দলিল সংশোধন ২০২৩। দলিল রেজিস্ট্রিনে এবং সংশোধনে সরকারি ফি কত?

দলিল রেজিস্ট্রিনে এবং সংশোধনে সরকারি খরচ

 

 

১। দলিল সংশোধন করার নিয়ম – জমির দাগ, খতিয়ান, মৌজা, চৌহদ্দি বা নাম ভুল হলে তা কিভাবে সংশোধন করা যায়?

জমি বা ফ্ল্যাট বা অন্য কোন স্থাবর সম্পত্তির দলিল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে তা সংশোধন করা যায়-তবে সংশোধনী মাইনর বা মেজর সেটি বিবেচ্য বিষয়  দলিল সংশোধন করার নিয়ম

 

২। জমির দলিলে ভুল বা ভ্রম কি?

দলিলের মূল কাঠামো বা স্বত্বের কোন পরিবর্তন ঘটবে না সেরূপ ভুল সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট সাবরেজিস্ট্রার বরাবরে আবেদন করা যাবে। সাব-রেজিস্ট্রার এই ধরনের ছোট-খাটো ভুল সংশোধন করতে পারেন। এটাকে ভ্রম সংশোধনী দলিল বলা হয়।

 

৩। দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার পর কি ভুল সংশোধন করা যায়?

রেজিস্ট্রিকৃত দলিলে কোন ভুল বা বিচ্যুতি ধরা পড়লে তা পুনরায় একটি সংশোধনী দলিল করে সংশোধন করা যায়। যে দলিলের মাধ্যমে পূর্ববর্তী দলিলের করনিক ভুল সংশোধন করা হয়, তাকে ভ্রম সংশোধন দলিল বলে। পূর্ববর্তী দলিলের করণিক ভুল (clerical mistake) বা (bonafide mistake) সংশোধন করা যায় এ দলিলের মাধ্যমে, তবে এতে অবশ্যই দলিলের পক্ষ সমূহের উভয় পক্ষের সম্মতি ও উপস্থিত হওয়া লাগে। মনে রাখতে হবে, দলিলে অনিচ্ছাকৃত বানান ত্রুটি, টাইপিং ত্রুটি, সম্পত্তির বিবরণে ভুল ইত্যাদি জড়িত সংশোধন দলিলের মাধ্যমে সম্পত্তি সংক্রান্ত নথিতে কেবলমাত্র ত্রুটিযুক্ত ত্রুটি সংশোধন করা যেতে পারে। আইনী ভুল থাকলে এবং যদি মূল দলিলের মৌলিক প্রকৃতিটি পরিবর্তন হবে এমন কিছু হলে তা ভ্রম সংশোধন দ্বারা সংশোধিত হবে না।

 

৪। রেজিস্ট্রিকৃত দলিল সংশোধণে কখন মামলা করতে হয়? 

জমি রেজিস্ট্রি করার পর অনেক সময় দেখা যায় দলিলে কোন জায়গায় হয়তো ভুল হয়েছে। দলিল রেজিস্ট্রির পর তাতে দাগ, খতিয়ান, মৌজা, চৌহদ্দি বা নামের বড় ধরনের কোন ভুল ৩ বছরের মধ্যে ধরা পড়লে তা খুব সহজেই সংশোধন করা যায়। এরূপ ভুল হওয়ার ৩ বছরের মধ্যে দেওয়ানি আদালতে দলিল সংশোধনের মামলা করতে হবে। ৩ বছর পর এরূপ মামলা তামাদির দ্বারা বারিত হয়ে যায়। তাই তখন আর সংশোধন মামলা করা যায় না, তবে ঘোষণামূলক মামলা করা যায়। এরূপ মামলার রায়ই হল সংশোধন দলিল। রায়ের ১ কপি আদালত হতে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার এর নিকট পাঠানো হলে সাব-রেজিস্ট্রার উক্ত রায়ের আলোকে সংশ্লিষ্ট ভলিউম সংশোধন করে নিবেন, ফলে নতুন করে কোন দলিল করার আর কোন প্রয়োজন নেই (সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ৩১ ধারা)।

 

৫। দলিল সংশোধন মানে কি নতুন করে দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে হবে? না নতুন করে কোন দলিল করার আর কোন প্রয়োজন নেই-

১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩১ ধারায় বলা হয়েছে,যেক্ষেত্রে প্রতারণা অথবা পক্ষগণের পারস্পরিক ভুলের জন্য কোন লিখিত দলিল প্রকৃত অর্থে পক্ষগণের উদ্দেশ্য প্রকাশ করে না, সেক্ষেত্রে দলিলের যে কোন পক্ষ অথবা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি দলিলটি সংশোধনের জন্য মামলা দায়ের করতে পারে।

 

৫। দলিল সংশোধন ফি কত?

 

দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ কত হবে?

রেজিস্ট্রেশন ফি মাত্র ১০০ টাকা

১. স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে হবে ৩০০ টাকা।

২.  ২০০ টাকার স্টাম্পে হলফনামা।

৩. এন- ফি। বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিন শত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা তার অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা। আর ইংরেজি ভাষা হলে ২৪ টাকা।

৪. স্ট্যাম্প শুল্ক মওকুফ চাইলে স্ট্যাম্প আইন, ১৮৯৯ এর ১৬ ধারা মোতাবেক ২০ টাকার কোর্টফি সহ আবেদন করতে হবে।

 

৬. সাব-রেজিস্টার কি দলিলের ভুল সংশোধন?

পারেন। অশুদ্ধ দলিল হলে আপনি যার কাছ থেকে জমি কিনেছেন তাকে বলুন রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ভ্রম সংশোধনী দলিল করে দিতে কারণ জমি রেজিস্ট্রি করিয়ে দেওয়ার সময় দাতা একটি হলফনামা সম্পাদন করে যে, দলিলে বর্ণিত কোন তথ্য ভুলভাবে লিপিবদ্ধ হইয়া থাকিলে তজ্জন্য আমি/আমরা দায়ী হইব এবং আমার/ আমাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা করা যাইবে। হস্তান্তরিত জমি সম্পর্কে কোন ভুল, অসত্য বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করিয়া থাকলে প্রয়োজনে নিজ খরচায় ভুল শুদ্ধ করিয়া ক্ষতিপূরণসহ নুতন দলিল প্রস্তুত ও রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে বাধ্য থাকিব। দলিলের মূল কাঠামো বা স্বত্বের কোন পরিবর্তন ঘটবে না সেরূপ ভুল সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার বরাবরে আবেদন করা যাবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *