রুকইয়াহ চিকিৎসা কী? এবং PDF রুকইয়াহ চিকিৎসা কীভাবে করে?

রুকইয়াহ চিকিৎসা কীভাবে করতে হয়

 

 

রুকইয়াহ চিকিৎসা ধারণা PDF

 

 

 

১. রুকইয়াহ চিকিৎসা কী?

আমরা রুকইয়াহ শব্দের সঙ্গে পরিচিত না হলেও আমাদের দেশের মানুষ ঝাড়ফুঁক শব্দটির সঙ্গে বেশ পরিচিত। তো আসুন সংক্ষিপ্তভাবে জেনে নেই রুকইয়াহ কী?

রুকইয়াহ চিকিৎসা হলো একটি চিকিৎসা পদ্ধতি এবং আল্লাহ ﷻ তাআলার কাছে প্রার্থনার এক বিশেষ নিয়ম। বদনজর, জিন, যাদু টোনা, কুফরী ,বান ,ব্লাক ম্যাজিক, বিয়ে বন্ধ বা আটকে রাখা, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টির যাদু, শারীরিক ও মানসিক  ইত্যাদি সমস্যার জন্য কুফুর বা শিরক মুক্ত কোরআন সুন্নাহ অনুযায়ী একটি চিকিৎসা পদ্ধতির নাম হলো রুকইয়াহ চিকিৎসা।

 

২. রুকইয়াহ চিকিৎসা কীভাবে করতে হয়?

রুকইয়াহ চিকিৎসা নেওয়ার দুইটি পদ্ধতি রয়েছে

১.সরাসরি রুকইয়াহ করা।

২. সেল্ফ রুকইয়াহ করা।

 

১. সরাসরি রুকইয়াহ হলো

রুগি রাক্বির সামনে বসে থাকবে আর রাক্বি রুগির কানের কাছে উচু আওয়াজে কোরআনের রুকইয়াহর  আয়াত,হাদীসে বর্ণিত দোয়া এবং ইত্যাদি জায়েজ দোয়া গুলো তেলাওয়াত করতে থাকবেন। রুগির যদি জিনের সমস্যা থাকে তাহলে হয়তো জিন হাজির হবে অথবা পালিয়ে যাবে। জিন হাজির হলে রাক্বী জিন কে চলে যেতে বলবেন। যদি সহজে যেতে না চায় তাহলে আল্লাহ ﷻ হর সাহায্যে চলে যেতে বাধ্য করবেন। আর যদি হাজির না হয়ে পালিয়ে যায় তবে আলহামদুলিল্লাহ কারণ শত্রুর মোকাবেলা না করাই ভালো। জিন শয়তান হচ্ছে মানুষের শত্রু।

আর যদি জিনের সমস্যা না থাকে শুধু জটিল যাদু টোনার সমস্যা থাকে। তখন শুধু যাদু ও বান ধ্বংসের বা বমির মাধ্যমে  বের করার চেষ্টা করা হবে। রুকইয়াহ করা পড়া পানি, মধু, কালোজিরা খাওয়াবেন  এতেই আস্তে আস্তে যাদুটোনা ধ্বংস হয়ে যাবে আল্লহর রহমতে। হয়তো বমিও হতে পারে যদি লাল, কালো ধরনের বমি হয়ে যায় তাহলে আলহামদুলিল্লাহ এতে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়। এরপরও সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া পর্যন্ত সেল্ফ রুকইয়াহ চালিয়ে যেতে হবে।

 

২. সেল্ফ রুকইয়াহ হলো

সেলফ (self) একটি ইংরেজি শব্দ। যার অর্থ হল নিজ/নিজে। সুতরাং, সেলফ রুকইয়াহ অর্থ হলো নিজে নিজে রুকিয়া করা। নিজের নিজেই যে রুকইয়াহ অথবা দুআ অথবা ঝাড়ফুঁক করে তাকেই সেলফ রুকইয়াহ বলে। সুতরাং সেল্ফ রুকইয়াহ মানে নিজে নিজে রাকি/চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রুকইয়াহ বা আমল করা।

 

৩. সেলফ রুকইয়াহতে যা প্রয়োজন হয় বা পালন করতে হয়।

দৈনিক নিয়মিত দুই আড়াই ঘন্টা কিছু অডিও শোনা। তিলাওয়াত করা,  পড়া পানি খাওয়া , পড়া পানি দিয়ে গোসল করা , বাড়িতে পানি ছিটিয়ে দেওয়া, বরই পাতার গোসল করা, ডিটক্স রুকইয়াহ করা, মধু, কালোজিরা ইত্যাদি খাওয়া।

 

৪. প্রথমে কোন সমস্যার জন্য রুকইয়াহ চিকিৎসা করবেন।

প্রথমে বদনজরের রুকইয়াহ করতে হবে তারপর জ্বিন/যাদুটোনা/ব্লাক ম্যাজিকের জন্য এরপর অন্যান্য সমস্যার জন্য রুকইয়াহ করবেন।

 

৫. যিনি রুকইয়াহ করেন/চিকিৎসা বা পরামর্শ দিয়ে থাকেন রাকি(চিকিৎসক বা ডাক্তার) বলে। আর যিনি নিজের জন্য রুকইয়াহ করান/রুকইয়াহ নেন বা পরামর্শ অনুযায়ী আমল করেন কিংবা কারো পরামর্শ ছাড়া নিজেই নিজের জন্য রুকইয়াহ করেন তিনি হচ্ছে রুগি/পেশেন্ট।

 

৬. সরাসরি রুকইয়াহ একবার করলেই কিভালো হয়ে যাবে?

জিন, যাদুটোনার বিষয়টা হলো ক্যানসারের মতো। দিন যতই যায় রোগ ততই ছড়ায়। আর রোগ যতই ছড়ায় সময়, সিডিউল ও সেশনও ততই বেশি লাগে। রোগ/সমস্যা বেশি থাকলে বা জটিল হলে একবারে ভালো না হলে আরো দুই একবার বা দুই এক সেশন সরাসরি রুকইয়াহ করা লাগতে পারে। তাই সরাসরি রুকইয়াহ কত সেশন লাগতে পারে এটা ,,,,, করে সম্পূর্ণই রোগীর অবস্থার উপর। পাশাপাশি সেল্ফ রুকইয়াহ চালিয়ে যেতে হবে সম্পুর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাহলে ইনশাআল্লাহ অচিরেই আল্লাহর রহমতে সুস্থ হওয়া সম্ভব। শুধু যাদুর সমস্যা থাকলে সেলফ রুকইয়াহ এর পাশাপাশি সরকারি রুকইয়াহ  এক সেশন-ই যথেষ্ট হতে পারে। আর শুধু জিন বা যাদু+জিনের সমস্যা থাকলে এক সেশনে নাও হতে পারে, কয়েক সেশন লাগতে পারে। অনেক সময় এক সেশনেও হয়ে যায়। জিনের সমস্যার জন্য অবশ্যই সরাসরি রুকইয়াহ প্রয়োজন। ৯০/৯৫% জিনের সমস্যার জন্য শুধু সেল্ফ রুকইয়াহ করে সুস্থ হওয়া প্রায় সম্ভব নয়।

 

৭. যে সব সমস্যার জন্য রুকইয়াহ করা হয়

বদনজর,ওয়াসওয়াসা, জ্বীনের আছর,যাদুটোনা ও জ্বীন যাদু সংক্রান্ত সকল প্রকার সমস্যার। যেমন পাগল বানানোর যাদু, পড়ালেখা নষ্ট করার যাদু, বিবাহ বন্ধের যাদু, বিবাহ বিচ্ছেদের যাদু, বান মারা বা মেরে ফেলার যাদু, অসুস্থ বানানোর যাদু, অনিয়মিত পিরিয়ড এর যাদু, সহবাসে অক্ষম করার যাদু, বাচ্চা না হওয়া বা বন্ধ্যাত্বের যাদু, আসক্ত বা বশ করার যাদু, আর্থিক আয় উন্নতি বন্ধের যাদু,ও অলসতা অবসান্নতা অশান্তি অস্থিরতা ইত্যাদির সমস্যার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *