বিদেশ যেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজন । বিদেশ যেতে কত টাকা লাগে?

বিদেশ যেতে ৫-১০ লক্ষ টাকা লাগে না-বৈধভাবে বিদেশ যেতে ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা লাগতে পারে-বৈদেশিক সার্কুলার সেটিই বলে – বিদেশ যেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজন

পাসপোর্ট কি? পাসপোর্ট হলো সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যাক্তির জাতীয়তার পরিচয় প্রদান করার পাশাপাশি তাকে দেশের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে থাকে যা একটি দেশের সরকারকর্তৃক জারি করা হয়ে থাকে ।এটি আন্তর্জাতিক ভ্রমনের সময় বাহকের তার জাতীয়তা ও পরিচয় প্রত্যয়িত করতে হয় ।একটি পাসপোর্টে সাধারণত বাহকের নাম, জন্মের তারিখ ও স্থান, ছবি, স্বাক্ষর, এবং অন্যান্য চিহ্নিতকরণের তথ্য থাকে। এই পাসপোর্টের আবার নির্দিষ্ট সময় মেয়াদ আছে।

পাসপোর্ট তৈরির নিয়ম কি? তাই আপনি যদি বিদেশে যেতে চান তাহলে আপনি প্রথমেই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করুন।পাসপোর্টের আবেদন ফরম এর জন্য আপনি আপনার নিটস্থ পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন বা অনলাইনে সরকারি ওয়েবসাইটেও পেয়ে যাবেন। সরকারি ওয়েবসাইটের লিংক www.dip.gov.bd

ভিসা সংগ্রহ ও যাচাই করা নিয়ম কি? একজন মানুষ যে দেশে যেতে চান সেই দেশের সরকারের অনুমতি কে ভিসা বলা হয়ে থাকে। ভিসা হচ্ছে সাধারণত পাসপোর্টের একটি পৃষ্ঠায় দেয়া হয়।চাকরির জন্য দেয়া ভিসায় সেই দেশে কাজ করার অনুমতি দেয়া থাকে এটা কে ওয়ার্ক পারমিট বলে। ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিটের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। চাকরির জন্য বিদেশ যেতে চাইলে প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে ভিসায় কাজ করার অনুমতি আছে কি না? ভিসা ছাড়া কেউ বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে বিমানবন্দরেই আটক করা হয়। এজেন্সি বা আত্মীয় স্বজন যার মাধ্যমেই ভিসা সংগ্রহ করেন নাহ কেন তা বৈধ কিনা সেটি যাচাই করুন। ভিসা যাচাই করার জন্য অভিবাসন ইচ্ছুক ব্যাক্তি বাংলাদেশে অবস্থতি সেই দেশের দূতাবাস অথবা বিএমইতে খোজ নিতে পারেন। অথবা অনলাইনে যাচাই করে নিতে পারেন লিংকে ক্লিক করুন

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যে বিষয়গুলো দেখা হয় -সাধারণ শারীরিক পরীক্ষা, মলমূত্র পরীক্ষা, এক্স-রে পরীক্ষা

মেডিকেল রিপোর্ট কি? চাকরির জন্য বৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার আগে সব বিদেশগামী ব্যক্তিকে মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়।তাই বিদেশ যেতে হলে মেডিকেল রিপোর্ট এর প্রয়জোন পরবে। যে দেশে যেতে চান সেই দেশের নিয়ম অনুযারী আপনাকে মেডিকেল সনদ দিতে হবে।মেডিকেলের পরীক্ষায় অযোগ্য হয় তাহলে ভিসা দেয়া হয় না।আর শ্রমিক গ্রহণকারী দেশের দূতাবাস নির্ধারিত কোন মেডিকেল সেন্টারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়া নাকি বিদেশ যাওয়া যায় না? দেশে বৈধভাবে টাকা পাঠানো জন্য অর্জিত টাকা সঠিকভাবে সঞ্চয় করার জন্য কর্মজীবি হিসেবে দেশ ছাড়ার আগেই আপনাকে অবশ্যই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন। একটি অ্যাকাউন্ট আপনার নামে অর্থাৎ আপনি এবং আরেকটি আপনার পরিবারের বিশ্বস্ত এক জন সদস্যের নামে। এ যৌথ অ্যাকাউন্টে আপনি শুধু আপনার পরিবার চালানোর খরচ বা তার থেকে সামান্য বেশি অর্থ পাঠাবেন। আর একটি একাউন্ট খুলবেন নিজের নামে। আপনি বিদেশে কাজ করে উপার্জিত অর্থ থেকে আপনার পরিবার পরিচালনার খরচ পাঠানোর পর, বিদেশে আপনার চলার খরচ শেষে যদি বাড়তি কিছু অর্থ থাকে তাহলে সেটা নিজের নামের অ্যাকাউন্টে জমা করবেন।

What is Work Permit? চাকরির চুক্তিপত্র বা ওয়ার্ক পারমিট

  1. কর্মজীবি হয়ে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে চাকরির চুক্তিপত্র হাতে পাওয়ার পর তা আসল কিনা তা পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত এবং এতে উল্লেখিত সকল বেতন-ভাতা, অন্যান্য শর্ত ও সুবিধাদি বুঝে নিয়ে স্বাক্ষর করা বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রয়োজনীয় ধাপ।
  2. চুক্তিপত্র ছাড়া কোন চাকরি করলে নিয়োগ কর্তা আপনার সাথে খারাপ আচারন বা নিয়মের বাহিরে কাজ করাতে চাইলে কোন আইনত ব্যবস্থা নেয়া যায় না বিধায় যেকোনো চাকরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে চুক্তিপত্র বুঝে নিয়েই তবেই স্বাক্ষর করা খুবই জরুরি বিষয়।
  3. আপনি যে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে চাকরির আবেদন করেছেন তারাই আপনাকে চাকরির চুক্তিপত্র পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে।
  4. তবে আপনি যদি কোন থার্ড পার্টির (বন্ধু বা পরিচিত কেউ বা আত্মীয়) মাধ্যমে চাকরির ব্যবস্থা করে থাকেন তাহলে সে ব্যক্তির কাছ থেকে চুক্তিপত্র হাতে পেয়ে যাবেন। তবে থার্ড পার্টি বা দালাল দিয়ে চাকরির ব্যবস্থা না করাই ভাল। ভিসার মত চুক্তিপত্রও চেকিং (চুক্তিপত্র সঠিক কিনা তা যাচাই) হয় এবং সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস দ্বারা সত্যায়িত করতে হয়।
  5. আপনি যে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে চাকরি পাবেন তারাই আপনাকে চুক্তিপত্র সত্যায়িত করার ব্যবস্থা করে দেবে। ঢাকায় অবস্থিত জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি অফিসের ওয়ানস্টপ সার্ভিস ডেস্ক থেকে চুক্তিপত্র চেকিং-এর সেবা বিনা খরচে করে দেয়া হয়। এছাড়া এ সেবা পেতে ‘বায়রা’ (বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি) অফিসেও যোগাযোগ করতে পারেন।

বিদেশ যেতে কি মেডিকেল করতেই হয়?

হ্যাঁ। প্রথমে আপনাকে মেডিকেল সেন্টারে কুপন দেখিয়ে টাকা জমা করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষার ফলাফল কবে, কখন পাবেন তা মেডিকেল সেন্টার থেকে জানাতে হবে। আপনি যে দেশে কাজ করতে চান সে দেশের দূতাবাসে কাছে গিয়ে কাজের ভিসা ও চুক্তিপত্র দেখিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কুপন সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়া রিক্রুটিং এজেন্সি গুলো সাধারণত বিদেশ অভিবাসী চাকরি প্রার্থীদের জন্য কুপন সংগ্রহ সহ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে থাকে। বিদেশ যাওয়ার জন্য মেডিকেল করতে ২,১০০/- টাকা খরচ হয়। তবে এ খরচ বিদেশ যাওয়ার জন্য নির্ধারিত ২০,০০০/- টাকার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হয়ে থাকে।

স্মার্ট কার্ড বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড কি?

কর্মজীবি হিসেবে বিদেশ যেতে আপনাকে বাধ্যতামূলক ভাবেই বিএমইটি থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হবেই। আপনি যে বাংলাদেশ থেকে কর্মী হিসেবে অন্য দেশে যাচ্ছেন যেতে চাচ্ছেন তার আনুষ্ঠানিক সরকারি স্বীকৃতি হলো এই বহির্গমন ছাড়পত্র বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড। এটি এক ধরনের কম্পিউটার এর চিপ সংযুক্ত কার্ড, যেখানে একজন কর্মী হিসেবে আপনার যাবতীয় তথ্য যেমনঃ আপনার পাসপোর্টের তথ্য, আঙ্গুলের ছাপ, আপনি যে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন তাদের লাইসেন্স নম্বর ইত্যাদি দেয়া থাকে। স্মার্ট কার্ড হাতে পেতে দুটি প্রয়োজনীয়

অঙ্গীকারনামা লাগে? অনলাইন থেকে অঙ্গীকারপত্র সংগ্রহ করতে হবে এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে নিজের সব তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প কাগজে প্রিন্ট করতে হবে এবং স্বাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিতে হবে। অনলাইন থেকে আপনি একটি অনাপত্তিপত্র সংগ্রহ করে নিবেন এবং তারপর কম্পিউটারের মাধ্যমে নিজের সব তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প কাগজে প্রিন্ট করে নিবেন এবং স্বাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিতে হবে। অনলাইন থেকে একটি দরখাস্ত সংগ্রহ করে নিয়ে নিবেন। কম্পিউটারের মাধ্যমে নিজের সব তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করে প্রিন্ট করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *