট আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার

মন্ত্রণালয়ের এক তথ্যের মাধ্যমে জানা গেছে, দেশে অকটেন-পেট্রোল উৎপাদনের জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানকে গ্যাসক্ষেত্রের তলানি অথবা কনডেনসেট আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে এই কনডেনসেটে উৎপাদিত অকটেন-পেট্রোলের মূল্য চার মাসেও ঠিক করা যায়নি। যার ফলে বিনিয়োগকারীরা অনেকটাই উদ্বিগ্ন।

আড়াই হাজার কোটি টাকার বৈদাশিক মুদ্রা সাশ্রয়

বাংলাদেশে যদি অকটেন-পেট্রোলের প্রয়োজনের/চাহিদার পুরোটা  উৎপাদন করা যায় তবে এ খাতে প্রতি বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বৈদাশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে । এমটাই মণে করেন জ্বালানি বিশ্লেষকগণ। আন্তর্জাতিক বাজারে  মন্দার এই সময়টাতে আমদানি হ্রাস করে পণ্য দেশে উৎপাদন করা গেলে তা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলে ও মণে করেন জ্বালানি বিশ্লেষকগণ।

বাংলাদেশে অকটেন-পেট্রোলের চাহিদা বছরে প্রায় ৯ লক্ষ টন

বাংলাদেশে অকটেন-পেট্রোলের চাহিদা প্রতি বছরে প্রায় ৯ লক্ষ টন। এর মধ্যে প্রায় চার লক্ষ টন দেশের নানা  গ্যাসক্ষেত্রে থেকে পাওয়া কনডেনসেট হতে উৎপাদন করা হয়। বাকি ৫ টন বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় । এই ৫ টন আমদানি করতে প্রতি বছরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসির) খরচ হয় বড় অংকের ডলার।

অকটেন-পেট্রোল চাহিদার পুরোটাই চারটি কোম্পানির মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব

এ বিষয়ে পারটেক্স পেট্রোল ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রুবেল আজিজ সঙ্গে কথা বলে জানা যায় , শুল্ক-করসহ বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিতে পারার কারণে অকটেন-পেট্রোল বিক্রয় করা যাচ্ছে না। দেশে অকটেন-পেট্রোলের চাহিদার পুরোটাই চারটি কোম্পানির মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব বলে তিনি জানান। এর মাধ্যমে জ্বালানি সংকট লাঘবের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা ও সাশ্রয় হবে, তাতে করে দেশের অর্থনীতি ও আরো শক্তিশালী হবে।

বৈদেশি মুদ্রা সাশ্রয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার

বৈদেশি মুদ্রা সাশ্রয়ে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, কীভাবে জ্বালানি সাশ্রয় করা যায় বর্তমানে সরকার সে বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অকটেন-পেট্রোল নেওয়ার জন্য আদেশ প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে ।

সরকার যদি বেসরকারি খাত থেকে অকটেন-পেট্রোল ক্রয় করে, তাহলে দেশে স্থানীয়ভাবে তেল উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

বেসরকারি উদ্যোক্তারা নানা সময়ে বেশ কিছু দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন, যা নিয়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর সমাধান করতে পারবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সংকট মোকাবিলা করার জন্য দেশে কনডেনসেট হতে পেট্রোল-অকটেন উৎপাদন

রাাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি সংকট ক্রমবর্ধমান ভাবে  বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য দেশে কনডেনসেট হতে পেট্রোল-অকটেন উৎপাদন করতে উদ্যোক্তাদের উৎসাহ প্রদান করার সময় এসেছে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

তাদেরই একজন ম তামিম।তিনি জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশোধিত তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, আবার হ্রাস পাচ্ছে। যার কারনে দিন দিন জ্বালানির মূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয়ভাবে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্য উৎপাদন করতে পারলে দেশ ও দেশের জনগণ  লাভবান হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *